আমেরিকায় মধ্যবর্তী নির্বাচন কী? ফলাফল জো বাইডেনের ওপর কী প্রভাব ফেলবে
আমেরিকায় মধ্যবর্তী নির্বাচন কী? ফলাফল জো বাইডেনের ওপর কী প্রভাব ফেলবে
আমেরিকায় মধ্যবর্তী নির্বাচন হতে চলেছে। গত দুই বছর ধরে মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যা গরিষ্ঠতা বজায় রেখেছে। তবে রিপাবলিকানদের সঙ্গে তাদের আসনের বিশেষ তফাৎ নেই। আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যেমন গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি গুরুত্বপূর্ণ এই মধ্যবর্তী নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং সেনেট সদস্য নির্বাচিত হয়। একাধিক সংস্থার সমীক্ষা জানাচ্ছে মধ্যবর্তী নির্বাচনে হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসয়ে রিপাবলিকানরা সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেতে পারেন। তবে সেনেটে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাওয়া প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরবর্তী সমস্ত সিদ্ধান্ত এই মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। ৮ নভেম্বর ২০২২ সালে আমেরিকায় মধ্যবর্তী নির্বাচন হয়েছে।
আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচন কী
মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচন হয় মধ্যবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে। মার্কিন কংগ্রেস দুটি ভাগে বা কক্ষে বিভক্ত। একটি হল হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং অন্যটি হল সেনেট। মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য নির্বাচন মূলত দুই বছর অন্তর হয়ে থাকে। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন চার বছর অন্তর হয়ে থাকে। যখন একজন প্রেসিডেন্টের মেয়াদকালের ভিতর মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচন হয় তখন তাকে আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচন বা ইউএস মিডটার্ম ইলেকশন বলা হয়ে থাকে।
সেনেটর ও রিপ্রেজেন্টিভ নির্বাচন
আমেরিকার প্রতিটি প্রদেশে দুজন সেনেটর নির্বাচন হয়। অন্যদিকে, প্রদেশগুলির প্রতিটি জেলা থেকে একজন রিপ্রেজেন্টেটিভ নির্বাচিত হন। সেনেটর ছয় বছরের মেয়াদ থাকে। প্রতি ছয় বছর অন্তর সেনেটর নির্বাচিত হয়। অন্যদিকে, প্রতি দুই বছর অন্তর রিপ্রেজেন্টেটিভস নির্বাচন হয়। নভেম্বরে ৮ তারিখে আমেরিকার সমস্ত রিপ্রেজেন্টেটিভস ও সেনেটের এক তৃতীয়াংশ সেনেটর নির্বাচিত হবেন মধ্যবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে। এছাড়াও এই মধ্যবর্তী নির্বাচনে কয়েকটি প্রদেশের গভর্নর ও শীর্ষস্থানীয় আধিকারিদের নির্বাচন হবে।
সেনেটর ও রিপ্রেজেন্টেটিভসের গুরুত্ব
মার্কিন কংগ্রেস সেনেটর ও রিপ্রেজেন্টেটিভসদের নিয়ে গঠিত হয়। মার্কিন কংগ্রেসের হাতে নতুন আইন তৈরি করার ক্ষমতা থাকে। মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেন কোনও আইন পক্ষে ভোট দেওয়া হবে এবং কোনও আইনের বিপক্ষে ভোট দিতে হবে। প্রেসিডেন্ট কোনও নিয়োগ করতে গেলেও মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। এমনকী, কোনও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তদন্ত করার সিদ্ধান্তও মার্কিন কংগ্রেস নিতে পারে। তবে মার্কিন কংগ্রেসের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত বিরল।
২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রভাব
মার্কিন প্রেসিডেন্ট কী কাজ করছে, তার প্রভাব মধ্যবর্তী নির্বাচনগুলিতে পরে। জো বাইডেনের জন্য এই মধ্যবর্তী নির্বাচন যথেষ্ঠ উদ্বেগের কারণ। মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জনপ্রিয়তা ৫০ শতাংশ নিচে চলে এসেছে। এক্ষেত্রে মার্কিন কংগ্রেসের দুটি কক্ষেই যদি রিপাবলিকানরা জয়ী হন, সেক্ষেত্রে জো বাইডেনের পক্ষে প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনও সিদ্ধান্ত নিলেও তা কার্যকরের ক্ষেত্রে প্রতিকূলতা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও জো বাইডেনের একাধিক সিদ্ধান্ত বাতিল হয়ে যেতে পারে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ হতে পারে, যদি রিপাবলিকানরা দুইটি কক্ষে সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করতে পারেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ কঠিন হয়ে যাবে। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভেটো ব্যবহার করে রিপাবলিকানদের রক্ষণশীল আইনগুলোকে বাস্তবায়িত করতে বাধা দিতে পারেন। এক কথায় উভয় কক্ষে রিপাবলিকানরা জিতলে আমেরিকার প্রশাসনিক একাধিক কাজ স্থগিত হয়ে যাবে।
জি-২০তে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারত, জেনে নিন কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে দেশ