
উত্তরাখণ্ডে কেন ব্যর্থ হরিশ রাওয়াতের কংগ্রেস? লজ্জাজনক হারের পেছনে রয়েছে এই কারণগুলি
বৃহস্পতিবার বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচ রাজ্যের মধ্যে চার রাজ্যেই শেষ হাসি হেসেছে বিজেপি। উত্তরাখণ্ডেও বিজেপি তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে সফল হয়েছে, ৭০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪৭টি আসন বিজেপির দখলে। এ রাজ্যে কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে ১৮টি আসন। রাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবার একটি শাসক শক্তি টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরল। একটা সময় কংগ্রেসের রাজ চলত উত্তরাখণ্ডে। কিন্তু এবারও উত্তরাখন্ডের নির্বাচনে পরাজিত হলেন কংগ্রেসের হরিশ রাওয়াত। কিন্তু কেন হরিশ রাওয়াত ও তাঁর দলের এই শোচনীয় পরিণতি? এই মুহূর্তে তাঁরা এই রাজ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল থেকে অনেকটা দূরেই রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেসের পরাজয়ের পেছনে থাকা বড় ও প্রধান কারণগুলি জেনে নিন।

কংগ্রেসের ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি
নির্বাচনের প্রচারের সময় কংগ্রেস তাদের ইস্তেহারে এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্য ৫০০ টাকার নীচে কমিয়ে আনবে, চাকরি, পাঁচ লক্ষ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা, ভালো স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং সরকারি চাকরিতে ৪০ শতাংশ সংরক্ষণ মহিলাদের জন্য এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও মনে করা হচ্ছে উত্তরাখণ্ডের জনগণ জাতীয় সুরক্ষা, সেনাদের কল্যাণ ও ধর্মীয় পর্যটন সংক্রান্ত বিষয়গুলির ওপরই বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন।

দেশের জাতীয় চিত্র
দেশের সবচেয়ে পুরনো দল কংগ্রেস দলের মধ্যে অর্ন্তকলহ নিয়ন্ত্রণ করা ও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি সহ সঠিক পথে কংগ্রেস এগোলেও দেশের জাতীয় চিত্র রাজ্যে বিজেপির কাছে কংগ্রেসকে পরাজয় করতে সহায়তা করেছে।

বিজপির তারকা প্রচার
বিজেপি উত্তরাখণ্ডে ক্ষমতা কায়েম রাখতে প্রচারের তালিকায় তারকা নেতা-মন্ত্রীদের রেখে ছিলেন। উত্তরাখন্ডের নির্বাচনের প্রচারে এবার বিশেষ জোর দিয়েছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। তিনি কমপক্ষে এ রাজ্যে তিনবার প্রচারে এসেছিলেন। এছাড়াও ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দলের প্রেসিডেন্ট জেপি নাড্ডা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও এ রাজ্যে একাধিক জনসভা করেছেন। সেই তুলনায় রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর প্রচার সেভাবে দাগ কাটতে পারেনি উত্তরাখণ্ডে।

তুষ্টির রাজনীতি
বিজেপি প্রাক্তন হরিশ রাওয়াতের সরকারের দিকে তুষ্টির রাজনীতি করার আঙুল তোলে। গত বছর নির্বাচনী জনসভায় এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন যে কংগ্রেস তার আমলে নমাজের জন্য হাইওয়ে বন্ধ রাখা ও রাজ্যে মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অর্থাৎ বিজেপির মোদ্দা কথা ছিল মুসলিম ভোট পেতে সংখ্যালঘুদের মন জয় করতে চাইছে কংগ্রেস। আর হয়ত এই বিষয়টি হিন্দু ধর্মক্ষেত্র উত্তরাখণ্ডের নাগরিকরা ভালোভাবে নেয়নি আর তাই কংগ্রেসের হার এই পবিত্র ভূমিতে।

ভারতীয় সেনা ও চারধাম নিয়ে বিজেপির চিন্তা–ভাবনা
বিজেপির ভাবমূর্তি সেনাপন্থী দল এবং ধর্মীয় পর্যটনকে উন্নীত করতে পারে এই রাজ্যে, গেরুয়া শিবিরকে তার পক্ষে কাজ করতে দেখা গিয়েছে। এই রাজ্য দেখেছে ভারতীয় সেনার উচ্চ অংশগ্রহণ এবং ধর্মীয় পর্যটনকে আরও উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়া। রাজনৈতির পর্যবেক্ষকদের মতে, উত্তরাখন্ডে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা, চারধাম নিয়ে পরিকল্পনার কথা বিজেপিকে এবারের নির্বাচনে এগিয়ে রেখেছিল অনেকটাই। আর হয়ত এটাই প্রধান কারণ কংগ্রেসের পরাজয়ের ক্ষেত্রেও।
২০২৪-এ ভারত-জয়ের আসল যুদ্ধ, 'সাহেব' তা ভালোই জানেন! আগাম চ্য়ালেঞ্জ পিকে’র