For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

চা শ্রমিক ধর্মঘট: সড়ক ছেড়েছেন শ্রমিকরা, তবে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে 'আন্দোলন চলবে'

শনিবার চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সে সিদ্ধান্ত শুরুতে শ্রমিকেরা মেনে নিলেও, কয়েক ঘণ্টা পরই আবারো বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

  • By Bbc Bengali

বিক্ষোভ আন্দোলন
Getty Images
বিক্ষোভ আন্দোলন

বাংলাদেশে সরকারি আশ্বাসের পর ধর্মঘটী চা শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে তাদের অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন। কিন্তু তাদের ধর্মঘট চলবে বলে তারা বলছেন। দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রশ্নে আগামী মঙ্গলবার এক বৈঠকের ব্যাপারে সমঝোতা হওয়ার পর চা শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যান।

এর আগে শনিবার চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। ওই সিদ্ধান্ত শুরুতে শ্রমিকেরা মেনে নিলেও, কয়েক ঘণ্টা পর আবারো বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা

গত ৯ই অগাস্ট থেকে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে ধর্মঘট শুরু করে চা বাগানগুলোর প্রায় সোয়া লাখ শ্রমিক।

সে সময় প্রতিদিন দু'ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করলেও, ১৩ই অগাস্ট থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেন।

এর মধ্যে মালিক এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন শ্রমিকেরা।

এরপর ২০শে অগাস্ট শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে চা শ্রমিক নেতাদের বৈঠকের পর নতুন মজুরি ঘোষণা করা হয়।

সেসময় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিক নেতারা সেটি মেনে নিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন।

কিন্তু বাগানের শ্রমিকেরা ২৫ টাকার মজুরি বৃদ্ধি সিদ্ধান্ত মেনে নেননি।

কমলগঞ্জের একটি চা বাগানের একজন নারী শ্রমিক বলেন, "ধর্মঘট তারা কেমনে তুলছে আমরা তো জানি না। তারা (শ্রমিক নেতৃবৃন্দ) তারার মনমত অবরোধ ডাকলো, তারার মনমত এই ১০টা দিন আমরারে রাস্তায় রাস্তায় নাচাইলো।এখন তারার মনমত যদি তারা অবরোধ তুলি দেয়, তাইলে তারার মত বড় মীরজাফর, তারার মত বেইমান কে আছে এই বাংলাদেশে?"

বিক্ষুব্ধ এই নারী শ্রমিকের মতই, ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় চা-বাগানের শ্রমিকদের ভ্যালি কমিটি এবং পঞ্চায়েত কমিটিগুলোতে।

যে কারণে সাধারণ শ্রমিকদের চাপে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হন চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।

আন্দোলনে নেমেছেন চা শ্রমিকেরা
Getty Images
আন্দোলনে নেমেছেন চা শ্রমিকেরা

এরপর শনিবার রাত থেকে চা-শ্রমিকেরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন।

রোববার সকাল ১১টা থেকে হবিগঞ্জের ২৩টি চা-বাগানের হাজার হাজার শ্রমিক মাধবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন।

এসময় শ্রমিকেরা থালাবাসন হাতে ভুখা মিছিল করেন।

সড়কে এ সময় কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মালিকরা কী বলছেন?

চা বাগানের মালিকেরা বলছেন, দৈনিক মজুরি ছাড়াও শ্রমিকদের রেশন, আবাসনসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়, যার অর্থমূল্য সবমিলিয়ে ৪০০ টাকার চাইতে বেশি।

মালিকদের সংগঠন চা সংসদের চেয়ারম্যান শাহ আলম বিবিসিকে বলেছেন, শ্রমিকেরা এখন যে মজুরি পায় সেটি তাদের সাথে বৈঠক করে সমঝোতার মাধ্যমেই নির্ধারণ করা হয়েছিল।

সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন একজন চা শ্রমিক
Getty Images
সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন একজন চা শ্রমিক

তিনি বলেন, "আমরা তো দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে মজুরি নির্ধারণ করেছি। ওনাদের (শ্রমিকদের) যে প্রতিনিধি, তাদের সাথে অনেকগুলো বৈঠক হয় আমাদের, তারপর সিদ্ধান্ত হয়।"

