For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

কাতার সংকটে যেভাবে শাস্তি পাবে গাজায় ফিলিস্তিনিরা

সৌদি আরব ও এর মিত্ররা কাতারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে সহায়তার অভিযোগ তুলেছিলো, যার একটি হামাস। কিন্তু গাজা-ভিত্তিক এই সংগঠনকে সহায়তা দেয়া বন্ধ হলে ভুগতে হবে সেখানকার

  • By Bbc Bengali

কাতার, ফিলিস্তিন, ইরান, হামাস
AFP
কাতার, ফিলিস্তিন, ইরান, হামাস

ফিলিস্তিনি ভূখন্ড গাজায় শেখ হামাদ সিটির খেলার মাঠে শিশুদেরকে খেলতে দেখার দৃশ্য এখন অনেকটাই স্বাভাবিক।

শিশুরা যখন খেলাধুলা করে তখন তাদের অভিভাবকদেরও দেখা যায় পাশেই বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ছায়ায় বসে গল্প করতে বা কথা বলতে।

গাজায় এখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় এলাকা হলো এই হাউজিং প্রকল্প, যার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিলো ২০১২ সালে।

আর এ প্রকল্পের পুরো অর্থের যোগান দিয়েছে উপসাগরের ধনী দেশ কাতার; সে কারণে প্রকল্প এলাকার নামকরণ করা হয়েছে দেশটির সাবেক শাসক শেখ হামাদের নামে।

নিম্ন আয়ের প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি পরিবার ইতোমধ্যেই সেখানে স্থানান্তর হয়েছে।

কমপ্লেক্স এলাকায় নতুন স্কুল, দোকানপাট, আকর্ষণীয় মসজিদ এবং এলাকা জুড়ে সবুজের আয়োজনে একটা নান্দনিক শহর হয়ে উঠেছে শেখ হামাদ সিটি।

এখনো প্রতিনিয়ত নির্মাণকাজ চলছে, গড়ে উঠছে একের পর এক ভবন।

কিন্তু এতো আয়োজনের মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের এই ভূখন্ডে উদ্বেগ তৈরি করেছে মধ্যপ্রাচ্যের কাতার সংকট।

গাজার হামাদ সিটির অধিবাসীদের মধ্যে রীতিমত উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে এ সংকট, কারণ তারা মনে করছে বিষয়টি দীর্ঘায়িত হলে তারা হারাবেন তাদের একজন প্রধান দাতা ও সহযোগীকে।

"আমরাই আসলে ভিকটিম হতে যাচ্ছি," বলছিলেন বাহা শালাবি, যিনি শেখ হামাদ সিটির একজন অধিবাসী।

তাঁর মতে, "অর্থ, সমর্থন, অবকাঠামো, ভবন নির্মাণ - সবকিছুই এবার বন্ধ হয়ে যাবে"।

কাতার, ফিলিস্তিন, ইরান, হামাস
AFP
কাতার, ফিলিস্তিন, ইরান, হামাস

অর্থনৈতিক প্রবাহ

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গাজা উপত্যকায় নতুন বাড়ি, হাসপাতাল ও সড়ক নির্মাণে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেছে কাতার।

দেশটি আরও প্রায় একশো' কোটি ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

যদিও সৌদি আরব সহ উপসাগরীয় মিত্রদের সাথে কাতারের বর্তমান সংকট এসব প্রকল্পে ঠিক কতটুকু প্রভাব ফেলবে তা এখনো পরিষ্কার নয়।

সন্ত্রাসবাদকে উস্কে দেয়ার অভিযোগ তুলে সৌদি আরব আর তার মিত্ররা কাতারকে একঘরে করার চেষ্টা করছে, যদিও কাতার সবসময়ই এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে যাওয়ার প্রধান যে সড়কের নির্মাণকাজ চলছে, তার প্রকৌশলী হানাফি সাদাল্লাহ অবশ্য সতর্ক এই আশঙ্কায় যে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে অর্থ সহায়তা কমে যেতে পারে।

তিনি বলেন, "আমাদের শত শত কর্মী আছে এবং তারা সবাই পরিবারকে সহায়তা করছে"।

"গাজায় বেকারত্ব অত্যন্ত প্রকট। এখন কাতারের তহবিলও যদি চলে যায়, তাহলে সবাইকে ঘরে অলস বসে থাকতে হবে"।

সরকারি হিসেবে গাজার ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষের কোন কাজ নেই, বেকারত্বের ক্ষেত্রে যা বিশ্বে একটি রেকর্ড।

সৌদি আরব যেসব দাবিতে কাতারকে একঘরে করার চেষ্টা করছে, তার একটি হলো হামাসকে সহায়তা দেয়া বন্ধ করা।

