২০১৮ সাল থেকেই ছক কষছে বেজিং, চিনের হাত ধরে তালিবান উত্থানে কেন সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত
২০১৮ সাল থেকেই ছক কষছে বেজিং, চিনের হাত ধরে তালিবান উত্থানে কেন সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত
পাকিস্তান নয়, শুরু থেকেই চিনকে নিজেদের অন্যতম প্রধান সহযোগী হিসাবে দাবি করে আসছে তালিবানেরা। অন্যদিকে ভারতের স্নায়ুর চাপ বাড়িয়ে আফগানিস্তানে তালিবান উত্থানের পিছনে বড় ভূমিকা রেখেছে চিনও। এমনকী এই পথে হাতিয়ার করা হচ্ছে পাকিস্তানকেও। এদিকে আগামী ছয় মাসে চিনের কাছ থেকে বড় বিনিয়োগের আশা করছে তালিবানেরা। সূত্রের খবর, তালিবানি উত্থান নিয়ে ২০১৮ সাল থেকেই একাধিক ছক কষে রেখেছিল চিন।
সিপিইসি নিয়ে কী প্ল্যান তালিবানদের
আগামী ছয় মাসের মধ্যে আফগানিস্তানে বড় বিনিয়োগ করতে পারে চিন। এমনটাই মনে করছে নবগঠিত তালিবান সরকার। গত সপ্তাহে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে তালিবান সরকার চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডরে (সিপিইসি) যোগ দিতে চায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সিপিইসি চিনের বহুল আলোচিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অংশ।
২০১৮ সাল থেকেই ছক কষছে বেজিং
সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে ২০১৮ সাল থেকে আফগানিস্তানের"সম্ভাব্য প্রকল্প" নিয়ে তালিবানদের সঙ্গে আলোচনায় ছিল। তালিবানরাও এখন চায় চিন দ্রুত তাদের সরকারের হাত ধরে বিনিয়োগ করুক। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে আফগানিস্তানে তালিবানদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার পিছনে তবে কী দীর্ঘদিন থেকে ছক কষছিল বেজিং? সূত্রের খবর, চিন এবং তালিবান বিনিয়োগের বিষয়ে ইতিমধ্যেই একটি মৌখিক চুক্তি হয়েছে। যদি তালিবান সরকার বৈশ্বিক স্বীকৃতি পায়, চিন সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প শুরু করবে। যদি গোটা বিষয়টি নিয়ে রয়েছে ব্যাপক ধোঁয়াশা।
চিনের শর্তের কাঁটায় উইঘুরুরা
এদিকে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আফগানিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে চিন একদমই চিন্তিত নয়। উল্টে শুধু তারা তাদের লাভের ঘরা পূরণেই ব্যস্ত। আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে তাদের একমাত্র শর্ত হল তালিবান সরকার উইঘুর মুসলিমদের আশ্রয় দেবে না। তালিবানেরা ইতিমধ্যেই মৌখিক ভাবে সেই প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। আর এখানেই দানা বাঁধছে নতুন উগ্বেগ। এদিকে দিন যত বাড়ছে চিনে ততই নিপীড়ন বাড়ছে উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর। দেশে ছেড়ে পালাতেও বাধ্য হচ্ছেন হাজার হাজার সংখ্যালঘুরা।
কেন সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত
এদিকে গত বুধবারই পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশের বিদেশ মন্ত্রীদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। যাতে অংশ নিতে দেখা যায় চিন, ইরান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তানের মতো দেশগুলিকে। এই বৈঠকে চিন আফগানিস্তানকে 3.১০ কোটি মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করেছে। বস্তুত এই রাস্তাতে হেঁটেই বিশ্বের কাছে নিজের ভাবনূর্তি স্বচ্ছ করতে চাইছে চিন, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের। স্বল্প বিনয়োগের রাস্তাতে হেঁটেই ভবিষ্যতে বড় লাভের অঙ্ক কষছে বেজিংয়েক কূটনীতিকেরা। আর এটা হলে তা যে ভারতের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।