২০২২-প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মধ্য এশিয়ার ৫ দেশের প্রধানরা : সূত্র
রাজপথে অতিথিরা
আর কিছুদিন পরেই শুরু হতে চলেছে নতুন বছর। আর জানুয়ারি মাসে অন্যান্য অনুষ্ঠানের সঙ্গেই ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনে মেতে ওঠে গোটা দেশ। প্রত্যেক বছর দিল্লির রাজপথে সেনা প্যারেড দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জমায়েত হন নাগরিকরা। থাকেন অনেক বিদেশি পর্যটকরাও। দেশের সর্ব স্তরের শীর্ষ নেতৃত্ব ছাড়াও বিশেষ অতিথি রূপে উপস্থিত থাকেন বিভিন্ন দেশের এক বা একাধিক রাষ্ট্র প্রধানরা। আর এবার অর্থাৎ ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কারা আমন্ত্রণ পেতে চলেছেন, তা নিয়ে প্রকাশ্যে এল তথ্য।
প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি
একটি সর্বভারতীয় বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এবার ২৬ জানুয়ারি দিল্লির রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াচে মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশ, যথাক্রমে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধানরা উপস্থিত থাকতে পারেন। সূত্রের খবর, রবিবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং সিএ-৫ দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভারত-মধ্য এশিয়া সংলাপের তৃতীয় বৈঠকের সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। এরই মধ্যে নয়াদিল্লি কূটনৈতিক পর্যায়ে এই দেশগুলির কাছে আমন্ত্রণের প্রস্তাব রাখতে শুরু করেছে।
কারা উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে?
রবিবার ভারত-মধ্য এশিয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কাজাখস্তানের বিদেশমন্ত্রী মুখতার তিলেউবের্দি, কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের বিদেশমন্ত্রী রুসলান কাজাকবায়েভ, তাজিকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী সিরোজিদ্দীন মুরিদ্দীন, তুর্কমেনিস্তানের বিদেশমন্ত্রী রশিদ মেরেদভ এবং উজবেকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আবদুল আজিজ কামিলভ। কাজাখস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুখতার তিলেউবের্দিও ভারত এবং মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর উদযাপনের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতি কাসিম-জোমার্ট টোকায়েভের ভারত সফরের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
আফগানিস্তান প্রসঙ্গ
এই বৈঠকে মূল বিষয়বস্তু হিসেবে উঠে আসে আফগানিস্তান প্রসঙ্গ। আফগানিস্তানের পরিস্থিতির কারণে এই মুহূর্তে মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অবস্থান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারতের মূল উদ্বেগগুলিও রবিবার বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, 'আফগানিস্তানের জনগণকে সাহায্য করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।'
ফোরামে সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কোনো দেশের নাম না করে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "মন্ত্রীরা সন্ত্রাসবাদের সব ধরনের এবং প্রকাশের নিন্দা করেছেন এবং পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে নিরাপদ আশ্রয় প্রদান, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, অস্ত্র ও মাদক পাচার, একটি উগ্র মতাদর্শের প্রচারের জন্য সন্ত্রাসবাদকে হাতিয়ার করে নিরীহ মানুষদের সুরক্ষাকে ব্যবহার করা, এবং সাইবার স্পেসের অপব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়ানো এবং সহিংসতা উস্কে দেওয়া, মানবতা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নীতির বিরুদ্ধে যায়।"
বৈঠকে প্রস্তাবিত প্রসঙ্গ
সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে এবং সেই সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয় এই বৈঠকে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অপরাধী, সংগঠক, এবং পৃষ্ঠপোষকদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে এবং 'প্রত্যর্পণ বা বিচার' নীতি অনুসারে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে, বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের উপর জাতিসংঘের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। ইউএনএসসির রেজুলেশন, গ্লোবাল কাউন্টার-টেরোরিজম স্ট্র্যাটেজি এবং এফএটিএফ মান সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।
তবে আফগানিস্থানের পরিস্থিতি ও সন্ত্রাসবাদ ছাড়াও মধ্য এশিয়ার সব দেশের মধ্যে ভবিষ্যত সহযোগিতার ক্ষেত্র, বাণিজ্য এবং সংযোগ থেকে শুরু করে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা, উদ্ভাবন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, মানবিক দিক এবং মানবিক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।