"এখন ক্যাশ ছাড়াও শ্রমিকেরা সাবসিডাইজড রেশন পায়, মেডিকেল ট্রিটমেন্ট পায়। তারপর বাড়ি পায়, ধান চাষের জমি আছে, এগুলা থেকে ইনকাম হয় তাদের।

সেদিক থেকে ওরা যা পায়, আমাদের হিসাবে ৪০০ টাকার বেশি পায় একেকদিন। এছাড়া প্রভিডেন্ট ফান্ডও আছে তাদের জন্য, এটা কন্ট্রিবিউটারি প্রভিডেন্ট ফান্ড," বলেন মি. আলম।

শ্রমিকদের বক্তব্য

শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, সর্বশেষ ২০২০ সালে যখন চা শ্রমিক ইউনিয়ন এবং বাগান মালিকদের সংগঠন চা সংসদ মজুরি নিয়ে চুক্তি করেছিল, সেসময় মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।

সে প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।

কিন্তু চা সংসদের চেয়ারম্যান মি. আলম বলেছেন, ৩০০ টাকার প্রতিশ্রুতি কখনো দেয়া হয়নি।

চা শ্রমিক
Getty Images
চা শ্রমিক

তিনি বলেছেন, সেসময় শ্রমিকদের সাথে ১৩টি বৈঠক হলেও, শেষ পর্যন্ত মজুরি বাড়ানোর প্রশ্নেই আলোচনা ভেঙে গিয়েছিল।

এখন শ্রমিকেরা বলছেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতির যে অবস্থা তাতে দৈনিক ১৪৫টাকা মজুরি তাদের জন্য একেবারেই পর্যাপ্ত নয়।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের একজন নেতা রামভজন কৈরি বলেছেন, এখনকার যে মজুরি সেটি দিয়ে একজন শ্রমিকের নিজের সব মৌলিক চাহিদা পূরণ হয় না।

অথচ একেকজন শ্রমিকের আয়ের ওপর অন্তত চার থেকে পাঁচজন মানুষ নির্ভর করেন।

ফলে মালিকেরা যে বলছেন, মজুরি বৃদ্ধির দাবি যৌক্তিক না, সেটি সঠিক নয় বলে মনে করেন মি. কৈরি।

তিনি বলেন, "১২০ টাকায় দুই কেজি চাল কিনতে পারবো আমি, এখন ৪-৫ জনের একটা পরিবারে দিনে দুই কেজি চাল তো মিনিমাম লাগবেই। তাহলে তারা তো আমার সবজির কথা বলে নাই, পোশাক-আশাক, সন্তান লালন-পালন, তাদের লেখাপড়ার কথা বলে নাই।"

বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর:

গুম-খুন ইস্যুতে কতটা ঝক্কিতে পড়েছে শেখ হাসিনার সরকার

থানা হাজতে যুবকের মৃত্যু, মামলা না করে মৃতদেহ নেবে না পরিবার

প্রেসিডেন্ট 'পুতিনের মস্তিষ্ক' খ্যাত ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মেয়ে মস্কোতে বিস্ফোরণে নিহত

"এসব খাতের কোনো খরচা মালিকরা দেখাইতে পারে নাই। তাহলে শ্রমিকদের দাবিকে অযৌক্তিক বলতে পারবে না মালিকরা। এখন উনাদের সামর্থ্য কতটা আছে সেটা অন্য বিষয়," বলেন তিনি।

এছাড়া শ্রমিকের ওয়েলফেয়ার বাবদ যে খরচ সেটা মজুরি হিসেবে দেখানো যায় না বলে শ্রম আইনে উল্লেখ আছে বলে বলছিলেন মি. কৈরি।

এদিকে, ২৩ শে অগাস্ট পরবর্তী বৈঠকে মজুরি পুনঃমূল্যায়নের আশ্বাসে বিকেলে সড়ক ছেড়েছেন শ্রমিকেরা।

তবে তারা জানিয়েছেন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ১৬৭টি নিবন্ধিত চা বাগান রয়েছে। এর বড় অংশটি সিলেট, হবিগঞ্জ এবং মৌলভীবাজার এলাকায় অবস্থিত।

English summary
Tea workers strike: Workers leave the streets, but 'movement will continue' to demand higher wages
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X