জিনপিং-কেও আচ্ছে দিন-এর স্বপ্ন, জানুন মোদির সফর নিয়ে কি হুল দিলেন রাহুল
চিন-ভারত জোট বাঁধলে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে, চিনা প্রেসিডেন্টকে সেকথাই বললেন মোদি। সফরের বিষয়হীনতা নিয়ে কটাক্ষ রাহুলের।
'চিন নতুন যুগের কথা বলছে। আমিও ভারতকে নতুন করে গড়তে চাইছি। ভারত-চিন দুদেশেরই উচিত বিশ্ব-শান্তির লক্ষ্যে এগনো। আমাদের দিপাক্ষিক সম্পর্কের পঁাচটি ইতিবাচক দিক হল, ভাবনা, যোগাযোগ, সমর্থন, প্রতিশ্রুতি এবং শেয়ার্ড ভিশন্।'
[আরও পড়ুন:মিউজিয়াম ভ্রমণ, নৌবিহার, লেকের ধারে ডিনার, জেনে নিন আর কি থাকছে মোদির 'ঘরোয়া' চিন সফরে]
এই বক্তব্য দিয়েই চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে ধারাবাহিক একান্ত বৈঠক শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী জানান, জনসংখ্যায় বিশ্বে সবচেয়ে বড় দুই দেশ ভারত ও চিন। তাই একজোট হলে দুদেশের বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আছে। আর ওপরে বলা ওই পাঁচটি বিষয়ের ভিত্তিতেই কাছাকাছি আসতে পারে দুই দেশ।
ইউহান প্রদেশের হুবেই প্রভিন্সিয়াল মিউজিয়ামে দুদেশের ছয়জন করে কূটনীতিককে নিয়ে হয় এই 'ঘরোয়া' বৈঠক। আগেই বলে হয়েছিল আলোচনার কোনও নির্দিষ্ট বিষয় নেই। তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লষকরা মনে করছেন, এইসব ঘরোয়া বৈঠকের মধ্য় দিয়ে ভারত-চিন বানিজ্য় সম্পর্ক উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে মোদির এই 'বিষয়হীন' সফরকে ঘিরে শুরু হয়েছে তরজা। বিজেপি নেতাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর চিনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সহায়ক হবে। অন্য়দিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাহুত গান্ধীও।
এদিন বিকেলে হুবেই প্রভিন্সিয়াল মিউজিয়ামে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভারত ও চিনার দুই রাষ্ট্রনেতাকে অভ্য়র্থনা জানানো হয়। বলিউডি গান, যোগ ইত্যাদির মাধ্য়মে ভারত ও চিনের দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনকে তুলে ধরেন চৈনিক শিল্পিরা। লাল কার্পেটের ওপর পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দুই নেতাকে সেই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দেখা গিয়েছে। এরপর চিনা প্রেসিডেন্ট জিনপিং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যান মিউজিয়াম সফরে। বিভিন্ন নিদর্শন নিয়ে কৌতূহল প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে মোদিকে। জিনপিং সেই কৌতূহল মিটিয়েছেন।
মিউজিয়াম চত্বরে প্রথম সাক্ষাতেই মোদি জিনপিংকে বলেন, 'গুজরাতের মুখ্য়মন্ত্রী থাকাকালীনও ইউহান প্রদেশে আসার সৌভাগ্য় হয়েছিল। এখানকার তিনটি বাঁধের কথা শুনেছিলাম। যে দ্রুততায় আপনারা ওই বিশালাকার নির্মাণকাজ শাষ করেছিলেন তা আমায় অনুপ্রাণিত করেছিল। তাই আমি সাই কাজ খতিয়ে দেখতে এসেছিলাম। গোটা একদিন বাঁধের ওখানে কাটিয়েছিলাম'।
প্রধানমন্ত্রী
ভারত
ও
চিন
উভয়
দেশের
জনজীবনেই
নদীর
গুরুত্বের
কথাও
তুলে
ধরেন।
বলেন,
'ভারত
ও
চিন
উভয়
দেশের
সংস্কৃতিই
নদীমাতৃক।
ভারতের
হরপ্পা
মহেঞ্জোদারো
সভ্য়তার
কথাই
ধরুন,
সবটাই
গডে়
উঠেছিল
নদীর
ধারে।'
মোদি-জিনপিং-এর
এই
সৌহার্দ্য়পূর্ণ
কথায়
উচ্ছ্বসিত
বিজেপি
নেতারা।
শিবরাজ
চৌহান
ট্য়ুইট
করেন,
'আমি
নিশ্চত
প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র
মোদি
ও
প্রেসিডেন্ট
জিনপিং-এর
এই
বৈঠকে
দিপাক্ষিক
সম্পর্ক
মজবুত
হবে
এবং
ভারত
ও
চিনের
মেলবন্ধন
গড়ে
তোলার
কৌশলগত
দিশা
দেখাবে।'
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীরএই সফরের কোনও নির্দিষ্ট অ্য়াজেন্ডা না থাকাটাকেই নিশানা করেছে কংগ্রেস। দলের সরকারি ট্য়ুইট অ্য়াকাউন্টে মোদির সফরকে ব্যঙ্গ করে একটি পোস্ট করা হয়। তাতে প্রশ্ন রাখা হয়, 'প্রধানমন্ত্রী মোদি কিভাবে প্রেসিডেন্ট জিনপিং-এর সঙ্গে বৈঠকে ডোকালাম প্রসঙ্গ তুলবেন?' সম্ভাব্য় দুটি উত্তরও হিসেবে বলা হয়, 'সেলফি তুলে' অথবা 'আলিঙ্গন করে'।
কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কংগ্রাস সভারতি রাহুল গান্ধিও। তিনি মোদির উদ্যেশ্যে বলেন, 'টিভিতে দেখলাম আপনাকে, অ্যাজেন্ডাহীন চিন সফরে। মনে হল যান আপনি চিন্তাগ্রস্ত? চট করে দিটো বিষয় মনে করিয়ে দি, এক, ডোকালাম। দুই, চিন পাকিস্তানের অর্থনৈতিক করিডোরটা পাক অধিক্ৃত কাশ্মিরের মধ্য় দিয়ে গিয়েছে। ওটা কিন্তু ভারতের এলাকা। ভারতবাসী চায় আপনি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলুন। আমরা আপনের পাশে আছি।' একাধিক ট্ুইটে মোদিকে বিদ্ধ করেছেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজওয়ালাও।