পরিবেশ প্রশ্নে পাকিস্তানকে বিঁধতে গিয়ে পাল্টা কোণঠাসা ভারত, জানাল পাক দৈনিক ডন
কূটনৈতিক বা সামরিক ক্ষেত্রে ফলাফল যাই হয়ে থাকুক না কেন, পরিবেশ-বিষয়ক লড়াইতে পাকিস্তান ভারতের চেয়ে কিছু কম যায় না, জানাল সে-দেশের প্রথম সারির দৈনিক 'ডন'।
ইসলামাবাদ, ১৭ অক্টোবর : কূটনৈতিক বা সামরিক ক্ষেত্রে ফলাফল যাই হয়ে থাকুক না কেন, পরিবেশ-বিষয়ক লড়াইতে পাকিস্তান ভারতের চেয়ে কিছু কম যায় না, জানাল সে-দেশের প্রথম সারির দৈনিক 'ডন'।
সোমবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে তাঁরা জানিয়েছে যে গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার সংদোতে গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড বা জিসিএফ-এর একটি বৈঠকে পাকিস্তানের পরিবেশরক্ষা সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে এই দুই প্রতিবেশী দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে জোর বাদানুবাদ শুরু হয় যার অন্তিম পরিণতিতে, 'ডন'-এর প্রতিবেদনটির মতে, ভারতই কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
কী নিয়ে এই তর্ক?
ডন জানাচ্ছে, জিসিএফ-এর ওই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকটি ডাকা হয় পৃথিবীর লক্ষাধিক গরিব মানুষকে পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে যুঝতে সাহায্য করবে এমন দশটি প্রকল্পের পুনর্বিবেচনা এবং অনুমোদন করার জন্য। ওই প্রকল্পগুলির সম্মিলিত খরচ আটশো মিলিয়ন মার্কিন দলের (ভারতীয় মুদ্রায় আশি কোটি টাকা)। ২০১০ সালে গঠিত হওয়া জিসিএফ পরিবেশবদল সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে উন্নতিশীল দেশগুলিকে সাহায্য করে থাকে।
রাষ্ট্রসংঘের অন্তর্গত এই সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় দক্ষিণ কোরিয়ার ইঞ্চিওনের সংদোতে অবস্থিত।
ডনের প্রতিবেদনটি জানিয়েছে যে এই দশটি প্রকল্পের মধ্যে পাকিস্তানেরও একটি ছিল। রাষ্ট্রসঙ্ঘ সমর্থিত প্রকল্পটির মুখ্য উদ্দেশ্য হল গিলগিট-বালতিস্তান এবং খাইবের পাখতুনখোয়া অঞ্চলে বিভিন্ন হিমবাহী হ্রদের আশেপাশে আচমকা প্লাবনের কারণে যে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়, তা প্রতিহত করার।
জিসিএফ-এর টেকনিক্যাল কমিটির তরফ থেকে প্রকল্পটিকে সবুজ সংকেত দিয়ে বলা হয় যে এর বাস্তবায়নের ফলে ওই অঞ্চলের সাত লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন, জানায় ডন।
কিনতু এর পরেই নাকি ভারতের পক্ষে ওই বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধি দীনেশ শর্মা পাকিস্তানের প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ করে ওঠেন। ডন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীনেশ শর্মা, যিনি অর্থমন্ত্রকের বিশেষ সচিব, এই প্রকল্পটিকে লক্ষ্যচ্যুত করার জন্য নানা "পরস্পরবিরোধী" যুক্তি দর্শাতে থাকেন।
দীনেশের মতে, হিমশৈলী গলে যাওয়ার প্রমাণের বলিষ্ঠ ভিত্তি যেহেতু নেই, তাই পাকিস্তানের ওই প্রকল্পটি বিশেষ কার্যকর নয়। উল্টে তিনি জানান পাকিস্তানের এই প্রকল্প সীমান্তের উল্টোদিকে ভারতের পক্ষে তৈরি করতে পারে নয়া মাথাব্যথা। ডন-এর কলমে দীনেশ নাকি বোঝাতেই পারেননি তাঁর আপত্তির প্রধান কারণ এবং তিনি নাকি যতই বলতে চেয়েছেন যে তাঁর এই প্রতিবাদের পিছনে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই, ততই নাকি তিনি বৈঠকে একঘরে হয়ে পড়েন।
ভারতীয় প্রতিনিধির একগুঁয়ে তর্ক জিসিএফ-এর বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য উন্নত এবং উন্নতিশীল দেশগুলি পাকিস্তানকেই আরও বেশি করে সমর্থন করে বলে জানিয়েছে ডন। শেষ পর্যন্ত, আর উপায় না দেখে দীনেশ শর্মাকেও ওই পাক প্রকল্পকে সমর্থন জানাতে হয় বলে দৈনিকটি জানায়।