রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়ছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়
শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়। সূত্রের খবর, ত্রাণশিবিরে কিংবা ত্রাণশিবিরের বাইরে থাকা রোহিঙ্গাদের সঠিক হিসেব নেই বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে।
শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়। সূত্রের খবর, ত্রাণশিবিরে কিংবা ত্রাণশিবিরের বাইরে থাকা রোহিঙ্গাদের সঠিক হিসেব নেই বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে। রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে তৈরি করা তল্লাশি চৌকিগুলি কতটা কার্যকরী তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে সাধারণ মানুষের মনে।
রোহিঙ্গারা মূলত কথা বলে চাটগাইয়া ভাষায়। বলা হয় বাংলারই উপভাষা সেটি। কক্সবাজার কিংবা পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার ভাষার সঙ্গে খুব একটা তফাত নেই। তাই এর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের মতো শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে হাজারে হাজারে মানুষ প্রথমে বাংলাদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশে ঢোকার পর তাঁরা কি সবাই ত্রাণ শিবিরেই থাকছেন তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
প্রতিদিনই রাখাইন প্রদেশের সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ হচ্ছে বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিক মহল অবশ্য এঁদের শরণার্থীই বলছে। এক আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা পাঁচলক্ষের ওপর। এর মধ্যে একলক্ষেরও বেশি বেশি রোহিঙ্গা ত্রাণ শিবিরের বাইরে রয়েছেন। কেউ আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে তাঁদের আত্মীয়দের বাড়ি আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ বা মিশে গিয়েছেন বর্তমান জনস্রোতে। ঠিক যেমনটি হয়েছিল ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশি উদ্বাস্তুদের ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মূলত টেকনাফ, উখিয়া, বালুখালির অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে স্থান দেওয়া হচ্ছে। এঁদের মধ্যে যাঁরা একটু স্বচ্ছ্বল তাঁরা চেষ্টা করছেন টেকনাফ, উখিয়া কিংবা কক্সবাজারে বাড়ি ভাড়া নিতে। বলা ভাল শরণার্থীরা পূর্ব পরিচিতদের সাহায্য নিচ্ছেন কিংবা পাচ্ছেন। কেউ বা নিচ্ছেন দালালের সাহায্যও। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়ার পর স্বাভাবিক নিয়মে অনেকেই আবার কাজের খোঁজেও বেরিয়ে পড়ছেন। সেখান থেকে যে তাঁরা ভারতে প্রবেশ করবেন না তা কেউ হলফ করে বলতে পারছেন না। কেননা ভাষা কিংবা জীবনধারনের সঙ্গে মিল রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রশাসনের তরফে টেকনাফ, উখিয়া, বালুখালির অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরের কাছাকাছি তৈরি করা হয়েছে তল্লাশি চৌকি। যাতায়াতের পথে পরিচয় জানার চেষ্টা চললেও, গ্রামের পথে রোহিঙ্গারা অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়ছেন না, তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছেন না। স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। সংখ্যাটা আঠারো হাজারের আশপাশে বলেই স্থানীয় সূত্রের খবর। এর বাইরে আরও কতজন ছড়িয়ে পড়েছেন তা নিয়েও নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না প্রশাসন।