মমতার মিছিলে পুলিশের গুলি জালিয়ানওয়ালাবাগের চেয়েও ভয়ঙ্কর
কলকাতা, ২৯ ডিসেম্বর: ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেসের মিছিলে গুলিচালনার ঘটনা জালিয়ানওয়ালাবাগের থেকেও ভয়ঙ্কর। দরকার না থাকলেও গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। গুলিচালনার বিষয়টি অসাংবিধানিক ও অবৈধ। রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়া তদন্ত রিপোর্টে এ কথা বললেন বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়।
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি মিছিল রওনা দিয়েছিল মহাকরণের উদ্দেশে। মমতা তখন যুব কংগ্রেসের নেত্রী। মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। একগুচ্ছ দাবিদাওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ধর্মতলার মেয়ো রোড ও ডোরিনা ক্রসিংয়ে হঠাৎই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশের অভিযোগ, তখনই যুব কংগ্রেসের আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে না পারলে তারা মহাকরণ পর্যন্ত গিয়ে হামলা চালাতে পারত। ফলে পুলিশকে পাল্টা গুলি চালাতে হয়। মারা যান ১৩ জন। যদিও মমতার অভিযোগ ছিল, সিপিএমের নির্দেশে সেই দিন পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে নৃশংস আচরণ করেছিল।
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের পৌরোহিত্যে তিনি একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেন। এ দিন তারই তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়ে। সুশান্তবাবু বলেছেন, "ওই দিনের ঘটনা জালিয়ানওয়ালাবাগের থেকেও ভয়ঙ্কর ছিল। অথচ পুলিশ সংযত হলে তা ঘটত না। কলকাতা পুলিশের দু'টি রিপোর্ট অনুযায়ী, মেয়ো রোডে গুলি চালাতে হয়েছিল। ডোরিনা ক্রসিংয়েও একই ঘটনা ঘটে। অথচ আমি তদন্তে নেমে দু'টির কোনওটিই পাইনি। রহস্যজনকভাবে রিপোর্টগুলি উধাও হয়ে যায়। সেগুলো পেলে তদন্তে আরও সুবিধা হত।"
তদন্ত কমিশন আরও বলেছে, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব মণীশ গুপ্ত (এখন রাজ্যের মন্ত্রী) কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন। পুলিশ গুলি চালাচ্ছে, অথচ স্বরাষ্ট্র সচিব জানেন না, এটা খুবই রহস্যজনক।