করোনা ভাইরাসের অসংখ্যবার চরিত্র বদলে কী প্রভাব কমবে ভ্যাকসিনের?
মারণ সংক্রমণ করোনায় জর্জরিত গোটা বিশ্ব। এই পরিস্থিতি থেকে ততদিন নিস্তার পাওয়া যাবে না, যতদিন না এই ভাইরাসের কোনও ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আর তার চিকিৎসার জন্য রিসার্চ সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জোরকদমে চলছে৷ তবে ভ্যাকসিনের খুব কাছাকাছি পৌঁছালেও করোনা নিয়ে অস্বস্তি যাচ্ছে না বিশ্বের।
যে ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে তা কতটা কার্যকরী হবে?
সম্প্রতি এক রেস্তোরাঁর মালিক মালয়েশিয়ায় ফেরার পর তার থেকে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৫ জন। দেশ থেকে ফেরার পর ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম ভাঙায় ওই ব্যক্তিকে পাঁচ মাসের কারাদণ্ডের সঙ্গে জরিমানা করা হয়েছে। তবে এই ঘটনা ভ্যাকসিন নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। করোনা চরিত্র বদল হলে যে ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে তা কতটা কার্যকরী হবে?
করোনা ভাইরাসে অসংখ্যবার মিউটেশন
করোনা ভাইরাস অসংখ্যবার মিউটেশনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে৷ এই বদলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রিসার্চ এগিয়ে নিয়ে যেতে নাজেহাল অবস্থা বিজ্ঞানীদের৷ সদ্যই বিজ্ঞানীরা সার্স কোভ ২ স্পাইক প্রোটিনের বিষয়ে নতুন খোঁজ পেয়েছে৷ স্পাইক প্রোটিন নিজেকে মানুষের কোষের সঙ্গে যুক্ত করার পর নিজেকে বদলে ফেলে৷ এই তথ্য জানার পর বিজ্ঞানীদের ভ্যাকসিন তৈরিতে সুবিধা হয়েছে৷
এই তথ্য মাথায় রেখেই ভ্যাকসিন তৈরি
এই তথ্য মাথায় রেখেই ভ্যাকসিন তৈরির কাজে উঠে পড়ে লেগেছেন বিজ্ঞানীরা ৷ স্পাইক প্রোটিনের হিসেবেই নতুন করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির কাজ চলছে৷ আকারে বদলের জন্যেই ভ্যাকসিনের প্রভাব কম হতে পারে৷ আকার বদলে গেলে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে কিন্তু ভাইরাসকে আটকাতে সেটা সক্ষম হবে না৷ বিজ্ঞানীরা আশাবাদী এই তথ্যের ভিত্তিতেই তাঁরা দ্রুত মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে৷
ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করবে
ভাইরাসের চরিত্র বদলেও কেন ভ্যাকসিনের প্রভাব কম হবে না? তা বুঝতে, জানতে হবে ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করবে। ভ্যাকসিন তৈরির জন্যে করোনা ভাইরাসের জেনেটিক তথ্যধারী আরএনএ-কে একটি কমন ভাইরাসে ইঞ্জেক্ট করে করোনা ভাইরাসের একটি নকল তৈরি করা হয়। এটা এরপর মোডিফাই করে শরীরে ইঞ্জেক্ট করা হয়। কমন ভাইরাস ভেক্টর বা বাহক হিসাবে কাজ করে। সেটাই শরীরে এই মডিফাইড ভাইরাসটিকে অ্যান্টিবডিতে পরিণত করে। অ্যাডেনোভাইরাল ভ্যাকসিন ভেক্টর ও সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেনের স্পাইক প্রোটিনকে কাজে লাগিয়ে ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে।
উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
অবশ্য করোনা ভাইরাসের প্রকৃতি বদল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। যদিও তাদের দাবি, এই নতুন প্রজাতির ভাইরাসের সংক্রমণে পরিস্থিতি অবনতি হবে কি না তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সেল প্রেসে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এর ফলে বর্তমানে তৈরির প্রক্রিয়ায় থাকা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।
অক্সফোর্ডের করোনা টীকার পরবর্তী পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হচ্ছে দেশের ১৭টি হাসপাতালে