মিল্কিওয়ের আড়াই গুণ বড় গ্যালাক্সি! মহাকাশ অন্বেষণে ধরা পড়ল হাবল টেলিস্কোপে
মিল্কিওয়ের আড়াই গুণ বড় গ্যালাক্সি! মহাকাশ অন্বেষণে ধরা পড়ল হাবল টেলিস্কোপে
মহাকাশের গভীরেও নজর করার অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে তার। নাসার সেই হাবল স্পেস টেলিস্কোপ এবার মহাকাশে খুঁজে পেল এমন এক গ্যালাক্সি, যা মিল্কিওয়ের থেকে অন্তত আড়াই গুণ বড়ষ। আমাদের নিজস্ব গ্যালাক্সির বাইরে গিয়ে হাবল টেলিস্কোপ মহাকাশের অজানা সব ঘটনাপ্রবাহকে সামনে এনে দিচ্ছে। সম্প্রতি হাবল স্পেস টেলিস্কোর প্রত্যক্ষ করেছে একটি ছায়াপথের অত্যাশ্চর্য চিত্র।
পৃথিবী থেকে ১০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের গ্যালাক্সি
হাবল স্পেস টেলিস্কোপ এনজিসি ৪৭৪-এর কেন্দ্রীয় অংশটির ছবি তুলছে। পৃথিবী থেকে ১০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে একটি গ্যালাক্সি, যা প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার আলোকবর্ষ-জুড়ে বিস্তৃত এবং তা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির থেকে আড়াই গুণ বড়। নাসার মতে, এনজিসি ৪৭৪-এর গোলাকার আকৃতির কোর ঢেকে জটিল স্তরযুক্ত শেলগুলির একটি সিরিজ রয়েছে।
দৈত্যাকার গ্যালাক্সির মধ্যে অজস্র ছোটো গ্যালাক্সি
হাবল স্পেস টেলিস্কোপের চিত্র অনুযায়ী নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ওই গ্যালাক্সির শেলগুলির উৎস অজানা, তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, তা ওই দৈত্যাকার গ্যালাক্সির মধ্যে ছোটো ছায়াপথ হিসেবে রয়েছে। তাঁদের কথায়, এটি একটি নুড়ির মতো, যা জলে নামলে পুকুরে তরঙ্গ তৈরি করে, একইভাবে শোষিত ছায়াপথ দ্বারা তৈরি তরঙ্গ থেকে শেল তৈরি হয়।
হাবলের উন্নত ক্যামেরার ডেটায় চমকিত ছবি
নাসার বিজ্ঞানীরা বলেন, উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সিগুলির বেশিরভাগই গ্যালাক্সি ক্লাস্টার এবং খোলসযুক্ত। সাধারণত খালি জায়গায় পাওয়া যায় ওই গ্যালাক্সি ক্লাস্টার। প্রায় ১০ শতাংশ উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সিতে শেল স্ট্রাকচার রয়েছে। হাবলের উন্নত ক্যামেরার ডেটা এই গ্যালাক্সির ছবি তুলতে ব্যবহার করা হয়েছিল।
নতুন গ্যালাক্সির অদ্ভুত সব চিত্র হাবলের ডেটায়
হাবল টেলিস্কোপের উন্নত ক্যামেরার ডেটা এই গ্যালাক্সির ছবি তুলতে ব্যবহার করা হয়েছিল। যেখানে দৃশ্যমান নীল আলো, লাল রঙের কাছাকাছি ইনফ্রারেড আলো। নাসা হাবল স্পেস টেলিস্কোপের ওয়াইড ফিল্ড, প্ল্যানেটারি ক্যামেরা ২ এবং ওয়াইড ফিল্ড ক্যামেরা ৩ থেকে ডেটা ব্যবহার করেছে। তাতেই হাবল বাজিমাত করে দিয়েছে। নতুন গ্যালাক্সির অদ্ভুত সব চিত্র সামনে এনে দিয়েছে সেই ডেটা।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের চোখ ও কান হাবল স্পেস টেলিস্কোপ
হাবল স্পেস টেলিস্কোপ পৃথিবীর বাইরের বিজ্ঞানীদের জন্য চোখ ও কান হয়েছে। মহাবিশ্বের বিশালতার দিকে তাকিয়ে আছে নাসার ওই মহাকাশ যান এবং তা গ্রহ, নক্ষত্র এবং মহাকাশীয় ঘটনা আবিষ্কার করেছে। এই হাবল স্পেস টেলিস্কোপ চালু হওয়ার তিন দশক পরেও সমান সক্রিয়। মহাকাশযানটি এখনও জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মতো মহাবিশ্বকে পর্যবেক্ষণ করে চলেছে।
হাবল স্পেস টেলিস্কোপ তিন দশক ধরে মহাকাশ-কর্মকাণ্ডে
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ এখন মহাকাশে পৃথিবী সৃষ্টির ইতিহাস খুঁজছে। আর হাবল স্পেস টেলিস্কোপ সারা বিশ্বের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হয়ে রয়েছে। ১৯৯০ সালের ২৫ এপ্রিল তা স্থাপন করা হয়েছিল মহাকাশে। সেই থেকে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে আমাদের যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং মহাকাশের আইকনিক চিত্র প্রদান করে চলেছে।
মঙ্গলে হেলিকপ্টার-ড্রোন উড়িয়ে তাক লাগাল নাসা, নতুন দিগন্ত উন্মোচনে বিজ্ঞানীরা