ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে তালিবানের আফগানিস্তানে প্রাণ গিয়েছে ১৩ হাজার শিশুর!
ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে তালিবানের আফগানিস্তানে প্রাণ গিয়েছে ১৩ হাজার শিশুর!
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সারা বিশ্ব। প্রতিদিন যেখানে মৃত্যু ও ধ্বংসের সংখ্যা বাড়ছে৷ অনেকের স্মৃতি থেকেই অস্পষ্ট হতে শুরু করেছে তালিবানের আফগানিস্তান দখলের খবরগুলো! কিন্তু তালিবান অধ্যুষিত আফগানিস্তানে জানুয়ারি থেকে অপুষ্টি এবং ক্ষুধাজনিত রোগে প্রায় ১৩ হাজার নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত খবর দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯৫ শতাংশের জন্য পর্যাপ্ত খাবার নেই এবং ৩.৫ মিলিয়ন শিশুর পুষ্টি সহায়তা প্রয়োজন।
রাষ্ট্রসংঘ আফগানিস্তানের পরিস্থিতিকে, 'অসম অনুপাতের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অপুষ্টি সংকট',বলে অভিহিত করেছে। চলতি বছরের শুরু থেকে, আফগানিস্তানে প্রায় ১৩ হাজার নবজাতক অপুষ্টি এবং ক্ষুধাজনিত রোগে মারা গিয়েছে। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৭০ টিরও বেশি শিশু মারা গিয়েছে৷ দেশে একটি কার্যকরী কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রয়োজন, এই মুহূর্তে শুধু মানবিক সাহায্য যথেষ্ট নয়! হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বির্গিট শোয়ার্জ একটি টুইটে পুরো বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কিত হয়ে টুইট করেছেন৷ মানবিক সাহায্য ছাড়াও, খাদ্য অর্থ ওষুধ নিয়ে অনেক দেশই আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে৷ এই পর্যায়ে, আফগানিস্তানেরও জরুরিভাবে সংকট মোকাবেলার জন্য একটি কার্যকরী ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা প্রয়োজন, কারণ আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর তালিবানী বিধিনিষেধ এখনও অর্থনৈতিক বড় লেনদেনকে অসম্ভব করে রেখেছে।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, আফগানিস্তানে বিভিন্ন দেশের পাঠানো সাহায্য তহবিলগুলি ঠিক কোন খাতে ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিশ্চিত না করে সংকট কমানো এবং আফগানিস্তানের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের সাহায্য করা অসম্ভব। রাষ্ট্রসংঘের ডেপুটি স্পেশাল রিপ্রেজেন্টেটিভ রমিজ আলাকবারভ গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, আফগানিস্তানে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা জুলাই মাসে ১৪ মিলিয়ন থেকে মার্চ মাসে ২৩ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে, যা পরিবারগুলিকে খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠতে বাধ্য করেছে!
রামিজ জানিয়েছেন, কলকারখানা, শিল্প বন্ধ করে দেওয়ার ফলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে উপলব্ধ খাবারের গুণমান, পরিমাণ এবং বৈচিত্র্য হ্রাস হয়েছে। এই চরম খাদ্যসংকট নারী, পুরুষ এবং শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলেছে। রাষ্ট্রসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, যিনি জাতিসংঘের সহায়তা মিশনের উপ-প্রধান, ইউএনএএমএ-এর মতে, আফগানদের ৯৫ শতাংশ মানুষ অবাকভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না, এই সংখ্যাটি প্রায় ১০০ শতাংশে বেড়েছে মহিলা প্রধান পরিবারগুলিতে৷ এটি এত বেশি যে এটি প্রায় অকল্পনীয়। কিন্তু এই অবস্থায় বর্তমানে আফগানিস্তানের কঠোর বাস্তবতা।