ফোকাসে চিনা আগ্রাসন, তৈরি রূপরেখা! কোয়াড-এর বৈঠকে কোন বিষয়ে জোর ভারতের?
আর কয়েকদিনের মধ্যেই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারত, আমেরিকা ও জাপানের গুরুত্বপূর্ণ নৌ-মহড়া 'মালাবার' অনুষ্ঠিত হবে৷ সেই মহড়ার কয়েক দিন আগেই টোকিওতে জাপানের নয়া প্রধানমন্ত্রীর পৌরহিত্যে বৈঠকে বসেন ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রীরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
যা বললেন এস জয়শঙ্কর
টোকিওর বৈঠকের পর বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, 'যৌথ মূল্যবোধকে সম্মান জানিয়ে গণতন্ত্র হিসাবে আমারা সম্মিলিত হয়েছি। আমরা একসঙ্গে একটি মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগর বজায় রাখার গুরুত্বকে নিশ্চিত করব। আইনের শাসন, স্বচ্ছতা, আন্তর্জাতিক সমুদ্রের চলাচলের স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সমুদ্রপথ ব্যবহার
৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ভারত সহ বাকি তিন দেশেরও মূল ফোকাস ছিল চিনের উপর। ভারত চায়, ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় অর্থনীতির উন্নতির স্বার্থে সব দেশ স্বাধীনভাবে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সমুদ্রপথ ব্যবহার করতে পারবে এবং মাদক পাচার, জলদস্যুদের দাপট বন্ধ হয়৷ তবে এই এলাকায় স্বাধীনভাবে চলাচলের ক্ষেত্রে সব থেকে বড় বাধা চিন।
সুরক্ষা ও উন্নতির বিষয়ে জোর
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবার জন্য সুরক্ষা ও উন্নতির বিষয়ে জোর দিয়ে আসছেন প্রথম থেকেই। চিন সুপার পাওয়ার এবং তাদের উচ্চাভিলাষ রয়েছে। অস্ত্রসম্ভার সর্বদাই সব দেশ গর্বের সঙ্গে প্রদর্শন করে৷ এবং চিনও এই এলাকায় তাই করে এসেছে। তবে এর জেরে এই এলাকার স্থিতিশীলতা এবং শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। পরিস্থিতি যদি সেরকম প্রতিকূল হয়, তবে সবারই সতর্ক হওয়া উচিত। এবং এই বিষয়টির উপরই জোর দিয়েছেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে ত্রিপার্শ্বিক মহড়া
এই প্রথম ভারত ও আমেরিকার মধ্যে ত্রিপার্শ্বিক মহড়া হবে নভেম্বরে। সেই মহড়ায় দুই দেশের স্থল, জল ও বায়ুসেনা অংশ নেবে। ভারত এই মহড়ায় কারও জোটসঙ্গী হিসেবে নয়, স্বাধীনভাবে অংশ নেয়৷ এছাড়া ভারত, আমেরিকা এবং জাপানের মধ্য়কার নৌ-সহযোগিতাকে আরও জোরদার করতে এবং নিজেদের সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে মালাবার নৌ-মহড়ার আয়োজন করা হবে। টোকিওর বৈঠকে এবিষয়েও নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় করেন বিদেশমন্ত্রীরা।
ভারত ও আমেরিকার সামরিক দায়িত্ব ক্রমশ বাড়ছে
এছাড়া আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ইন্দো-প্যাকোম সমঝোতা, যার মাধ্যমে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত ও আমেরিকার সামরিক দায়িত্ব ক্রমশ বাড়ছে৷ ভারতের উপর অ্যামেরিকার ভরসা রয়েছে বলেই এটা হচ্ছে ৷ আমেরিকার নজর এখন দক্ষিণ চিন সাগরের দিকে, কারণ তারা জানে ওই এলাকায় রয়েছে এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সামরিক শক্তি৷
ভারত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে নিজেদের বলে দাবি চিনের
বাণিজ্যের জন্য সবাই ভারত মহাসাগর ব্যবহার করে। তবে ভারত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে নিজেদের বলে দাবি করছে চিন। মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, মাদাগাসকার, মরিশাস, বাংলাদেশকে নিজেদের দিকে টানতে চাইছে চিন। কিন্তু ভারতও কূটনৈতিক এই লড়াই সমান দক্ষতার সঙ্গে নিজের জমি শক্ত করতে সচেষ্ট হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মহাসাগরে উপনীত এই চিনা চ্যালেঞ্জকে প্রতিহত করতে বড় ভূমিকা পালন করবে কোয়াড। যার রূপরেখা তৈরি করছে এই চার দেশ।
চিন সীমান্ত পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ, ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে ভারত-নেপাল সীমান্ত বিতর্ক