মৃদু ওমিক্রন কি ‘বিবর্তনীয় ভুল’? পরবর্তী ভ্যারিয়েন্ট আরও মারাত্মক, সতর্ক কেমব্রিজের অধ্যাপকের
পরবর্তী ভ্যারিয়েন্ট আরও মারাত্মক
গোটা বিশ্বে এখন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় বংশোদ্ভুত এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন যে এই ভ্যারিয়েন্টের তীব্রতা সেরকম গুরুতর না সেটা ভালো খবর হলেও এটি একটি 'বিবর্তনীয় ভুল’ যা কোভিড–১৯ খুব দক্ষতার সঙ্গে সংক্রমিত হচ্ছে এবং এটি মৃদু হওয়ার কোনও কারণ নেই। তিনি এও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে পরবর্তী ভ্যারিয়েন্ট আরও মারাত্মক হতে পারে।
ওমিক্রন
ভ্যারিয়েন্ট
নিয়ে
সাম্প্রতিককালের
এক
গবেষণার
সঙ্গে
যুক্ত
রয়েছেন
কেমব্রিজের
ক্লিনিক্যাল
মাইক্রোবায়োলজির
অধ্যাপক
রবীন্দ্র
গুপ্তা।
তিনি
কোষের
একটি
পরিবর্তিত
ফিউশন
প্রক্রিয়া
বর্ণনা
করা
বিশ্বের
প্রথম
ব্যক্তিদের
মধ্যে
একজন,
যিনি
ওমিক্রনকে
শরীরের
রোগ
প্রতিরোধ
ক্ষমতার
জন্য
আরও
দৃশ্যমান
করতে
পারেন।
ব্রিটেন
ও
ভারতের
একাংশকে
নিজের
গ্রাসে
নিয়ে
নেওয়া
ওমিক্রন
নিয়ে
গবেষণায়
দেখা
গিয়েছে
যে
ফুসফুসে
পাওয়া
কোষগুলিকে
কম
সংক্রমিত
করছে,
এই
ভাইরাস
নিজেই
মৃদু
হয়ে
উঠতে
চায়
না।
বৃহস্পতিবার
এক
সাক্ষাতকারে
অধ্যাপক
বলেন,
'ধারণা
রয়েছে
যে
সময়ের
সঙ্গে
সঙ্গে
ভাইরাসগুলি
আরও
মাআত্মক
হয়ে
ওঠে
তবে
এখানে
সেটা
হবে
না
কারণ
এটি
দীর্ঘস্থায়ী
বিবর্তনীয়
প্রবণতা।’
তিনি
আরও
বিশদে
এ
প্রসঙ্গে
বলেন,
'সার্স–কোভ–২
(কোভিড–১৯)
এ
জাতীয়
কোনও
সমস্যা
নেই
কারণ
এটি
খুব
দক্ষতার
সঙ্গে
সংক্রমিত
হচ্ছে
তাই
এটি
মৃদু
হওয়ার
কোনও
কারণ
নেই,
বিশেষ
করে
প্রচুর
সংবেদনশীল
হোস্টের
সঙ্গে
টিকা
দেওয়ার
যুগে।
তাই
আমি
ভাবছি
এটা
বিবর্তনীয়
ভুল।
এটা
ইচ্ছাকৃত
কিছু
নয়
যে
ভাইরাস
তার
জীববিজ্ঞান
পরিবর্তন
করার
চেষ্টা
করছে।’
তিনি
এও
বলেন,
'ওমিক্রনের
সঙ্গে
হ্রাসকৃত
তীব্রতার
এই
অনুসন্ধানটি
এখনকার
জন্য
স্পষ্টতই
ভাল
খবর
কিন্তু
পরবর্তী
যে
প্রজাতি
আসবে
এবং
ওই
একটি
ভ্যারিয়েন্টে,
তাতে
এই
বৈশিষ্ট্যগুলি
থাকবে
না
এবং
আমরা
আগে
যে
তীব্রতা
দেখেছি
আবার
সেখানে
ফিরে
যেতে
পারি।’
অধ্যাপক
জানিয়েছেন
যে
লোকেরা
এটিকে
প্রাকৃতিক
ভ্যাকসিন
হিসাবে
দেখছে।
বিষয়টি
বোধগম্য
হলেও
বেশ
বিপজ্জনক
কারণ
অনেক
সময়ই
স্বাস্থ্যের
ওপর
বিভিন্ন
রূপের
সম্পূর্ণ
প্রভাব
বুঝতে
পারি
না।
