চট্টগ্রামে বন্যহাতির আক্রমণে তিন গ্রামবাসীর মৃত্যু
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় পাহাড় থেকে লোকালয়ে চলে আসা বন্য হাতির আক্রমণে তিনজন মানুষ নিহত হয়েছেন।
তবে বনবিভাগ বলছে, হাতির যাওয়া-আসার পথ মুক্ত রাখলে এ ধরণের দুর্ঘটনা হয়তো এড়ানো সম্ভব হতো।
বোয়ালখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ নেয়ামতউল্লাহ জানিয়েছেন, রোববার সকালে উপজেলার কধুরখিল, সৈয়দনগর এবং জ্যৈষ্ঠপুরা নামক পাশাপাশি তিনটি গ্রামে হাতির পৃথক আক্রমণের শিকার হয়ে তিনজন মারা গেছেন।
পুলিশ কী বলছে?
বোয়ালখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিঃ নেয়ামতউল্লাহ জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে জ্যৈষ্ঠপুরা পাহাড় থেকে মোট আটটি হাতি লোকালয়ে চলে আসে।
স্থানীয় মানুষেরা হাতিগুলোকে একদিনের বেশি সময় ধরে পাহাড়ের পাদদেশে এক জঙ্গলে ঘিরে রাখে।
এরপর রোববার সকালের দিকে হাতিগুলো দুই ভাগ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
- বন্য হাতির চলাচলের পথে বাধা রোহিঙ্গা ক্যাম্প
- বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে হাতি করিডোর হবে
- বুনো হাতিটির পেছনে ভারত-বাংলাদেশের বনকর্মীরা
- চামড়ার জন্যে এশিয়ান হাতি নিধন বাড়ছে
"একদল হাতি সৈয়দনগরের চান্দারহাটে এবং জ্যৈষ্ঠপুরায় হামলা চালায়, এবং সেখানে দুই জন মানুষ নিহত হন। এছাড়া সেখানকার ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদল হামলা চালায় কধুরখিলে।"
বিষয়টি নিয়ে ঐ তিনটি গ্রামেই আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মিঃ নেয়ামতউল্লাহ জানিয়েছেন, এ সপ্তাহেই সাতকানিয়া, লোহাগড়া এবং বাশখালীসহ চট্টগ্রামের আরো কয়েকটি উপজেলায় হাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা ঘটেছে।
বন বিভাগ কী বলছে?
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বখতিয়ার নূর সিদ্দিকী বলেছেন, খাবার সংকটের কারণে প্রায়শই পাহাড় থেকে হাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা ঘটে।
কিন্তু তাদের ফিরে যাবার পথ খোলা রাখলে সাধারণত হাতি মানুষের ওপর আক্রমণ চালায় না।
"মূলত ধান পাকার সময় হলে পাহাড় থেকে দল বেধে হাতি লোকালয়ে নেমে আসে, এবং যে পথে হাতি নেমে আসে, সে পথেই ফিরে যায়। যে কারণে হাতির ফেরার পথ যদি বন্ধ না রাখা হয় তাহলে সাধারণত হাতি হামলা চালায় না।"
"এবং হাতি সবসময় একটি নির্দিষ্ট রুটে বা পথেই আসে। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দারা হয়তো ঐ পথটি অবরুদ্ধ করে রাখে, বা ভয় পেয়ে তারা ধাওয়া দেয় বা হামলা চালায়। যে কারণে হাতি তখন হিংস্র আচরণ করে।"
তিনি জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে মূলত দুইটি রুট ধরে হাতি লোকালয়ে নেমে আসে।
একটি হচ্ছে রাঙ্গুনিয়া-চন্দনাইশ-লোহাগড়া-সাতকানিয়া-চুনটি রুট, আরেকটি হচ্ছে চকরিয়া-পেকুয়া-বাশখালী-আনোয়ারা এই রুট ধরে।
বন বিভাগের কর্মকর্তা মিঃ সিদ্দিকী জানিয়েছেন, হাতির ফিরে যাওয়ার অন্তত একটি পথও যদি মুক্ত রাখা যেত তাহলে এ ধরণের দুর্ঘটনা হয়তো এড়ানো সম্ভব হতো।
তবে পাহাড়ে খাবার সংকট হবার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে আগের তুলনায় লোকালয়ে হাতি নেমে আসার ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন বন কর্মকর্তা।
কয়েক মাস আগে বোয়ালখালীতে বন্য হাতির আক্রমণে এক ব্যক্তির নিহত হবার ঘটনা ঘটেছিল।
আরো পড়ুন:
গোলাপী বল টেস্টে 'ভরাডুবি' বাংলাদেশের
ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত কি স্রেফ উর্ধ্বতনদের রক্ষার হাতিয়ার
গ্রামীণফোনকে ২০০০ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