ব্রেক্সিট চুক্তিতে শিলমোহর ইইউ-র, শুক্রবার ৪৭ বছরের সম্পর্কে ছেদ
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছিল আগেই। সেই বিদায়ের পরিণতিতে শিলমোহর পড়ে গেল শেষ পর্যন্ত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ভালোবাসার কিছু বার্তা সহ আগামী দিনের জন্যে সতর্কবার্তা শুনে শেষ পর্যন্ত ব্রেক্সিটের চূড়ান্ত পর্যায় পার করল ব্রিটেন। বুধবার ব্রেক্সিটের বিলটি অনুমোদন দেয় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। শুক্রবার পুরোপুরি ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিদায় নেবে ব্রিটেন।
ব্রেক্সিট বিলে স্বাক্ষর করেন রানি
এর আগে ২৪ জানুয়ারি ব্রেক্সিট বিলে স্বাক্ষর করেন রানি এলিজাবেথ। গতসপ্তাহে কোনও ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই বিলটি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে পাশ হয়। ব্রেক্সিট বিল নামে পরিচিত এই বিলের আনুষ্ঠানিক নাম ইইউ উইথড্রোয়াল বিল। বিলটি পার্লামেন্টের বাধা পার হওয়ার মধ্য দিয়ে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছায়। ব্রক্সিটে রানির স্বাক্ষর হওয়ার পরেই আইনটি কার্যকর হওয়ার সিদ্ধান্তে চুড়ান্ত শিল মোহর পড়ে।
৩১ জানুয়ারি ব্রিটেনের বিচ্ছেদ কার্যকর হবে
ব্রেক্সিট বিল অনুযায়ী আগামী ৩১ জানুয়ারি স্থানীয় সময় রাত ১১ টায় ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ কার্যকর হবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের বাণিজ্যিক ও অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত সমস্ত সম্পর্ক একই থাকবে৷ কিন্তু এই সময়ের মধ্যে ব্রিটেন ইউরোপিয়া ইউনিয়নের কোনও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না৷
এর আগে একাধিকবার পিছিয়ে যায় ব্রেক্সিট
এর আগে বারবার পিছিয়ে যায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে গ্রেট ব্রিটেনের বিচ্ছেদের দিনক্ষণ। গতবছর বরিস জনসন জানান, ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি কার্যকর করা হবে ব্রেক্সিট। মোট তিন দফা পিছিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ইইউ জোট থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসা কার্যকর হতে চলেছে চলতি মাসের শেষ তারিখে। প্রথম দেশ হিসাবে ব্রিটেন বেরিয়ে এল ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে। এর জেরে ইইউ-র সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়াল ২৭-এ। ৪৭ বছর ইউনিয়নে থাকার পর শেষ পর্যন্ত বিদায় নিচ্ছে ব্রিটেন।
থেরেসা মেয়ের পদত্যাগ
২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের মানুষ ইইউ জোট থেকে বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দেয়। বিচ্ছেদের প্রকৃত তারিখ ছিল চলতি বছরের ২৯ মার্চ। কিন্তু ব্রিটেনের পার্লামেন্ট থেরেসা মে-র নেতৃত্বাধীন সরকারের সম্পাদিত বিচ্ছেদ চুক্তিতে অনুমোদন দেয়নি। আবার চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ কার্যকরেরও বিরোধিতা করে বিরোধিরা। ব্রিটিশ সরকার ও পার্লামেন্টের এমন বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে আটকে যায় বিচ্ছেদ। এরপর প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন থেরেসা।
ব্রেক্সিট কার্যকরী করতে মধ্যবর্তীকালীন নির্বাচন
ব্রেক্সিট কার্যকরী করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার গঠন করেন বরিস জনসন। এরপরও পিছিয়ে ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ। বরিস জনসন বিচ্ছেদ কার্যকরে নতুন একটি চুক্তিতে সম্মত হন। সংখ্যাগরিষ্ঠতাবিহীন প্রধানমন্ত্রী বরিস ৩১ অক্টোবরের আগে চুক্তিতে পার্লামেন্টের অনুমোদন আদায় করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রস্তাবে সায় দেয়নি পার্লামেন্ট। এরপরেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা করেন বরিস। ১২ ডিসেম্বরের সেই নির্বাচন জিতে শেষ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন বরিস।