কী এই নেহরু-লিয়াকত চুক্তি?
সোমবার লোকসভায় পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। তবে বিলটি নিয়ে আলোচনা চলাকালীন সারা দিনব্যপী বিরোধীরা অভিযোগ তুলে যায় যে এই বিল ভারতের ধর্ম নিরপেক্ষতার মনোভাব পরিপন্থি।
সোমবার লোকসভায় পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। তবে বিলটি নিয়ে আলোচনা চলাকালীন সারা দিনব্যপী বিরোধীরা অভিযোগ তুলে যায় যে এই বিল ভারতের ধর্ম নিরপেক্ষতার মনোভাব পরিপন্থি। বিরোধীদের এই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত কংগ্রেসকে পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, '১৯৫০ সালে নেহরু-লিয়াকত চুক্তি ব্যর্থ হয়েছে, তাই আজ প্রতিবেশী দেশে থাকা সংখ্যাগঘুদের শরণ দেওয়া ভারতের নৈতিক ও মানবিক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। '
কী এই নেহরু-লিয়াকত চুক্তি?
দেশভাগের পর পাকিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মাঝে সমস্যা দেখা দেয় এবং ভারত-পাকিস্তান দ্বিতীয় যুদ্ধের মুখোমুখি হয়। লিয়াকত আলি তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সাথে লিয়াকত-নেহেরু চুক্তি করেন। ভারত ও পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্য ১৯৫০ সালের ৮ এপ্রিল ভারতের সাথে সম্পাদিত চুক্তিটি সাক্ষরিত হয়েছিল দিল্লিতে।
দেশ ভাগের প্রভাব পড়ে পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দুদের উপর
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি হিন্দুদের উপর এই দেশ ভাগের সব থেকে বেশি প্রভাব পড়ে। পশ্চিমবঙ্গে থাকা মুসলিমদের উপরও হয় প্রচুর হামলা। এই পরিস্থিতিতে নিজ নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়া ও সংখ্যালঘুদের নিরাপদে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার বিষয়ে সুরক্ষা দেবে ভারত পাকিস্তান সরকার। এর ফলে দুই দেশেই গঠিত হয় সংখ্যালঘু কমিশন। এই লিয়াকত চুক্তি না মেনে নিতে পারাতেই নেহরুর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখপাধ্যায়।
এই চুক্তি কোনও দিনই বাস্তবায়িত হয়নি পাকিস্তানে
তবে সত্যিকারে এই চুক্তি কোনও দিনই বাস্তবায়িত হয়নি পাকিস্তানে। পূর্ব পাকিস্তানে ক্রমাগত হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলতে থাকে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পাওয়ার পরেও সেই অত্যাচার জারি থাকে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য
বিলটির পক্ষে যুক্তি দিয়ে সোমবার সংসদে অমিত শাহ প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘুদের উপর হওয়া অত্যাচারের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, 'আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সংবিধানের অনুচ্ছেদ পড়ে শুনিয়ে বলেন এই দেশগুলিতে রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম। বিভাজনের সময় শরণার্থীরা দেশ ছেড়ে । ১৯৫০ সালে নেহরু-লিয়াকত চুক্তি সই হয়। তখন নিজেদের দেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে এত বছরে আমাদের প্রতিবেশী দেশে হিন্দু, শিখ সহ সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত অত্যাচার চলেছে। তা হলে কী আমরা তাদের উপর অত্যাচার হতে দেব? এই আইনে শ্রীলঙ্কার তামিল হিন্দু ও মায়ানমারের হিন্দু রোহিঙ্গাদের বাদ রাখা হয়েছে। কিন্তু এই বিলে দেশের কোনও মুসলিমদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়নি।'
মহিলাদের উপর নির্যাতন বাড়ছে, 'কথা বলবেন না’ আন্না! মোদীকে চিঠিতে নালিশ