'রকেটম্যানের'-র জবাবে 'পাগলা কুত্তার বাচ্চা', ট্রাম্প ও কিমের বৈঠকের পথে ছিটিয়ে আছে প্রচুর কাদা
ট্রাম্প এবং কিম জং-জাতিসংঘ অকূটনৈতিক ব্যক্তিগত কাদা ছোঁড়োছুঁড়ি।
মঙ্গলবারই হতে চলেছে বহু প্রতিক্ষিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি কিম জং উন বসবেন বৈঠকে, হাত মেলাবেন পরস্পরের সঙ্গে। কয়েক মাস আগেও এদৃশ্য অকল্পনীয় ছিল। বরং কূটনীতির বাইরে গিয়ে ট্রাম্প ও কিম একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত কাদা ছোঁড়াছুড়িতেই মেতে ছিলেন। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দুই রা পরমাণু-শক্তিধর দেশের রাষ্ট্র নেতা ছিক কতটা নিচে নেমেছিলেন।
কিমের পরমাণু পরীক্ষা বন্ধ করতে ওয়াশিংটনের উত্তর কোরিয়াকে 'সম্পূর্ণ ধ্বংস' করার হুমকি দিয়েছিল। তার জবাবে কিম যা বলেছিলেন তাতে সারাবিশ্বের লোকজন ডিকশনারি খুলতে বাধ্য হয়েছিলেন। ট্রাম্পকে 'পাগল মার্কিন 'ডোটার্ড'' বলেছিলেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট। সঙ্গে যোগ করেছিলেন 'আগুন' দিয়েই তাকে বশ করবেন। সেসময়, মরিয়ম ওয়েবস্টার জানিয়েছিল তাদের ওয়েবসাইটে সারা বিশ্বের বহু মানুষ ডোটার্ড কথাটার অর্থ জানতে চেয়েছিলেন। কিম যা বলেছিলেন, তার কাছাকাছি অর্থ হয় ট্রাম্প একজন 'উন্মাদ মার্কিন বুড়ো'।
📈 Kim Jong Un calls Trump a mentally deranged U.S. dotard. Searches for 'dotard' are high as a kite. https://t.co/HztPoLSjXi
— Merriam-Webster (@MerriamWebster) September 21, 2017
অবশ্য উন্মাদ কথাটা ৭১ বছর বয়সী ট্রাম্পের যত না গায়ে লেগেছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি লেগেছিল বয়সের খোটা দেওয়ায়। 'ডোটার্ড'-এর জবাবে তিনি কিমের শারীরিক গঠনকে নিশানা করেন। টুইটে তিনি বলেন, 'কিম জং উন কেন আমায় বুড়ো বলে অপমান করলো, আমি কি কখনও তাকে 'বেঁটে আর মোটা' বলেছি?'
Why would Kim Jong-un insult me by calling me "old," when I would NEVER call him "short and fat?" Oh well, I try so hard to be his friend - and maybe someday that will happen!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) November 12, 2017
উচ্চতা ও শারীরিক গঠন নিয়ে কুমন্তব্য করাটা আবার একেবারেই ভালভাবে নেয়নি পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন পার্টির পত্রিকা রোদং সিনিমুন -এর সম্পাদকীয়তে বলে হয়, ট্রাম্প 'সর্বোচ্চ নেতার মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছেন'। সেইসঙ্গে ট্রাম্পকে 'ঘৃণ্য অপরাধী' সম্ভাষণ করে বলা হয়, 'কোরিয় জনতার হাতেই তাঁর মৃত্যু হবে'।
এরপর ২০১৭-র সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রসংঘে উদ্বোধনী বক্তৃতায়, ট্রাম্প কিমকে 'লিটল রকেট ম্যান যে কিনা নিজের ও নিজের দেশের জনগনকে একটি আত্মঘাতী অভিযানে নিয়ে যাচ্ছে' বলে উপহাস করেছিলেন। কিমকে বলেছিলেন 'পরমাণু অস্ত্র হাতে এক পাগল'।
নভেম্বরেই আবার এক ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার আগে দ্বিগুণ সুর চড়িয়ে কিম ট্রাম্পকে 'অসুস্থ কুত্তার বাচ্চা' বলে বসেন। বলেন, 'কুকুর ভয় পেলে বেশি ঘেউ ঘেউ করে।' তবে ট্রাম্পের সঙ্গে কুকুরের তুলনা উত্তর কোরিয়া বারেবারেই করেছে।
গত বছরের শেষদিকে কিম বলেছিলেন তাঁর টেবিলের নিচেই পরমাণু বোতাম রাখা আছে। চাইলেই তিনি তা টিপে দেবেন, আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যাবে। এর প্রতিক্রিয়ায় আবার ট্রাম্প বলেন, তাঁর পরমাণু বোতামটি কিমের তুলনায় 'অনেক বড় এবং কার্যকরী'। এতে পিয়ংইয়াং-এর জবাব ছিল এসবই 'খেপা কুত্তার ঘেউ ঘেউ।'
North Korean Leader Kim Jong Un just stated that the “Nuclear Button is on his desk at all times.” Will someone from his depleted and food starved regime please inform him that I too have a Nuclear Button, but it is a much bigger & more powerful one than his, and my Button works!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) January 3, 2018
এরকম
ব্যক্তিগত
স্তরের
নাহলেও
ট্রাম্প
ও
কিমের
সবচেয়ে
সাড়া
জাগানো
হুমকি-পাল্টা
হুমকির
পালাটা
এসেছিল
অবশ্য
তারও
আগে,
২০১৭-র
আগস্টে।
সেই
প্রথম
জানা
গিয়েছিল,
পিয়ংইয়ং
সফল
ভাবে
ক্ষেপণাস্ত্রের
মাপসই
একটি
পারমাণবিক
ওয়ারহেড
তৈরি
করতে
পেরেছে।
রীতিমতো
যুদ্ধংদেহী
মেজাজে
ট্রাম্প
বিবৃতি
দিয়ে
বলেছিলেন,
'মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রকে,
উত্তর
কোরিয়া
আর
হুমকি
না
দিলেই
ভাল
করবে।
নাহলে
যে
আগুন
আর
ক্রোধ
তাদের
উপর
ঝড়ে
পড়বে,
সেরকমটা
পৃথিবী
কখনও
দেখেনি।'
.@POTUS: "North Korea best not make any more threats to the U.S. They will be met with fire and fury like the world has never seen." pic.twitter.com/nUjWck9aGk
— Fox News (@FoxNews) August 8, 2017
পিয়ংইয়ং পাল্টা বলে তারা 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়াম লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের বিষয়ে বিবেচনা করছে।' সেসময় মনে হয়েছিল পরমাণু যুদ্ধ বোধহয় এড়ানো যাবে না। কিন্তু শেষ অবধি তাঁরা কাল আলোচনায় বসছেন। সারা দুনিয়া দেখবে তাদের হাত মেলানোর ছবি।