পাশে আমেরিকা ও ব্রিটেন, ইজরায়েল জানাল, জবাবি হামলা চলবে
৮ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের সংঘর্ষ। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪৮ জন। গত ১৪ দিনে হামাসের গুলিতে মারা গিয়েছে ২৭ জন ইজরায়েলি সেনা। রবিবার মারা যান ১৩ জন আর গতকাল আরও ৯ জন। এর পর আরও ক্ষেপে গিয়েছে ইজরায়েল। পাশাপাশি, গত কয়েক দিনের মৌনব্রত ভেঙে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন বলেছে, ইজরায়েলের 'আত্মরক্ষার অধিকার আছে', যার ফলে লড়াই আপাতত থামবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, "হামাস জঙ্গিরা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে আমাদের দেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। ওদের বাধা দেওয়ায় হামলা চালাচ্ছে। আমরা আমাদের সেনাদের নিয়ে গর্বিত। আমি বলছি, অভিযান চলবে এবং ততক্ষণ চলবে যতক্ষণ না আমরা লক্ষ্যে পৌঁছচ্ছি। হামাসকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ইজরায়েলের নাগরিকদের জীবন সুরক্ষিত করাই আমাদের লক্ষ্য।"
প্রসঙ্গত, গতকাল ইজরায়েলি ট্যাঙ্ক গাজায় আল-আসকা হাসপাতালে গোলাবর্ষণ করে। এতে ৫ জন রোগী মারা যান। বিশ্ব জুড়ে এর নিন্দা হলেও ইজরায়েলের দাবি, ওই হাসপাতালের একটি ঘর থেকে হামাস জঙ্গিরা লুকিয়ে গুলি চালাচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়ে কামান দাগতে হয়েছে।
মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৫৪৮ জন। ১৪ দিনে হামাসের গুলিতে নিহত ২৭ ইজরায়েলি সেনাও
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ইজরায়েলের জনমত বরাবরই হামাসের বিরুদ্ধে। এবারের অভিযানে যত জন সেনা মারা গেল, তা ২০০৬ সালের পর আর কখনও হয়নি। তাই জনমতের চাপে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পক্ষে মিশর বা রাষ্ট্রসংঘের শান্তি প্রস্তাব মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। হামাসও বলেছে, তারা এখনই যুদ্ধবিরতির কথা ভাবছে না। ফলে আরও রক্ত ঝরবে সন্দেহ নেই।
এদিকে, পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরানোর উদ্দেশ্যে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী জন কেরি দৌত্য চালালেও তাঁর দেশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার সঙ্গে অন্তত দু'বার ফোনে কথা হয়েছে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর। নিরীহ মানুষের মৃত্যুতে উদ্বেগ ব্যক্ত করলেও ওবামা বলেছেন, "যে কোনও সময় যে কোনও পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে ইজরায়েলের।" ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, "গাজা থেকে রকেট উড়ে আসছে। মারা যাচ্ছে ইজরায়েলের নিরীহ নাগরিকরা। এই অবস্থায় নিজেদের রক্ষা করার অধিকার রয়েছে ইজরায়েলের। তাদের এই অবস্থানকে ব্রিটেন পূর্ণ সমর্থন জানায়।" মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন, এই দুই শক্তিধর দেশের সমর্থন থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ইজরায়েল আরও শক্তি পেয়েছে।
ইজরায়েলি সেনাকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদপত্র 'দ্য গার্ডিয়ান' জানাচ্ছে, হামাস জঙ্গিদের ১৬টি গোপন সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এই সুড়ঙ্গগুলি দিয়ে ঢুকে ইজরায়েলে গণহত্যা চালানোর পরিকল্পনা ছিল হামাসের। এই সুড়ঙ্গগুলির ৪৩টি মুখের সন্ধান মিলেছে। অনুমান, আরও অনেকগুলি সুড়ঙ্গ খুঁড়েছে হামাস। এর সন্ধান পেতে ইজরায়েল তাদের তুখোড় গোয়েন্দা সংস্থা 'মোসাড'-কে কাজে লাগিয়েছে।