
বারাণসী বিমানবন্দরে সংস্কৃত ভাষাতেও শুরু ঘোষণা, বিতর্কের ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়
বারাণসীর লাল বাহাদুর শাস্ত্রী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কোভিড সম্পর্কে সতর্কতামূলক ঘোষণা এবার সংস্কৃত ভাষাতেও শোনা যাবে। ইংরেজি ও হিন্দির পাশাপাশি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সংস্কৃতে করোনা সংক্রান্ত সতর্কতামূলক ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা দ্বিধাভক্ত হয়ে পড়েছেন। সোশ্যল মিডিয়ায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখতে পাওয়া গিয়েছে।

বারাণসী বিমানবন্দরের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওতে বিমানবন্দরে সংস্কৃতে একটি ঘোষণা যাচ্ছে। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তরফে জানানো হয়েছে, 'এখন বারাণসী বিমানবন্দরে হিন্দি ও ইংরেজির সঙ্গে সংস্কৃতেও কোভিড বিধি ঘোষণা করা হচ্ছে।' বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংস্কৃতে এই ঘোষণার পরেই যাত্রীদের বুঝতে পারবেন তাঁরা কাশীধামে প্রবেশ করেছেন। যার সঙ্গে সংস্কৃতের গভীর যোগ রয়েছে। সংস্কৃতে ঘোষণা শোনার পরে যাত্রীদের মধ্যে একটা অন্যধরনের অনুভূতি হবে বলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ টুইটারে দাবি করেছে। জানা গিয়েছে, এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার উদ্যোগে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় বিমানবন্দরে সংস্কৃতে ঘোষণার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে।
তবে এই ভিডিও ও বেণারস বিমানবন্দরের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নেটিজেনদের একাংশ সংস্কৃতকে একটি 'মৃত' ভাষা বলে উল্লেখ করেছেন। সংস্কৃত ভাষা বিমানবন্দরের যাত্রীরা বুঝবে না বলেও ট্যুইটারে মন্তব্য করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ বেণারস বিমানবন্দরের এই অভিনব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। সঙ্গীতজ্ঞ ও লেখক টিএম কৃষ্ণ এই উদ্যোগকে 'বোকামি' বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি মনে করছেন, কাশীর সঙ্গে সংস্কৃতের যোগ বোঝাতে যদি বেণারস বিমানবন্দরে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে অনেক বিমানবন্দরেই নতুন ভাষায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আসুন আমরা পালি ও প্রাকৃত ভাষাকে এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত করি। সারনাথে প্রথম গৌতম বুদ্ধ ধর্মোপদেশ দিয়েছিলেন। সেখানেই অশোক বিখ্যাত স্তম্ভ তৈরি করেছিলেন। আমাদের ইতিহাসে এই দুটি ভাষার গুরুত্ব অপরিসীম।' এরপরেই তিনি বলেন, 'জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ঘোষণায় সংস্কৃতের ব্যবহার নিছকই বোকামি।'
রাম পারিদা নামের এক সাংবাদিক টুইটারে বেণারস বিমানবন্দরের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি লেখেন, 'করোনা সংক্রান্ত ঘোষণায় সংস্কৃত ব্যবহার করা হচ্ছে। আদৌ কেউ সেই ঘোষণা বুঝতে পারবেন?' অন্যদিকে, রবি সিং নামের এক নেটিজেন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, 'ভোজপুরী ভাষার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ হোক।' 'বিমানবন্দরে ভোজপুরীতে ঘোষণা শুরু করা হোক' বলেও তিনি দাবি তোলেন। খুশবু মেহতা নামের এক নেটিজেন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, 'সংস্কৃতের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য খুব ভালো প্রচেষ্টা। সংস্কৃত খুব সুন্দর একটা ভাষা। কিন্তু অনেক রাজ্যের পড়ুয়ারা আঞ্চলিক ভাষার কারণে সংস্কৃতত শিখতে পারছে না।'
জন্মছকে দুর্বল স্থানে থাকা শনিদেবকে শক্তিশালী বানাবেন কীকরে জেনে নিন