কী ভাবে কাঠমাণ্ডুতে ভেঙে পড়ল বাংলাদেশের বিমান, সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
কী ভাবে ভেঙে পড়ল বাংলাদেশ থেকে কাঠমাণ্ডু আসা বিমান? সামনে এসেছে সেই তথ্য। জানা গিয়েছে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ঠিক-ঠাকই আকাশে উড়েছিল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনের বিমান।
কী ভাবে ভেঙে পড়ল বাংলাদেশ থেকে কাঠমাণ্ডু আসা বিমান? সামনে এসেছে সেই তথ্য। জানা গিয়েছে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ঠিক-ঠাকই আকাশে উড়েছিল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনের বিমান। কিন্তু, কাঠমাণ্ডুর ত্রিভূবন বিমানবন্দরের মাটি ছোয়ার আগে সব হিসেব যেন উল্টে গেল।
জানা গিয়েছে, ইউএস-বাংলার বিমানটি কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দরে অবতরণ করতে গিয়ে তারের বেড়াতে ধাক্কা মেরে গোত্তা খায়। এরপর বিমানটি কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দরের পাশের মাঠে আছড়ে পড়ে।
এই অভিশপ্ত বিমানেই কাঠমাণ্ডু আসছিলেন বসন্ত বোহরা। হাসপাতালের বেডে শুয়েই তিনি জানিয়েছেন, কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দরে অবতরণের প্রস্তুতি থেকেই বিমানটি কেমন যেন বেসামাল হতে থাকে। বিমানবন্দরের টারম্যাক ছোঁয়ার আগেই কানে আসে বিকট আওয়াজ। কিছু বুঝে ওঠার আগে দেখা যায় বিমানটি গোত্তা খেয়ে মাঠের উপরে পড়ে আছে। সামনে ধোঁয়া ও আগুন। পাশে থাকা জানলার কাঁচ ভেঙে কোনওভাবে বাইরে বেরিয়ে আসেন বসন্ত। এরপর কিছু লোক তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। বসন্ত-র দাবি জানলার কাঁচ ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসার পর আর কিছুই তাঁর খেয়াল ছিল না। অভিশপ্ত বিমান থেকে কোনও মতে প্রাণে বেঁচে যাওয়ায় আপাতত ভগবানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন বসন্ত।
ঢাকা থেকে কাঠমাণ্ডু পৌঁছনো ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনের বিমান বিএস২১১-তে ৬৭ জন যাত্রী-সহ মোট ৭১ জন ছিলেন। শেষ পাওয়া খবরে বিমানে থাকা ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ২২ জনকে। ৮ জনের কোনও খোঁজ না পাওয়া যাওয়ায় তাঁদের মৃত বলেই ধরে নেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে দুর্ঘটনার পর বিমানে আগুন লেগে যাওয়ায় এদের শরীর অগ্নিদগ্ধ হয়ে ধ্বংসাবশেষে মিশে গিয়েছে। বিমানটিতে ৩৩ জন নেপালি এবং ৩২ জন বাংলাদেশি যাত্রী ছিলেন। একজন যাত্রী ছিলেন চিনা এবং আরও একজন যাত্রী মলদ্বীপের।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি ঘটনার অবিলম্বে যথাযথ তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন। নেপাল পুলিশের মুখপাত্র মনোজ নেপুপানে জানিয়েছেন, হাসপাতালে ২২ জন আহত যাত্রীর চিকিৎসা চলছে। এঁদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নেপালের সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব গৌতম জানিয়েছেন, বিমানটিকে ত্রিভূবন বিমানবন্দরের দক্ষিণ অংশে নামতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বিমানটি উত্তর দিকে নামার চেষ্টা করে। এর থেকে মনে হচ্ছে শেষমুহূর্তে কোনও যান্ত্রিক গোলযোগে বিমানটি সমস্যায় পড়ে। যদিও, অস্বাভাবিক ল্যান্ডিং-এর জন্য তদন্ত রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত কিছু সঠিক করে বলা যাচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন সঞ্জীব গৌতম।
এদিকে, কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দরের এয়ারপোর্টের ম্যানেজার মিস্টার ছেত্রী জানিয়েছেন, অবতরণের আগেও পাইলট জানিয়েছিলেন সবকিছু ঠিকঠাকই আছে। তাহলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কি এমন হল যাতে বিমান মাঠের উপরে ভেঙে পড়ল? এমন প্রশ্নও তুলেছেন ছেত্রী। জানা গিয়েছে, ভেঙে পড়া বিমানটি ১৮ বছরের পুরনো। তবে, আকাশে ওড়ার মতো অবস্থাতেই ছিল। ইউএস-বাংলা বিমান সংস্থা মূলত মধ্যপ্রাচ্যে অসামরিক বিমান পরিবহণের কাজ করে। এদের সদর দফতর শারজাতে বলেও জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: কাঠমাণ্ডুর মাঠে ভেঙে পড়ল বাংলাদেশের বিমান, মৃত ৫০, দেখুন ভিডিও ]