প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ প্রয়াত, ৯ মাসের লড়াই থেমে গেল দুবাইয়ের হাসপাতালে
মৃত্যুর সঙ্গে বিগত ৯ মাস ধরে পাঞ্জা লড়ে দুবাইয়ের হাসপাতালে যুদ্ধ থেমে গেল কারগিল যুদ্ধের মাস্টারমাইন্ডের।
প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ প্রয়াত হলেন দুবাইয়ের হাসপাতালে। ৯ মাসের লড়াই থেমে গেল অবশেষে। অসুস্থ হয়ে বিগত ৯ মাস ধরে তিনি ভর্তি ছিলেন দুবাইয়ের হাসপাতালে। রবিবার সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে পাক মিডিয়া সূত্রে জানানো হয়েছে।
৯ মাস আগে অসুস্থ হয়ে দুবাইয়ের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মুশারফ হোসেন। ৯ মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষ রক্ষা হল না। নিভে গেল কারগিল যুদ্ধের মাস্টারমাইন্ডের জীবন প্রদীপ। মুশারফের পার্থিব দেহ পাকিস্তানে ফেরানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
৭৯ বছর বয়স হয়েছিল প্রয়াত পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফের। ১৯৪৩ সালের ১১ অগাস্ট অবিভক্ত ভারতের দিল্লিতে জন্ম হয় পারভেজ মোশারফের। তারপর পাকিস্তানে চলে যায় তাঁর পরিবার। করাচির সেন্ট প্যাট্রিক্স হাইস্কুলে তাঁর পরাশোনা। উচ্চশিক্ষা লাহোরের পোরম্যান ক্রিশ্চিয়ান কলেজে। তারপর তিনি যোগ দেন পাক সেনাবাহিনীতে।
পাক সেনাবাহিনীর প্রধান হয়ে ওঠেন তিনি। তারপর সেনাবাহিনীর প্রধান থেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট। ২০০১ সালে পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট হন তিনি। ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন এই পদে। তারপর তাঁর পদস্খলন হয়। নানা অভিযোগে তাঁকে দেশ ছাড়তে পর্যন্ত হয়। ২০১৯-এ দোশদ্রোহিতার অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত করা হয় তাঁকে। দেওয়া হয় প্রাণদণ্ডও।
পরবর্তীকালে প্রাণদণ্ডের নির্দেশ বাতিল করা হয়। এরই মধ্যে জানতে পারা যায় পারভেজ মুশারফ প্রবল অসুস্থ। তিনি এমন অবস্থায় রয়েছেন যে, তার পক্ষে ফিরে আসা সম্ভব নয়। তাঁর অঙ্গপ্রত্যঙ্ক ঠিকঠাক কাজ করছে না। পরিবারের পক্ষ থেকে টুইট করে এই বিবৃতি দেওয়া হয়।
গত তিন সপ্তাহ ধরে অ্যামিলোডুসিসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়। অবসান হয় একটা বর্ণময় জীবনের। তাঁর যেমন নাটকীয় উত্থান ঘটেছিল, পতনও হয়েছিল আচমকা। শেষ জীবনটা তাঁকে কাটাতে হয়েছিল দেশছাড়া হয়ে। পাকিস্তান ছেড়ে দুবাইয়ে বাসা বেঁধেছিলেন তিনি।
২০০২ সালে কার্গিল যুদ্ধের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তিনি। তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত কার্গিত যুদ্ধে ভারত কড়ডা টক্কর দিয়ে জয় হাসিল করে নিয়েছিল। আবার পরবর্তী সময়ে এই পারভেজ মুশারফকে দেখা গিয়েছিল ভারতের সঙ্গে সখ্যতার সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টায়। অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে আগ্রা চুক্তি হয়েছিল পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্টের।
পারভেজ মুশারফকে দ্বৈত ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল ভারতের সঙ্গে। তিনি প্রতিবেশী ভারতকে আক্রমণ করেছিলেন। পরে আবার ভারতের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। এই মর্মে তাঁর বিদেশ নীতিকে আবার মান্যতা দেয় পাকিস্তান।