বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আচমকা চলল গুলি, ঘটনায় নিহত কমপক্ষে সাতজন
বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আচমকা চলল গুলি
বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। সেখানকার শরণার্থী শিবিরে গুলি চালানোর ঘটনায় কমপক্ষে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, বন্দুকবাজদের গুলিতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং অনেকে আহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোরে বাংলাদেশ–মায়ানমার সীমান্তে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে এই ঘটনা ঘটেছে।
গুলিতে নিহত সাতজন রোহিঙ্গা
বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান জানিয়েছে, হামলাকারীরা কিছুজনের ওপর গুলি চালিয়েছে এবং অন্যদের ছুরি দিয়ে আঘাত করেছে। জখম ব্যক্তিদের ক্যাম্প সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কী কারণে এই সংঘর্ষ, তা নিশ্চিত করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। এই হামলার ঘটনা শরণার্থী শিবিরে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। এই শিবিরেই মায়ানমারের ৯ লক্ষের বেশি রোহিঙ্গাদের বাড়ি রয়েছে। এই হামলার তিন সপ্তাহ আগে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতাকে তাঁর অফিসের বাইরে গুলি করে মেরে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর গ্রেফতার এক
শুক্রবারের হামলায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চারজনের এবং তিনজনের মৃত্যু হয় বালুখালি ক্যাম্প সংলগ্ন হাসপাতালে। পুলিশ জানাতে ব্যর্থ হয়েছে যে ঠিক কতজন মানুষ এই ঘটনায় আহত হয়েছেন। সশস্ত্র পুলিশ ব্যাটেলিয়ানের আঞ্চলিক প্রধান শিহাব কাইসার খান বলেছেন, 'আমরা দ্রুত একজন হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছি এই ঘটনার পর।' তিনি জানিয়েছেন যে ওই ব্যক্তির কাছে বন্দুক ও ছয় রাউন্ড গুলি এবং ছুরি পাওয়া গিয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আতঙ্কের পরিবেশ
অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারীদের দ্বারা অধিকার সমর্থক মহিব উল্লাহকে হত্যার পর থেকে অধিকাংশ রোহিঙ্গা আন্দোলনকারীরা আত্মগোপনে চলে গেছে। এই হত্যার পেছনে অনেক আন্দোলনকারী আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আর্সা)-কে দায়ী করেন। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে আর্সা জঙ্গি গোষ্ঠী মায়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হওয়ার হামলার পেছনে রয়েছে এবং এরই কারণে ৭৪০,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করতে শুরু করে। যদিও আর্সা এই অভিযোগ মানতে নারাজ। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন যে শরণার্থী শিবিরে ভয়ের আবহ তৈরি হয়েছে। পুলিশ রোহিঙ্গাদের শিবিরে কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করেছে এবং সাম্প্রতিক গুলি চালনার ঘটনার তদন্ত করতে শুরু করে দিয়েছে।
দু’বছরে বেড়েছে শরণার্থী শিবিরে হামলা
এদিকে গত দুই বছর ধরে শরণার্থী শিবিরগুলিতে হিংসার ঘটনা বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা। এর জেরে এই শিবিরগুলিতে নিরাপত্তার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তার উল্লেখ মিলেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্টেও।
মুম্বইয়ে বহুতলে বিধ্বংসী আগুন, পুড়ে মৃত্যু ১ জনের, ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের ১২টি ইঞ্জিনের
শরণার্থী ক্যাম্প কক্সবাজারে
উল্লেখ্য, বিশ্বের অন্যতম বড় শরণার্থী ক্যাম্প কক্সবাজারে। মায়ানমার থেকে বিতারিত রোহিঙ্গাদের বাস এই ক্যাম্পগুলিতে। এর আগেও এই ক্যাম্পগুলিতে এধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয় পুলিশ এই ঘটনাগুলির দায় চাপায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতীদের উপর। তবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হাতে অস্ত্র কী করে আসে, তা নিয়ে স্পষ্ট জবাব মেলে না।
প্রতীকী ছবি