মোদীর বার্তা পৌঁছল শেখ হাসিনার কানে! ভারত-চিন দ্বন্দ্বের মাঝে বাংলাদেশের বড় প্রতিশ্রুতি
আচমকাই প্রধানমন্ত্রী মোদীর বার্তা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পৌছে দিতে সেদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন বিদেশসচিব হর্ষ শ্রীংলা। দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার জন্যে এই সফর বলে সূত্রের খবর। তবে হাসিনার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কী বার্তা দেন শ্রীংলা। তার বদলে হাসিনার কী প্রতিক্রিয়া ছিল?
মোদীর পক্ষ থেকে একটি বিশেষ বার্তা হাসিনাকে
সূত্রের খবর, মোদীর পক্ষ থেকে একটি বিশেষ বার্তা হাসিনার হাতে তুলে দেন হর্ষ শ্রীংলা। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হওয়া এই বৈঠকের সময়ই এই বার্তা হাসিনাকে দেন শ্রীংলা। শ্রীংলার মতো একজন শীর্ষস্থানীয় আমলাকে পাঠানোয় প্রীত হাসিনা। মোদীর বার্তা পৌঁছে দেওয়া ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মোদীর প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
যে যে বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে
বৈঠকে পারস্পরিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বৃদ্ধি, করোনা টীকা, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা ও মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এদিন রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এই প্রথমবার কোভিডের পর বিদেশ সফরে গেলেন বিদেশসচিব। হাসিনাও অনেক দিন বাদে কোনও বিদেশি প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করলেন। অতীতে ভারতের হাইকমিশনার হিসাবে ঢাকায় ছিলেন হর্ষ।
হাসিনা বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দেন ভারতকে
তবে এতকিছুর মাঝে বাংলাদেশের তরফে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দেন ভারতকে। তিনি জানান, বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারত বিরোধী কার্যকলাপ সহ্য করবে না সেদেশের সরকার। তাছাড়া ভারতের সঙ্গে যাবতীয় প্রয়ুক্তিগত ও পরিকাঠামোগত প্রকল্প দ্রুত শেষ করার আস্বাস দেন হাসিনা। প্রসঙ্গত, এসব প্রতিশ্রুতি এমন একটি সময়তে এল যখন বাংলাদেশ-চিন সম্পর্ক নিয়ে জোর জল্পনা চলছে।
বাংলাদেশে চিনের প্রভাব ক্রমশ বেড়ে চলেছে
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে চিনের প্রভাব ক্রমশ বেড়ে চলেছে। তার মধ্যেই হঠাৎ দু'দিনের সফরে মঙ্গলবার প্রতিবেশি দেশে যান বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রীংলা। ঢাকাকে কাছে টানতে নিতে দিল্লির একটা কৌশলগত প্রচেষ্টা। যেটা একদিনের সংক্ষিপ্ত সফর হবে বলে মনে করা হচ্ছিল , সেটা দু'দিনের সরকারি সফরে পরিণত হল। এটা মার্চে কোভিড ১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরোপ হওয়ার পর শ্রীংলার প্রথম বিদেশ সফর।
বাংলাদেশে পাশে পেতে চিনা চাল
এই সফর শুধু করোনা পরিস্থিতির নিরিখে গুরুত্বপূর্ণ, এমনটা নয়। গত কয়েক মাসে চিনের ঘনিষ্ঠ হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ গ্রেটার রংপুর অঞ্চলে তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। চিনের কাছ থেকে ৮৫৩ মিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে। যাতে সম্মত হয়েছে বেজিং। ৯৮৩ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পের আওতায় তিস্তার জল সংরক্ষণের জন্য একটি প্রকাণ্ড জলাধার তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
ডুবোজাহাজ ঘাঁটি তৈরি করছে চিন
চিন ভারতের পূর্বের প্রতিবেশী দেশগুলিতে তাদের প্রতিরক্ষা প্রকল্পগুলিকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের পেকুয়াতে বিএনএস শেখ হাসিনা ডুবোজাহাজ ঘাঁটি তৈরি এবং বাংলাদেশের নৌবাহিনীকে দু'টি ডুবোজাহাজ দেওয়া। যদিও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই রয়েছে। ঢাকা চিনকে বঙ্গোপসাগরে নৌ-পরিকল্পনা রূপায়ণে সাহায্য করতে সক্ষম হয়েছে।
জিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ
দিল্লির পক্ষে আর একটি উদ্বেগের বিষয় হল যে, প্রধানমন্ত্রী হাসিনা চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগকেও গ্রহণ করেছেন। ভারত বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অংশ হতে চায়নি। কারণ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর যা, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্যে দিয়ে যায়।
অ-গান্ধী প্রেসিডেন্ট পেতে চলেছে কংগ্রেস! একনজরে সম্ভাব্যদের তালিকা