'আই অ্যাম নট সাপোসড টু টেল ইউ ', এক উত্তরেই পাক মনোবলের শিরদাঁড়া ভেঙে দেন অভিনন্দন
'আই অ্যাম নট সাপোসড টু টেল ইউ ', এক উত্তরেই পাক মনোবলের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন অভিনন্দন
চারিদিকে তখন পাকিস্তানি সেনারা। উর্দিতে একের পর এক পাকিস্তানি অফিসার। আর তাঁর মুখে চোখে তখন রক্ত, শরীর জুড়ে ক্লান্তি, রয়েছে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার দাগ, হাত পা বাঁধা, এমন অবস্থাতেও মানসিকভাবে দৃঢ়তা বজায় রেখে একের পর এক পাক সেনার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গিয়েছেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইংকামান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। চাপের মুখে অভিনন্দনের এই শক্তি সাহসই পাকিস্তানের কাছে ভারতের জবাবের প্রতীকী রূপ ছিল বলে মনে করেন অনেকেই।
পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানকে গুলি করেন অভিনন্দন
পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান এফ ১৬ তখন কাশ্মীরের আকাশ জুড়ে এগিয়ে আসছে ভারতের দিকে। আর সেই সময় ভারতের তরফে বায়ুসেনার বিমান মিগ-২১ নিয়ে পাক যুদ্ধবিমানকে তাড়া করেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। আর যুদ্ধবিমান থেকেই একটি পাক এফ ১৬ বিমানকে আঘাত করতেও সমর্থ হন তিনি। এই খবর নিশ্চিত করে বীর চক্র কর্তৃপক্ষ।
'আই অ্যাম নট সাপোসড টু টেল ইউ'
পাকিস্তানি সেনা অফিসাররা যখন তাঁকে ঘিরে ধরেছেন তখনও তিনি শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়ে। প্রশ্ন আসে, 'আপনি কোথায় থাকেন?', উত্তর আসে ' ডাউন সাউথ'। তারপর নির্দিষ্ট জায়গার নাম জিজ্ঞাসা করা হয় অভিনন্দনকে। জিজ্ঞাসা করা হয় ভারতীয় সেনার কোন রেজিমেন্টে , কোন পদে তিনি রয়েছেন, কোন বিমান তিনি চালান, ..আর এসবের জবাবে কঠোর মানসিকতা নিয়ে অভিনন্দনের জবাব ছিল 'আই অ্যাম নট সাপোসড টু টেল ইউ'। আর এই একটি বাক্যই কার্যত ভারতের দাপট পাকিস্তানের বুকে কায়েম করতে সফল হয়েছিল। গোটা বিশ্ব দেখেছিল ভারতীয় সেনার অসীম সাহস।
'টি ইজ ফ্যান্টাস্টিক'
হাতে চায়ের কাপ, চোখে মুখে ক্ষতের দাগ, তবুও দাপুটে স্বভাবে কোনও কমতি নেই সাহসের। অভিনন্দনের হাতে তখন চাায়ের কাপ , আর উল্টো দিক থেকে পাকিস্তানি সেনার অফিসার বলছেন, ' আই হোপ ইউ লাইক দ্য টি.. ', যার জবাবে পাকিস্তানি সেনা অফিসারকে তিনি বলেন, 'দ্য টি ইজ ফ্যান্টাস্টিক।' পাকিস্তানের বুকে বন্দি দশার মধ্যে একজন সেনা অফিসারের এক দৃপ্ত কণ্ঠের বক্তব্য যেন সেই সময়ের প্রতীকী ঘটনা।
কোডে স্ত্রী কোন বার্তা দিয়েছিলেন অভিনন্দনকে?
পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান এফ ১৬ ধাওয়া করতে গিয়ে ভুল বশত পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে পড়েন অভিনন্দন। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পাক সেনা। এরপরই ভারতের তরপে শুরু হয়ে যায় অভিনন্দনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা। আর সেই চেষ্টার বার্তা ফোনে কোড শব্দে অভিনন্দনের স্ত্রী অভিন্দনকে জানিয়ে দেন।
কোন কথা স্ত্রী জানান কোডে?
অভিনন্দন যখন জেলবন্দি পাকিস্তানে তখন তাঁকে তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে একবার যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়। সেই সময় অভিনন্দনকে স্ত্রী জিজ্ঞাসা করেন, যে টিভিতে তিনি অভিনন্দনকে টা খেতে দেখেন। 'চা কেমন ছিল?' প্রশ্ন করেন স্ত্রী। জবাবে অভিনন্দন সদুত্তর দিতেই, স্ত্রী জানিয়ে দেন , অভিনন্দন ফিরলে যেন ওই চায়ের রেসিপি নিয়ে আসেন। আর 'নিয়ে আসেন' এমন বক্তব্যেই অভিনন্দনের স্ত্রী স্পষ্ট করে দেন যে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনবার চেষ্টা করছে দিল্লি। আর এরপর অভিনন্দনের দেশে ফিরে আসা ভারতের কূটনৈতিক ইতিহাসের একটি বড় জয়। তবে , যেভাবে পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে অভিনন্দন দাপট দেখিয়ে এসেছেন, তা ভারতের সামরিক ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত তথা প্রতীক হয়ে রইল।