রাহুল গান্ধী করছেনটা কী? যদি নাই থাকেন, তাহলে পুরোটাই ছেড়ে দিন
রাহুল গান্ধীর ব্যাপারস্যাপার বোঝা দায়। একদিকে উনি আর কংগ্রেসের অধ্যক্ষের ভাঁড় বহন করতে রাজি নন।
রাহুল গান্ধীর ব্যাপারস্যাপার বোঝা দায়। একদিকে উনি আর কংগ্রেসের অধ্যক্ষের ভাঁড় বহন করতে রাজি নন। দু'টি লোকসভা নির্বাচন সহ ছোট-বড় একাধিক ভোটে হেরে ৪৯ বছর বয়সী এই নেতা যে বিপর্যস্ত সেটা বুঝতে অসুবিধে হয় না। এমনকি, তাঁর জায়গায় নতুন কে আসবে বা আসতে পারে, তা নিয়েও রাহুলের কোনও মাথাব্যথা নেই। "আমি এর মধ্যে নেই, নাকও গলাব না," সটান বলে দিয়েছেন তিনি।
ওই টুইটটির দরকার কী ছিল?
কিন্তু অন্যদিকে, বিশ্ব যোগ দিবসে সেনাবাহিনী এবং তাদের কুকুরদের ব্যঙ্গ করে টুইট করে লিখছেন "নিউ ইন্ডিয়া" যা নিয়ে চতুর্দিকে সমালোচনার রোল উঠেছে। এই টুইটটির কি খুব প্রয়োজন ছিল কংগ্রেস অধ্যক্ষের? তিনি কি বোঝাতে চাইছেন যে তার লাখো চেষ্টার পরেও ভারতের মানুষ তাঁদের 'ভুল' বুঝতে ব্যর্থ? অতএব, হাল ছেড়ে তিনি অক্রিয়তার দিকে পা বাড়াচ্ছেন? কিন্তু যদি পা বাড়িয়েই থাকেন, তাহলে আবার টুইট করে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখছেন কেন? বোঝা দায়!
যদি থাকেন, পুরোটা থাকুন, নয়তো পুরোটা ছাড়ুন
রাহুল গান্ধীর এই অবস্থানটি বেশ গোলমেলে। যদি তিনি সত্যিই দলের মাথায় থাকতে না চান; এমনকি দলের কোনও কাজকর্মের মধ্যেই থাকতে না চান, তাহলে শুধু শুধু ওয়ানাডের সাংসদ হয়ে থেকেই বা তিনি কী করবেন? আর যদি সংসদের সদস্যপদ রাখতে চান, তাহলে দলের মধ্যে চূড়ান্ত অক্রিয়ই বা থাকবেন কী করে? আর যদি নতুন অধ্যক্ষ খুঁজে পাওয়ার পরেও কংগ্রেসে দেখা যায় যে গান্ধী পরিবারের লোকজনই আশেপাশে ঘুরেঘুর করছে, তাহলে আর কী সংস্কার হল তা?
কংগ্রেসের এই সময়ে চাই বিকল্প চিন্তা, মনমোহনকে কাজে লাগাক তারা
কংগ্রেসে এই চরম দুর্দশার দিনে তাদের প্রয়োজন সবার আগে নিজেদের মতাদর্শকে লক্ষ্য করে এগিয়ে যাওয়া এবং মানুষের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ করা। যদিও এ কথা ঠিক যে বিজেপির যেমন হিন্দুত্ববাদ মতাদর্শ, কংগ্রেসের সেরকম কিছুই নেই, কারণ ইতিহাসগতভাবে কংগ্রেস একটি খোলা মঞ্চ এবং সকল মতের সমাহার। কিন্তু আজ আর ওই 'উদারবাদী' ভাবমূর্তি দিয়ে কাজ হাসিল করা যাবে না। কংগ্রেসকে আজ ঠিক করতে হবে একটি সঠিক দিক যেদিকে এগিয়ে তারা নিজেদের স্বতন্ত্রতা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। এ ব্যাপারে তারা তাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর অর্থনীতি-বিষয়ক পান্ডিত্যকে কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনা করতে পারে। শাসকদল বিজেপির আর্থিক নীতির বিকল্প নিয়ে তারা মানুষের মধ্যে পৌঁছনোর কথা ভেবে দেখতে পারে। এ বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাহুল যেই 'ন্যায়' প্রকল্পের কথা বলেছিলেন, তা আদতে খায় না মাথায় দেয়, তাই বুঝে উঠতে পারেনি মানুষ। তাই এবারে প্রয়োজন সঠিক দিগনির্দেশ।
কিন্তু সেসব করতে গেলে আগের মাথার উপরে স্থিতিশীলতা আনতে হবে। রাহুল গান্ধী আপাতত যা ছেলেমানুষিতে মেতেছেন, তাতে কংগ্রেসের দুর্দশা দীর্ঘায়িত হওয়া ছাড়া আর কিছু হবে বলে মনে হয় না।
[আরও পড়ুন: বিজেপির সংখ্যালঘু কর্মীকে পিটিয়ে খুন! অভিযুক্ত তৃণমূল]
[আরও পড়ুন: ফের মমতার হুঁশিয়ারি! কাটমানি বিরোধী আন্দোলন মনে করাচ্ছে বাম জমানাকে]