(ছবি) সৌদির কালা কানুন! ব্লগারকে ১ হাজার চাবুকাঘাত ও ১০ বছরের কারাদণ্ডে শিলমোহর
রিয়াধ, ৮ জুন : বহির্বিশ্বের তীব্র আপত্তিতে কোনও কর্ণপাত করল না সৌদি আরবের সর্বোচ্চ আদালত। সেদেশের কালা কানুনেই আস্থা রাখল সৌদির সুপ্রিম কোর্ট।
সেখানকার আইন অনুযায়ী মুক্তচিন্তার ব্লগার রঈফ বাওয়াদিকে দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড ও এক হাজার চাবুকের আঘাত দেওয়ার সাজাই বহাল রাখল সৌদি আরবের সুপ্রিম কোর্ট। ইসলাম ধর্মকে অপমান করার অভিযোগে ৩১ বছরের রঈফ বাওয়াদিকে এহেন কঠিন সাজার বিধান দেওয়া হয়েছে।
বাওয়াদির শাস্তি নিয়ে পশ্চিমী দেশগুলি তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান গ্রহণ করলেও তাতে কান না দিয়ে সৌদি সরকার জানিয়েছে, বাইরের দেশে কি হচ্ছে তা এদেশের সরকারের বিবেচ্য বিষয় নয়। এটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই নিয়ে বাইরের কারও নাক গলানো উচিচ নয়।
প্রসঙ্গত, সৌদি আরবে ইসলামিক আইন অত্যন্ত কড়া। ধর্মের বিরুদ্ধে কোনও চিন্তাধারা মাথাচাড়া দিলেই তা কড়া আইন দিয়ে চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। আসুন দেখে নেওয়া যাক কে এই রঈফ বাওয়াদি ও সৌদি আইন যা নিয়ে সারা বিশ্বে হইচই পড়ে গিয়েছে।
রঈফ বাওয়াদি
সৌদি আরবের বাসিন্দা রঈফ বাওয়াদি একজন মুক্তচিন্তার অধিকারী। তিনি লেখক, সমাজকর্মী এবং একইসঙ্গে তিনি একটি ব্লগ চালাতেন।
রঈফ বাওয়াদি
২০১২ সালে একটি ইলেকট্রনিক চ্যানেলে ইসলামকে 'অপমান' করার অপরাধে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৩ সালে তাঁকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ৬০০ বার চাবুকের আঘাত দেওয়ার সাজা শোনানো হয়।
রঈফ বাওয়াদি
পরে তা বদলিয়ে ২০১৪ সালে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও এক হাজার চাবুকের আঘাত দেওয়ার সাজা শোনানো হয়।
রঈফ বাওয়াদি
বাওয়াদির প্রতি চরম অবিচারের খবর সারা বিশ্বের কানে গেলে পশ্চিমী দেশগুলিতে তীব্র হইচই ও প্রতিবাদ শুরু হয়। যার ফলে সাজা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হয় সৌদি সরকার।
রঈফ বাওয়াদি
তবে বছরখানেক পর ফের সেই নিজেদের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকল আরবের আইন।
রঈফ বাওয়াদি
বাওয়াদির স্ত্রী শঙ্কিত ইনসাফ হায়দর জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্য়েই সাজা কার্যকর করা হবে।
রঈফ বাওয়াদি
এর আগেও চাবুকের আঘাত সহ্য করতে হয়েছে বাওয়াদিকে। পরে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। তবে ফের একবার তা কার্যকর করা হবে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইনসাফ হায়দর।
রঈফ বাওয়াদি
সৌদি আবরে প্রতিবছরই নানা কারণে বহু মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। কখনও মাথা কেটে দেওয়া হয়, কখনও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এইবছর এখনও পর্যন্ত ৪০ জনের বেশি মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে সৌদি আরবে।
রঈফ বাওয়াদি
শুধু রঈফ বাওয়াদি নয়, স্বাধীনতা ও মতামত প্রকাশের অধিকার চেয়ে লড়াই করা মুক্তচিন্তার বহু মানুষই সৌদির জেলে বন্দি রয়েছেন।
রঈফ বাওয়াদি
সৌদি আরবে প্রকাশ্য রাস্তায় প্রতিবাদ, মিছিল ইত্যাদি ২০১১ সাল থেকেই নিষিদ্ধ। এরকম করলেই হয় গ্রেফতার, জেল আর না হয় চাবুকাঘাতের সাজা নির্ধারিত হয়।
পুরুষ ও মহিলার মর্যাদা সৌদিতে সমান নয়। মহিলারা সর্বদাই বৈষম্যের শিকার হন।