For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

নারীদের যৌন নিপীড়ন করে ১৪ বছরের জেল ভারতের 'জিলিপি বাবা'র

ভারতের এক কথিত ধর্মগুরুকে ১৪ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। তার বিরুদ্ধে নারীদের ওপরে যৌন নির্যাতন চালানো ও সেই ঘটনার ভিডিও বানানোর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে

  • By Bbc Bengali

নারীদের যৌন নিপীড়ন ও ব্ল্যাকমেইলের মামলায় দোষী সাব্যস্ত জিলিপি বাবা (মাঝে, সাদা জামা)
BBC
নারীদের যৌন নিপীড়ন ও ব্ল্যাকমেইলের মামলায় দোষী সাব্যস্ত জিলিপি বাবা (মাঝে, সাদা জামা)

দিল্লির পার্শ্ববর্তী রাজ্য হরিয়ানার টোহানা শহরের বহুল আলোচিত জিলিপি বাবাকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আদালত ১৪ বছরের জেলের সাজা দিয়েছে।

হরিয়ানা রাজ্যের ফতেহাবাদ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট জানুয়ারি মাসের পাঁচ তারিখে জিলিপি বাবা নামে পরিচিত ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল।

জিলিপি বাবা অমরপুরী আর বিল্লু রাম নামেও পরিচিত।

তার নামে অভিযোগ যে তিনি নারীদের যৌন নিপীড়ন করে সেগুলো ভিডিও করতেন। আবার ভিডিও প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই নারীদের তিনি ব্ল্যাকমেইলও করতেন।

নির্যাতিত নারীরা পরিবারের কাউকে বিষয়টি জানাতেন না লজ্জায়। কিন্তু ২০১৭ সালে এক নারী পুলিশের কাছে প্রথম অভিযোগ জানান। তারপরেই গ্রেপ্তার হন ওই 'জিলিপি বাবা'।

রোজগারের জন্য জিলিপি বিক্রি করতেন বিল্লুরাম ওরফে জিলিপি বাবা - প্রতীকি চিত্র
Getty Images
রোজগারের জন্য জিলিপি বিক্রি করতেন বিল্লুরাম ওরফে জিলিপি বাবা - প্রতীকি চিত্র

কে এই 'জিলিপি বাবা'

পাঞ্জাবের মনসায় জন্মানো বিল্লু রাম আট বছর বয়সেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল।

ঘুরতে ঘুরতে সে পৌঁছয় দিল্লি, যেখানে দিগম্বর রামেশ্বর নামে এক 'বাবা'র সঙ্গে তার দেখা হয়।

পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানে বিল্লু রাম জানিয়েছিলেন যে ওই দিগম্বর রামেশ্বরকে নিজের গুরু মেনে তার সঙ্গে উজ্জয়নে চলে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রায় দশ বছর ছিলেন তিনি।

তারপরে নিজের গ্রাম মনসায় ফিরে আসেন বিল্লু রাম। তার বিয়েও হয় সেখানে।

রোজগারের আশায় পাঞ্জাব থেকে হরিয়ানার টোহানা শহরে পৌঁছন বিল্লু রাম। একটা ঠেলা গাড়িতে জিলিপি বিক্রি করতে শুরু করেন বিল্লু রাম।

টোহানার বাসিন্দা, সিনিয়র সাংবাদিক গুরদীপ ভাটি বলছিলেন, "কম সময়ের মধ্যেই বিল্লুর জিলিপি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অনেক মানুষ সেখানে দাঁড়িয়েও জিলিপি খেতেন, আবার বাড়ির জন্য নিয়েও যেতেন। ওই ছোট শহরে নাম হয়ে যায় বিল্লুর জিলিপির।"

"বছর কুড়ি আগে নিজের বাড়িতেই একটা মন্দির বানায় বিল্লু রাম। ওই মন্দিরে বসেই তিনি নারীদের নানা সমস্যার কথা শুনে তার সমাধানের পথ বলে দিতেন। এই সময়েই বিল্লু রাম থেকে তিনি জিলিপি বাবা হয়ে ওঠেন," জানাচ্ছিলেন গুরদীপ ভাটি।

জিলিপি বাবার মন্দিরে শারীরিক এবং মানসিক - দুই ধরণের নারী রোগীরাই আসতেন।

হরিয়ানার এই টোহানা শহরে নিজের বাড়ির মন্দিরেই নারীদের যৌন নির্যাতন করতেন জিলিপি বাবা
BBC
হরিয়ানার এই টোহানা শহরে নিজের বাড়ির মন্দিরেই নারীদের যৌন নির্যাতন করতেন জিলিপি বাবা

