এসসিও সম্মেলনে মোদী-ইমরান সাক্ষাৎ না হওয়াটা যথেষ্ট হতাশাজনক
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মধ্য এশিয়ার দেশ কিরঘিস্তানের রাজধানী বিশকেক-এ সাংহাই কে-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-র সম্মেলনে যোগ দিতে চলেছেন আগামী ১৩ জুন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মধ্য এশিয়ার দেশ কিরঘিস্তানের রাজধানী বিশকেক-এ সাংহাই কে-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-র সম্মেলনে যোগ দিতে চলেছেন আগামী ১৩ জুন। গত ৩০ মে দ্বিতীয়বার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরে এটাই মোদীর প্রথম বহুজাতিক সম্মেলন। বছরখানেক আগে এসসিও-তে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেয় ভারত এবং পাকিস্তান যার ফলে এতদিন মুখ্যত মধ্য এশিয়ার উপরে মনোনিবেশ করা গোষ্ঠীটির মধ্যে এখন দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বও বেড়েছে।
এবারের সম্মেলনে মোদীর সঙ্গে চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এবং রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চিনের চলতি বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ইরানের উপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মতো ইস্যুগুলি উঠে আসার প্রবল সম্ভাবনা।
কিন্তু, আশ্চর্জনকভাবে এই সম্মেলনে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে মোদীর কোনও বৈঠক হওয়ার খবর নেই যদি ইমরান বিশকেকে থাকবেন আগামী ১৪ জুন।
ইমরানের সঙ্গে মোদীর সাক্ষাৎ নয় কেন?
যেখানে মোদী কিরঘিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও দেখা করবেন, সেখানে প্রতিবেশী দেশের নেতার সঙ্গে কেন তাঁর দেখা হবে না, সেটা বোধগম্য হয় না। নিকট অতীতে যখন ভারত ও পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তি ঘটে এসসিওতে, তখন চিন এবং রাশিয়ার মতো বড় শক্তিগুলি আশা পোষণ করেছিল যে এসসিও-র মঞ্চ এই দুই বৈরী দেশকে তাদের নিজেদের সমস্যা মেটাতে সাহায্য করবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সমস্যার সমাধান তো দূরের কথা, দুই দেশের পড়শী নেতৃত্বের মধ্যে ন্যূনতম সাক্ষাতেরই কোনও পরিকল্পনা নেই।
যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কথাই না হয়, তাহলে এসসিওতে তাদের যোগ দেওয়ার সার্থকতা কী? তাহলে কি ভারত আর পাকিস্তান ওই গোষ্ঠীতে ঢুকেছে যথাক্রমে রাশিয়া আর চিনের একে অপরের প্রতি ওজন ভারী করতে? পুলওয়ামা কাণ্ডের জেরে কি জাতীয় স্বার্থ প্রভাবিত হবে?
মধ্য এশিয়াতে পৌঁছতে গেলে পাকিস্তানের সহযোগিতা চাই ভারতের
ভূ-অর্থনৈতিক অর্থে এসসিও-র গুরুত্ব কম নয় ভারতের কাছে। মধ্য এশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদকে জাতীয় স্বার্থে কাজে লাগানোর জন্যে ভারতের পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পাকিস্তানের মাটির ভিতর দিয়েই ভারত মধ্য এশিয়াতে পৌঁছতে পারে; অন্যটা ইরান-আফগানিস্তানের মধ্যে দিয়ে ঘুরপথে যেতে হবে; ব্যাপারটি খরচসাপেক্ষ। অন্যদিকে, ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্বের পদক্ষেপও ভারতকে মেপেজুখে নিতে হবে কারণ আমেরিকার রক্তচক্ষু।
এই অবস্থায় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার দিকে এগোতে পারলেই ভারতের সুবিধে।
কিন্তু যেখানে পাকিস্তানের আকাশপথ মোদীর বিমানের জন্যে খুলে দেওয়ার জন্যে বিশেষ আর্জি জানানো হয় ইসলামাবাদকে, সেখানে বিশকেকে ইমরানের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎটি কেন অনুষ্ঠিত হল না, তা যথেষ্ট অবাক এবং হতাশ করে।
[আরও পড়ুন: মোদীর কাজাখস্তান সফরের জন্য আকাশ পথ ব্যবহারের অনুমতি দিল পাকিস্তান]