আর এই হামাস সংগঠনটিই গাজা শাসন বা পরিচালনা করছে।

প্রায় এক দশক আগে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বাহিনীকে হটিয়ে গাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলো হামাস।

তার এক বছর পর সেখানে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়লাভ করে হামাস।

এরপর হামাসই কাতারকে উদ্বুদ্ধ করে গাজার সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য।

কাতার, ফিলিস্তিন, ইরান, হামাস
Getty Images
কাতার, ফিলিস্তিন, ইরান, হামাস

"যেসব ঘরবাড়ি, সড়ক হচ্ছে সেগুলো হামাসের জন্য হচ্ছে না," বলছিলেন সংগঠনটির নেতা মাহমুদ জাহার। "মানবিক প্রতিষ্ঠান - স্কুল ও হাসপাতাল - এসবই হচ্ছে ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য।"

"কাতার থেকে হামাসকে দুরে সরিয়ে রাখার সব উদ্যোগই ভুল ও অকার্যকর"।

ইসরায়েলের অভিযোগ যে হামাস বিদেশী সহায়তা তার সামরিক অবকাঠামো শক্তিশালী করতে ব্যবহার করে।

তবে প্রকল্প নিয়ে যাতে কোন অভিযোগ না ওঠে সেজন্য দোহার তরফ থেকে সমন্বয় অফিস খোলা হয়েছে গাজাতেই, যারা নির্মাণকাজের ঠিকাদার ও জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর সাথে নিজেরাই সরাসরি কাজ করে থাকে।

চাপ কমানোর চেষ্টা

হামাস ও কাতারের মধ্যকার সম্পর্ক এখন অনেকটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তের দু'ধারে ইসরায়েল ও মিসর কঠিন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

যদিও দোহার সমর্থনে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক উদ্যোগও রয়েছে।

কাতারের আমীর একমাত্র সরকার প্রধান, যিনি হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকা সফর করেছেন।

আবার হামাসের বড় বড় নেতারা দোহায় বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন, যার মধ্যে রয়েছে হামাসের সাবেক প্রধান খালেদ মিশাল।

এখন তাদের অনেকে অবশ্য দোহা ছেড়েছেন। তবে এটিকে দেখা হচ্ছে কাতারের ওপর চাপ কমানোর ক্ষেত্রে হামাসের একটি সহযোগিতা হিসেবে।

গত মাসেই হামাস তাদের নতুন নীতি ঘোষণা করেছে, যদিও তাতে মুসলিম ব্রাদারহুডের বিষয়ে কোন কিছু বলা হয়নি।

এই মুসলিম ব্রাদারহুডের সাথে সম্পর্ক নিয়ে চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে কাতারকে। সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী বলেই মনে করে সৌদি আরব ও তার মিত্ররা।

আরো পড়ুন:

সাদ্দামের ফাঁসির সময়ে কেঁদেছিলেন যে মার্কিন সৈন্যরা

ভাতিজা বাদ, পুত্রকে যুবরাজ বানালেন সৌদি বাদশাহ

ইসরায়েলের কাছে আরবরা কেন পরাজিত হয়েছিল?

কাতার, ফিলিস্তিন, ইরান, হামাস
AFP
কাতার, ফিলিস্তিন, ইরান, হামাস

আমরাই কাতার

কাতারকে কেন্দ্র সাম্প্রতিক এই সংকটে চাপ বাড়ছে হামাসের ওপর।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে মানবিক ও নিরাপত্তা বিপর্যয়ের জন্য ইসলামিক স্টেট, আল-কায়েদা ও হেজবুল্লাহর সাথে হামাসকেও দায়ী করেছেন।

ইসরায়েল গত সপ্তাহেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের একটি পরিকল্পনায় সায় দিয়েছে যার ফলে গাজায় বিশ লক্ষ মানুষ দিনে ৪৫ মিনিট কম বিদ্যুৎ পাবে। বর্তমানে তারা গড়ে চার ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ পায়।

তবে হামাস এসব কিছুর জন্য তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকেই দায়ী করে বলছে যে তারাই ট্রাম্প প্রশাসন ও ইসরায়েলের সাথে মিলে এসব করছে।

"কাতারকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে আরব বসন্তকে সমর্থন দেয়ার কারণে," এমন মন্তব্যই করেছেন হামাসের পার্লামেন্টারিয়ান ইয়াহইয়া মুসা।

"আমাদের সমর্থন করায় এই শাস্তি। কাতারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এমন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা আমাদের ভাইদের সাথে আছি"।

শেখ হামাদ সিটিতে এক সমাবেশে মিস্টার মুসা যখন এমন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন ফিলিস্তিনি শিশুরা কাতার ও ফিলিস্তিনের পতাকা নাড়াচ্ছিলো।

English summary
qatar crisis may give punishment to palastine's people
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X