
গণবিক্ষোভের পরে বদলে যেতে পারে করোনা বিধি! জিনপিং বিরোধী স্লোগানে উঠছে একাধিক ইঙ্গিত
চিনে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। তার জেরেই নতুন করে লকডাউন শুরু হয়েছে। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিরোধী স্লোগান উঠতে শুরু করেছে। শি জিনপিংয়ের প্রেসিডেন্ট থাকার সময় সব থেকে বড় গণবিক্ষোভ শনিবার সন্ধ্যা থেকে। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অস্বস্তি এই গণবিক্ষোভ বাড়াবে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

জিনপিংয়ের আমলে সব থেকে বড় বিক্ষোভ
১৯৭৯ সালে তিয়ানানমেন স্কোয়ারের বিক্ষোভের পর চিনে একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে এতবড় জনবিক্ষোভ আগে হয়নি। এশিয়া সোসাইটির একজন চিন বিশেষজ্ঞ বেটস গিল বলেছেন, শি জিনপিংয়ের সময়কালে এত বড় জনবিক্ষোভ আগে কখনও হয়নি। মূলত জিনপিংয়ের শূন্য কোভিড নীতির বিরোধিতা করে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। শি জিনপিংয়ে শূন্য কোভিড নীতির জেরে দেশের সামজিক ও অর্থনৈতিক জীবন ক্রমেই বিপন্ন হচ্ছে। গত তিন বছর ধরে কঠোর করোনা বিধি ও দীর্ঘ লকডাউনের ফলে অনলাইনে মানুষের অসন্তোষের আন্দাজ পাওয়া যেতে থাকে।শনিবার সন্ধের সময় মোমবাতি দেশের বাণিজ্যের রাজধানী সাংহাউতে নতুন করে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ধীরে ধীরে সেই বিক্ষোভ চিনের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে যেতে শুরু করে।

করোনা বিধির জেরে অগ্নিদগ্ধ ১০
চিনের জিনজিয়াং প্রদেশের উরুমকিতে একটি বহুতলে বৃহস্পতিবার ভয়াবহ আগুন লাগে। সেই অগ্নিকাণ্ডের জেরে ১০ জনের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, করোনা আক্রান্তরা যাতে ঘরের বাইরে বের হতে না পারে, সেই কারণেই একাধিক বাড়িতে প্রশাসনের তরফে তালাবন্ধ করে রাখা হয়। বাইরে বের হতে না পেরে তাঁদের অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। এরপরেই চিনের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়তে থাকে। প্রথমে সাংহাইয়ের মানুষ প্রথম বিক্ষোভ দেখান। তারপর সেই বিক্ষোভ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

বিক্ষোভেও নিজের সিদ্ধান্তে স্থির শি জিনপিং
চিনের বিভিন্ন শহর সব তিব্বতের প্রাদেশিক রাজধানীতে বিক্ষোভ দেখা যায়। দীর্ঘ লকডাউন ও করোনা পরীক্ষার বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। তবে, চিনা দৈনিকগুলো দাবি করেছে, প্রশাসন কঠোর হাতে বিদ্রোহ দমন করবে। শূন্য কোভিড নীতি থেকে কোনও ভাবেই চিনের প্রশাসন সরে আসবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে পুলিশ আটক করে বলে জানা গিয়েছে। তবে আটকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে আটক অবস্থায় চিনা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মারধর করে বলে অভিযোগ।

মাস্ক চাই না স্বাধীনতা চাই
তিন বছর আগে চিনের উহান প্রদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। তারপর থেকে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। করোনা মহামারীর প্রকোপকে সামলে বিশ্ব ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরলেও, চিন এখনও ছন্দে ফিরতে পারেনি। চিনে এখনও করোনা বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলতে হয়। করোনা সংক্রমণ একটু বাড়লে এখনও লকডাউন হয়। আর্থিকভাবে চিনের বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উহান প্রদেশের বাসিন্দারাও চিনের কঠোর করোনা বিধির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন। উহানে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পড়ুয়ারাও বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। সোমবার ভোরবেলা বেজিংয়ের লিয়াংমা নদীর কাছে তৃতীয় রিং রোডে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী জমা হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। যার ফলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে থাকেন, 'আমরা মাস্ক চাই না, আমরা স্বাধীনতা চাই, আমরা করোনা পরীক্ষা চাই না, আমরা স্বাধীনতা চাই।'
মমতাকে শুভেন্দুর 'প্রণাম’-এর পাল্টা দিতে 'ছবি’ খুঁজছে বিজেপি, বুমেরাংয়ের আশঙ্কা পঞ্চায়েতে