মাদক খাইয়ে যৌন নির্যাতন করতেন জিলিপি বাবা

কোনও একটা 'মন্ত্র' পড়ে নারীদের সুস্থ করে তুলতেন বলে দাবী করতেন জিলিপি বাবা। আর সেই সময়েই চা বা অন্য কিছুর সঙ্গে মাদক মিশিয়ে খাইয়ে দিতেন রোগীদের। নেশা হয়ে যাওয়ার পরে ওই নারীদের ওপরে যৌন নির্যাতন চালাতেন, এমনটাই অভিযোগ পত্রে জানিয়েছিল পুলিশ।

বিল্লু রাম ওরফে জিলিপি বাবার বিরুদ্ধে পুলিশের আরও অভিযোগ যে মন্দিরে লাগানো গোপন ক্যামেরায় ওই যৌন নির্যাতনের ভিডিও রেকর্ড হয়ে থাকত। আর ওই ভিডিও প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়েই নির্যাতিতা নারীদের ব্ল্যাকমেইল করতেন ওই কথিত জিলিপি বাবা।

নারীরা ছাড়া নাবালিকাদেরও নিজের শিকার বানাতেন জিলিপি বাবা আর প্রত্যেকের কাছ থেকে মোটা অর্থ আদায় করতেন তিনি।

যেভাবে গ্রেপ্তার হন জিলিপি বাবা

লোকলজ্জার ভয়ে নির্যাতিতা নারীরা পুলিশের কাছে বা নিজের পরিবারের কাছেও মুখ খুলতেন না।

কিন্তু ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর একজন নারী পুলিশের কাছে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেন।

তিনি এও অভিযোগ করেছিলেন যে তার সঙ্গে যা করা হয়েছে, সেই অশ্লীল ভিডিওটি ওই 'জিলিপি বাবা' ভাইরাল করে দিয়েছেন।

ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারার সঙ্গেই 'জিলিপি বাবা'র ওপরে মাদক আইন ও অস্ত্র আইনেও মামলা দায়ের করে পুলিশ। মন্দির থেকে উদ্ধার হয় মাদকও।

আদালত সেই সব প্রমাণ বিচার করেই জিলিপি বাবা হয়ে ওঠা বিল্লু রামকে ১৪ বছরের জেলের সাজা দিল।

আরেক ধর্মগুরু আসারাম বাপু নাবালিকা ধর্ষনের দায়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পরে তার ভক্তদের বিক্ষোভ - ফাইল চিত্র
Getty Images
আরেক ধর্মগুরু আসারাম বাপু নাবালিকা ধর্ষনের দায়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পরে তার ভক্তদের বিক্ষোভ - ফাইল চিত্র

ভারতের আরও যে ধর্মগুরুরা যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত

'জিলিপি বাবা'র আগে অন্তত এক ডজন ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন এবং ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে সবথেকে আলোচিত দুটি নাম হল আসারাম বাপু আর গুরমিত রাম রহিম।

সারা দেশে ৪০০রও বেশি 'আশ্রম'এর প্রধান ও লক্ষ লক্ষ ভক্ত যাকে গুরু বলে মনে করতেন, সেই আসারাম বাপুকে রাজস্থানের আদালত আজীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল যে তিনি এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছিলেন। ওই একই মামলায় আসারাম বাপুর দুই সহযোগীর ২০ বছরের সাজা হয়।

গুরমিত রাম রহিম নিজের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নাম দিয়েছিলেন ডেরা সাচ্চা সৌদা। দুজন নারী ভক্তকে ধর্ষণের দায়ে তার ২০ বছরের জেল হয়েছে। বিলাসবহুল জীবনযাপন আর প্রচার সর্বস্ব ওই কথিত ধর্মগুরুকে গ্রেপ্তার করার সময়ে তার ভক্তরা ব্যাপক দাঙ্গা বাঁধিয়েছিল পাঞ্জাবের নানা শহরে। সেই সহিংসতায় অন্তত ২৮ জন নিহত হন।

শুধু হিন্দু ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধে যে যৌন নির্যাতন এবং ধর্ষণের অভিযোগ আছে তা নয়।

কেরালার এক খ্রিষ্টান বিশপ ফ্রাঙ্কো মুলাক্কালের বিরুদ্ধে এক খ্রিষ্টান সন্ন্যাসিনী ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন। তিনিই ভারতের প্রথম বিশপ, যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই বিশপকে পরে অবশ্য কেরালার এক আদালত অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে।

English summary
India's 'Jelibi Baba' jailed for 14 years for sexually assaulting women
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X