ব্রিটেনে এই বিজ্ঞানীর জন্ম হলেও তাঁর শেকড় রয়েছে উত্তরপ্রদেশে, তিনি ব্রিটেন সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন যে টিকাকরণ কর্মসূচি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার প্রথম পদক্ষেপ। তিনি বলেন, 'আমাদের যখন মৃদু ভ্যারিয়েন্টের পরিস্থিতি রয়েছে তখন আমাদের এই পরিস্থিতিতে টিকাকরণ কর্মসূচি দ্রুত গতিতে করার সুযোগ পাওয়া গিয়েছে।’ ভারতে ওমিক্রন ওয়েভের প্রভীব প্রসঙ্গে অধ্যাপক বলেন যে এই সময় অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ভারতের এবং আগাম পদক্ষেপ করা উচিত। এছাড়াও, আমেরিকা এবং ইউরোপের তুলনায় কম আরএনএ ভ্যাকসিন সহ ব্যবহৃত ভ্যাকসিনের ধরন এবং জিনগত পার্থক্য ভারতের ওমিক্রন ওয়েভের অভিজ্ঞতায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।
করোনা ভ্যাকসিনেশনে নয়া রেকর্ড, ১৫০ কোটি টিকাকরণ ভারতে
গুপ্তা বলেন, 'ভারতে অনেকেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাই কিছু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছেএ এখানে। খুব সুন্দরভাবে টিকাকরণ হচ্ছে। আমরা জানি টিকাকরণের প্রভাব এড়াতে সক্ষম ওমিক্রন তাই তৃতীয় বুস্টার ডোজ প্রয়োজন।’ তিনি এও বলেন, 'ভারতে এটি স্পষ্ট নয়, যেখানে প্রধানত মানুষের দুটি ডোজ এবং একবার সংক্রমণ হয়েছে, এটি পর্যাপ্ত হবে কিনা। এমন কিছু লোক দেশো রয়েছে যারা দুর্বল, যারা অসুস্থ হয় এবং তাদের ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়, বিশেষ করে যাদের টিকা নেওয়া নেই।’ তিনি জানান যে এই কারণেই সতর্কতা প্রয়োজন এবং সংক্রমণে বাধা এবং টিকাদানের উপর মনোযোগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রসঙ্গত এর আগে অধ্যাপক রবীন্দ্র গুপ্তা জানিয়েছিলেন যে ডেল্টা বা করোনা ভাইরাসের অন্য রূপগুলির মতো ফুসফুসের কোষগুলির ভিতরে চট করে ঢুকে পড়তে পারছে না ওমিক্রন। মানবদেহে একটি কোষ থেকে অন্য কোষে যাওয়ার ক্ষেত্রেও করোনা ভাইরাসের অন্য রূপগুলির মতো পারদর্শী নয় ওমিক্রন। ওমিক্রনে সংক্রমিত হলে কোভিড কেন ভাইরাসের অন্য রূপগুলির সংক্রমণের চেয়ে কম ভয়াবহ হয়ে উঠছে, কেন মৃত্যুর সংখ্যা তুলনায় কম হচ্ছে, এটাই হতে পারে তার সম্ভাব্য কারণ। যদিও এই গবেষণার ফলাফলই জানিয়েছে, সবক’টি পর্বের টিকা নেওয়ার পর মানবদেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলিকে কিন্তু দক্ষতার সঙ্গেই ধোঁকা দিতে পারছে ওমিক্রন। কিন্তু ফুসফুসে চট করে ঢুকে পড়তে পারছে না। তাই কোভিড ততটা ভয়াবহ হয়ে উঠছে না। ডেল্টা বা করোনাভাইরাসের অন্যান্য রূপের সংক্রমণের তুলনায় তাই মৃত্যুর সংখ্যা কম হচ্ছে।