ইকুয়েডরের কারাগারে প্রতিদ্বন্দ্বী মাদক চক্রের সহিংসতায় ১০০'র বেশি কয়েদির মৃত্যু
মঙ্গলবার গুয়াকিল শহরের ঐ কারাগারে হওয়া সংঘাতে অন্তত পাঁচজনকে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করা হয়। বাকিরা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
ইকুয়েডরের একটি কারাগারে দুই বিরোধী পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১১৬ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে কারাগারের কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার গুয়াকিল শহরের ঐ কারাগারে হওয়া সংঘাতে অন্তত পাঁচজন বন্দীকে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করা হয়। বাকিরা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
পুলিশ কমান্ডার ফস্তো বুয়েনানো জানিয়েছেন যে কয়েদিরা গ্রেনেডও ব্যবহার করেছেন।
কারাগারটির নিয়ন্ত্রণ নিতে ৪০০ জন পুলিশ অফিসারের অভিযান পরিচালনা করতে হয়।
ঐ কারাগারটিতে কয়েদি হিসেবে আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী চক্রের সদস্যদের রাখা হত।
স্থানীয় গণমাধ্যমের রিপোর্টে উঠে এসেছে যে কারাগারে সহিংসতার নির্দেশ দেয় প্রভাবশালী মেক্সিকান মাদক পাচারকারী চক্রের সদস্যরা, যারা বর্তমানে ইকুয়েডরে কার্যক্রম চালাচ্ছে।
ইকুয়েডরের কারাগার বিভাগের পরিচালক বলিভার গারজন স্থানীয় রেডিও স্টেশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন যে সেখানকার পরিস্থিতি 'ভয়াবহ' ছিল।
"স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় পুলিশ কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেয়, কিন্তু গত রাতে এখানে অন্য ঘটনায় এখানে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আজ সকালে আমরা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করি এবং এখনও ভেতরে মরদেহ আবিষ্কার করছি।"
কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য বিরোধী চক্রের সদস্যদের এই ধরণের সহিংসতার ঘটনা নতুন নয়।
ফেব্রুয়ারিতে কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নেয়াকে কেন্দ্র করে হওয়া সহিংসতায় ৭৯ জন কয়েদি নিহত হয়েছিলেন।
মঙ্গলবারের ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনা যেখানে ঘটেছে, দ্য লিটোরাল পেনিটেনশিয়ারি, সেটিকে দেশের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কারাগারগুলোর একটি হিসেবে মনে করা হয়।
মি. বুয়েনানো জানান যে বিরোধী গ্রুপের সদস্যদের কাছে পৌঁছানোর জন্য কারাগারের এক অংশ থেকে আরেক অংশে কয়েদিরা সুরঙ্গের মধ্যে দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে গিয়েছিল।
এই ঘটনায় ৮০ জনের বেশি কয়েদি আহত হয়েছেন।
ঘটনার পর ইকুয়েডরের কারা ব্যবস্থায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গুইলের্মো লাসো।
কারাগারটিতে ইকুয়েডরের মাদক পাচারকারী চক্র লস চোনেরসের সদস্যদের কয়েদি হিসেবে রাখা হয়। এই চক্রটির সাথে মেক্সিকোর শক্তিশালী সিনালোয়া মাদক পাচারকারী চক্রের (কার্টেল) সম্পর্ক রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
কিন্তু ইকুয়েডর হয়ে মধ্য আমেরিকায় মাদক পাচারের উদ্দেশ্যে মেক্সিকোর জালিসকো নিউ জেনারেশন (সিজেএনজি) কার্টেল ইকুয়েডরের চক্রগুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছে।
এ বছরের জুলাইয়ে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লাসো মন্তব্য করেন যে ইকুয়েডরের কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার অন্তত ৩০% বেশি কয়েদি রয়েছে।
আরো পড়তে পারেন:
সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব যে কারাগারে
নারী অপরাধীদের শোধরাতে কারাগার কেন ব্যর্থ?
আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে জেলখানায়, বহু দেশ বন্দী ছেড়ে দিচেছ