২০২২-এর প্রথমেই রাতের আকাশ হবে মোহময়ী, মঙ্গলের চাঁদ থেকে উল্কাবৃষ্টি- ঘটনার ঘনঘটা
২০২২-এর প্রথমেই রাতের আকাশ হবে মোহময়ী, মঙ্গলের চাঁদ থেকে উল্কাবৃষ্টি- ঘটনার ঘনঘটা
২০২১-এর শেষ মাসে ডিসেম্বরে রাতের আকাশে উজ্জ্বলতর জ্যোতিষ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে ধূমকেতু লিওনার্ড। ২০২২-এ রাতের আকাশেও দেখা যাবে নানা মহাজাগতির ঘটনা। তার মধ্যে অন্যতম জেমিনিড উল্কাপাত। ঝরনার মতো ঝরে পড়তে দেখা যাবে আকাশ থেকে। স্টারগেজাররাও ২০২২-কে বরণ করে নিতে রাতের আকাশে হাজির হবে নতুন বছরের প্রথম মাসেই।
নতুন বছরে রাতের আকাশে স্টারগেজিং
শুধু উল্কাপাত বা স্টারগেজারদের উপস্থিতিই নয়, ঘটনাবহুল মহাকাশের সাক্ষী থাকবে জানুয়ারি মাস। নতুন বছরের প্রথম মাসে মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে নতুন চাঁদের দেখা মিলতে চলেছে। আর সবথেকে রাতের আকাশকে মোহময়ী করে তুলবে উল্কাবৃষ্টির ঘনঘটা। নতুন বছরে রাতের আকাশে স্টারগেজিং শুরু হবে ২ জানুয়ারির পর থেকে।
মঙ্গল, চাঁদ, উল্কা ও তারারা নতুন রূপে
জানুয়ারি মাস আকাশে গ্রহ ও নক্ষত্র দেখার জন্য আদর্শ হবে। কারণ অমাবস্যার আগে ও পরে কিছু রাত অন্ধকার হবে। সেই অন্ধকার আকাশকে মোহময়ী করে তুলবে মঙ্গল, চাঁদ, উল্কা ও তারাদের নতুন রূপে আবির্ভাব। তাই মহাকাশপ্রেমী মানুষেরা অবশ্যই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকবেন আকাশের দিকে। কখন মহাজাগতিক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
জানুয়ারিতে নতুন চাঁদ উঠবে আকাশে
২০২২-এর ২ জানুয়ারি থেকে রাতের আকাশে নতুন চাঁদ দেখা যাবে। কিন্তু কখন দেখা যাবে সেই চাঁদকে? যখন সূর্যের ঠিক বিপরীত দিকে পৃথিবীর সঙ্গে সারিবদ্ধ হবে ওই চাঁদ, তখনই মিলবে দেখা। এই নতুন চাঁদ দেখা অসম্ভব হয়, যেহেতু সূর্য, চাঁদ এবং পৃথিবী সারিবদ্ধ হলে চাঁদের দিকটি অন্ধকারে পড়ে যায়। নতুন চাঁদ দিনের বেলায় ওঠে। এবার সূর্যের আলোর কাছাকাছি থাকায় ভোরের আকাশে তা স্বল্প সময়ের জন্য দেখা মিলবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন, অমাবস্যার রাত তারা দেখার জন্য সর্বোত্তম। কারণ অমাবস্যার রাত থাকে অন্ধকার।
চতুর্মুখী উল্কা ঝরনা রূপে ঝরে পড়বে
অমাবস্যার রাতে অন্ধকার নেমে আসার পরই চতুর্মুখী উল্কাবৃষ্টির নান্দনিক দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারেন আকাশে। ২ জানুয়ারি রাতে এবং ৩ জানুয়ারি সকালে তারাদের এই ঝরে পড়ার দৃশ্য প্রতিভাত হবে। উল্কা আগুনের বল তৈরি করে ঝরে পড়বে। যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে, তবে সেই অনিন্দ্যসুন্দর দৃশ্য দেখা যাবে নতুন বছরের শুরুতেই।
বিলুপ্ত ধূমকেতু নাকি গ্রহাণু?
নাসার মতে, উল্কাগুলি বুয়েটস নক্ষত্রমণ্ডল থেকে বিকিরণ করছে। যার মধ্যে রয়েছে উজ্জ্বল নক্ষত্র আর্কটুরাস। বুয়েটস আকাশের উপরে উঠে গেলে মধ্যরাতের পরে সবচেয়ে ভালো দেখা হবে উল্কাপাতের দৃশ্য। চতুর্মুখী উল্কাবৃষ্টির উৎসকে গ্রহাণু ২০০৩ ইএইচ১ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা, যা আসলে একটি বিলুপ্ত ধূমকেতু হতে পারে।
মঙ্গল, শুক্র সঙ্গ দেবে চাঁদকে
জানুয়ারি শেষে মঙ্গল গ্রহ চাঁদের কাছাকাছি আসবে। ভোরের আকাশে তা দৃশ্যমান হবে একসঙ্গে। দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে এই জুটির সঙ্গে যোগ দেবে শুক্রও। গত মাস থেকেই সন্ধ্যার আকাশে উদয় হওয়ার পর, শুক্র এখন 'মর্নিং স্টার' হিসাবে সূর্যের আগে উঠছে। সূর্যের পিছন থেকে আবির্ভূত হওয়ার পর লাল গ্রহ মঙ্গলও ধীরে ধীরে আমাদের দৃষ্টিগোচরে আসছে। তখনও আকাশে চাঁদের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে শুক্র ও মঙ্গলকে।
এককথায় মহাজাগতিককাণ্ড ভোরের আকাশে
নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাস মঙ্গল গ্রহ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হতে থাকবে এবং তা আরও উপরে উঠতে থাকবে। মঙ্গলগ্রহ শনি এবং বৃহস্পতির অতি-ঘনিষ্ঠ সংযোগ থাকবে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তারপর শুক্র ও মঙ্গলকে দেখা যাবে একই আকাশে সঙ্গে থাকবে চাঁদও। যা এককথায় মহাজাগতিকই বটে।