গোপনে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরেও শেষ রক্ষা হল না! রাতেই ফাঁসি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীর
বঙ্গবন্ধুর হত্যার ঘটনার পর দীর্ঘ সময় দেশান্তরিত ছিলেন আব্দুল মাজেদ। শেষের ২২ বছর কাটিয়েছেন কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। ফিরেছিলেন ঢাকায়। কিন্তু গত সোমবার রাতে ঢাকাতেই ধরা পড়ে যান
বঙ্গবন্ধুর হত্যার ঘটনার পর দীর্ঘ সময় দেশান্তরিত ছিলেন আব্দুল মাজেদ। শেষের ২২ বছর কাটিয়েছেন কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায়। ফিরেছিলেন ঢাকায়। কিন্তু গত সোমবার রাতে ঢাকাতেই ধরা পড়ে যান পুলিশের হাতে। এবার তাঁর ফাঁসির পালা। সূত্রের খবর শনিবার রাতেই তাঁর ফাঁসি হতে চলেছে। কেরানিগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন তিনি। এদিকে দোষী সাব্যস্ত আব্দুল মাজেদকে ফাঁসি দিতে তৈরি ১০ সদস্যের জহ্লাদের দল।
কারাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধের পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়েছিল, তাঁরা যাতে মাজেদের সঙ্গে শেষ দেখা করতে পারেন তার জন্য। ওই কারাগারের ফাঁসির মঞ্চ তৈরির পর কোনও আসামির ফাঁসি হয়নি এখনও পর্যন্ত।
ঢাকা থেকে গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর ভবিষ্যৎ পরিণত কী হতে চলেছে, তা বুঝতে পেরেছিলেন আব্দুল মাজেদ। কেননা তাঁর ফাঁসির আদেশ আগেই হয়ে গিয়েছিল। সূত্রের খবর অনুযায়ী যে সময় ফাঁসির আদেশ হয়েছিল, সেই সময় তিনি পরিচয় গোপন করে ছিলেন কলকাতায়। গ্রেফতার হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনও জানান তিনি। কিন্তু সেই আবেদন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ খারিজ করে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
ঢাকায় যাওয়ার আগে তিনি কলকাতায় ছিলেন প্রায় ২২ বছর। এমনই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি ঢাকার পুলিশের কাছে করেছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত খুনি আব্দুল মাজেদ। সোমবার রাতে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পলাতক আসামি আব্দুল মাজেদকে। মঙ্গলবার তাঁকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এএম জুলফিকার হায়াত।
সোমবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ঢাকার মীরপুরের সাড়ে এগারো নম্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় আব্দুল মাজেদকে। তাঁকে বাসস্ট্যান্ডের সামনে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছিল বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। জিজ্ঞাসাবাদের নিজের নাম জানান তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভেঙে পড়ে আব্দুল মাজেদ জানিয়েছেন, কলকাতা থেকে তিনি গত মাসেই ফিরেছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি কলকাতা ছাড়াও উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় থেকেছেন বলে জানা গিয়েছে। নির্দিষ্টভাবে কোনও জায়গায় তিনি বেশি দিন থাকেননি। বাংলাদেশ পুলিশ কলকাতা পুলিশের থেকে মাজেদের আশ্রয়স্থল জানার চেষ্টা করছে বলে জানা গিয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে খবর ভারতীয় নাগরিকের প্রমাণ পত্র যোগার করেছিলেন তিনি। ছিল ভারতীয় পাসপোর্টও।
১৯৯৭-তে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বাবার খুনিদের বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। সেই সময় থেকে মাজেদের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
ঢাকায় সরকারি বাসভবনে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে মুজিবর রহমানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সবাই সেনাকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। আব্দুল মাজেদ ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার ছিলেন। এছাড়াও বাকি পাঁচ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনি হলেন, খন্দকার আব্দুর রশিদ, এএম রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এমবি নূর চৌধুরী, এবং মোসলেম উদ্দিন। এদের সবাইকেই বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার সরকার।