আবেশের মৃত্যু নিয়ে ধন্ধ রয়েই যাচ্ছে, ৩টি প্রশ্নের উত্তর চায় পরিবার!
কলকাতা, ২৭ জুলাই : চার দিন কেটে গিয়েছে কিন্তু বালিগঞ্জে ১৭ বছরের আবেশ দাশগুপ্তর মৃত্যু রহস্যের তদন্তে এখনও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি নেই। আবেশের শরীরের ক্ষত দুর্ঘনার দিকেই ঈঙ্গিত করছে বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। যদিও পুলিশের এই তত্ত্ব মানতে নারাজ আবেশের মা ও ঘনিষ্ঠরা। কেউ হামলা করেছিল এবং তার ফলেই ছেলের মৃত্যু হয়েছে এই দাবিতেই অনড় আবেশের মা রিমঝিম দাশগুপ্ত। [(ছবি) খুনের তত্ত্ব উড়িয়ে আবেশের রহস্যমৃত্যুকে দুর্ঘটনাই বলছে পুলিশ]
ইতিমধ্যেই আবেশের মৃতদেহের প্রাথমিক ময়নাতদন্ত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে আবেশের শরীরে মোট ৭টি ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। যার মধ্যে প্রথমটি বগলের কাছে দেড় ইঞ্চির ক্ষত। এছাড়াও আঙুলে হাতে এবং পেটের কাছে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। তূবে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের কথায়, ক্ষতগুলি হোমিসাইড বা খুনের দিকে ঈঙ্গিত দিচ্ছে না। ভিসেরা রিপোর্ট আসলে তবেই ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়া যাবে। [বালিগঞ্জে কিশোরের পেটে ভাঙা কাঁচের বোতল ঢুকিয়ে খুন, ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব সামনে]
ইতিমধ্যে আবেশের মৃত্যুর তদন্তে লালবাদের একটি স্পেশাল দল গঠন করা হয়েছে। ডিসি ডিডি ২ আবেশের বাড়িতে গিয়ে রিমঝিম দাশগুপ্তর সঙ্গে কথা বলেছেন, এবং তদন্তের উপর আস্থা রাখতে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু কিছু প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।
কীভাবে আবেশের বগলের কাছে কাঁচ ঢুকল?
তদন্তকারীদের কথায়, মদ্যপ অবস্থায় একটি খালি বিয়ারের বোতল বগলে চেপে আবেশ হেঁটে যাচ্ছিল। টাল সামলাতে না পেরে বেসামাল হয়ে গিয়ে সে পড়ে যায় মাটিতে। তখন কাঁচের বোতলটি ভেঙে বগলের পাশে ঢুকে অক্সিলিয়ারি আর্টারিকে ছিঁড়ে দেয়। যার ফলে রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যু হয় আবেশের।
তাহলে প্রশ্ন অন্য ক্ষতচিহ্ণ গুলি এল কোথা থেকে। হাতের তালুতেই বা কীভাবে ক্ষতচিহ্ণ রয়েছে। রিমঝিম দেবীর দাবি, এটি দুর্ঘটনা হতেই পারে না। যে কোনও কারণে কেউ আবেশের উপর হামলা চালিয়েছে। আত্মরক্ষা করতে গিয়েই হয়তো অন্যান্য ক্ষতচিহ্ন গুলি রয়েছে। কিন্তু কে আবেশের উপর হামলা চালিয়েছিল তাই এখন বড় প্রশ্ন।
আঘাতের পর কেন সঙ্গে সঙ্গে আবেশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল না?
যদি দুর্ঘটনাই হবে, তাহলে আবেশ আহত হওয়ার পরও কেন সাত তাড়াতাড়ি কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল না, বা মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট দেওয়া হল না।
চিকিৎসকরা জানিয়েছে হাসপাতালে আরও আগে যদি আবেশকে নিয়ে আসা হত তাহলে চেষ্টা করলে হয়তো প্রাণে বাঁচানো যেত আবেশকে।
আবেশের মৃত্যুতে যে বন্ধুর নাম জড়িয়েছে সে মিথ্যা কথা বলেছিল কেন?
আবেশের মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার দিনই তাঁর এক বাল্য়বন্ধুর নাম জড়িয়েছিল। শনিবার তদন্তকারীদের দাবি ছিল, প্রভাবশালী এক ব্যবসায়ীর ওই ছেলেই আবেশের উপর হামলা করেছিল। ক্যানসারের কারণে তার মা হাসপাতালে ভর্তি।
ঘটনার দিন আবেশ আহত হওয়ার পর ওই বন্ধু পার্টিতে উপস্থিত আরও কয়েকজন বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে গাড়ি করে বেরিয়ে গিয়েছিল। বলেছিল, হাসপাতালে মাকে দেখতে যাচ্ছে সে। কিন্তু সেদিন রাতে সে হাসপাতালে যায়নি। সানি পার্কের বহুতল থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের নিয়ে সোজা বাড়ি চলে গিয়েছিল সে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে সে কেন তাহলে সেদিন মিথ্যা কথা বলেছিল। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতেই কি এই মিথ্যার আশ্রয়। সঙ্গত কারণেই তাহলে এই প্রশ্নও ওঠে আবেশের ছোটবেলার বন্ধু অথচ তাকে ওই অবস্থায় রেখে সে পালিয়ে গিয়েছিলই বা কেন? তাহলে কি সত্য়িই এই ঘটনার সঙ্গে কোনও যোগ রয়েছে সেই বন্ধুরই।