নতুন করে সংগঠন সাজাবে আরএসএস, শতবর্ষের আগে টার্গেট ১ লক্ষ শাখা তৈরি
Array
আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ) সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ২০২৫ সালে সংঘের শতবর্ষ উদযাপনের আগে, ২০২৪ সালের মধ্যে সারা দেশে শাখার সংখ্যা ১ লাখে নিয়ে যাওয়া হবে। তিন দিনের অখিল ভারতীয় প্রাণ প্রচারক সভায় এমনটাই আলোচনা হয়েছে। ৭, ৮ , ৯ জুলাই পর্যন্ত ঝুনঝুনুতে অনুষ্ঠিত হয় আরএসএস-এর সভা। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সূত্র জানিয়েছে, "সঙ্ঘের লক্ষ্য যে এর কাজগুলি সমাজের সকল স্তরের কাছে পৌঁছানো যায়।"। এই সভার তথ্য দিয়ে আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-এর জাতীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুনীল আম্বেকর বলেন, "২০২৫ সালে আরএসএস তার ১০০ বছর পূর্তি পালন করবে। সংঘের শতবর্ষ উদযাপনের জন্য একটি ব্যাপক সম্প্রসারণ পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে সারা দেশে এক লক্ষ শাখা তৈরি করা হবে যাতে সংঘের কাজ সমাজের সমস্ত স্তরের তৃণমূলে পৌঁছে যায়।"
তিনি বলেন, সামাজিক জাগরণসহ সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করাই এ ধরনের প্রয়াসের লক্ষ্য। তিনি বলেন, সংঘের কাজ আবার গতি পাচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যে শাখার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তা আবার শুরু করা হয়েছে। বর্তমানে শাখার সংখ্যা ৫৬,৮২৪। সেটাই বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
আরএসএস হল ভারতের একটি ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী, আধাসামরিক ও বেসরকারী স্বেচ্ছা-সেবক সংগঠন। আরএসএস সংঘ পরিবার নামে হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর একটি অংশ। ১৯২৫ সালে নাগপুর-বাসী ডাক্তার কে. বি. হেডগেওয়ার একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রূপে আরএসএস প্রতিষ্ঠা করেন। উদ্দেশ্য ছিল ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা ও মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরোধিতা।
ব্রিটিশ আমলে এই সংগঠন নিষিদ্ধ ছিল। স্বাধীন ভারতে ১৯৪৮ সালে নাথুরাম গডসে নামে এক প্রাক্তন আরএসএস-সদস্য মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করলে ভারত সরকার এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে দেয়। জরুরি অবস্থার সময় (১৯৭৫-৭৮) এবং ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরও এই সংগঠন নিষিদ্ধ হয়।
আরএসএস স্বেচ্ছাসেবকেরা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে ভারতের একটি অগ্রণী হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠনে পরিণত হয়। ১৯৯০-এর দশকের মধ্যে এই সংগঠন অসংখ্য স্কুল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও মতাদর্শ প্রচারের উদ্দেশ্যে ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে। আরএসএস স্বেচ্ছাসেবকরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজও করে থাকে।আরএসএস এক লক্ষেরও বেশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামোন্নয়ন, আদিবাসী উন্নয়ন, গ্রামীণ স্বনির্ভরতা, কৃষি কর্মসূচি পরিচালনা করে এবং কুষ্ঠ ও দুঃস্থ ছাত্রদের দেখাশোনা করে।