মালা পরিয়ে বিতর্কে জড়ালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিরোধীদের অভিযোগ এটাই বিজেপির আসল রূপ
রামগর গণপ্রহারে মৃত্যুর ঘটনায় সাজাপ্রাপ্তরা জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তাদের মালা পরিয়ে বরণ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা।
দেশে ক্রমে বাড়ছে গনহিংসার ঘটনা। তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে সমাজ বিজ্ঞানীদের। এরমধ্যেই গোরক্ষার নামে গণপিটুনিতে হত্যার দায়ে অভিযুক্তদের মালা পড়িয়ে বরণ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা। অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গোরক্ষার নামে হত্যাকারীদের সমালোচনা করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই এনিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলগুলি বলছে এটাই বিজেপি-আরএসএস-এর কৌশল। উপর মহলে সাধু সেজে তলে তলে তারা সাম্প্রদায়িক বিষকে প্রশ্রয় দিয়ে যায়।
২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক গোমাংস সংরক্ষণ ও গোমাংস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে গণপ্রহারে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭-র ২৯ শে জুলাই এরকমই এক ঘটনায় মরতে হয়েছিল আলিমুদ্দিন আনসারিকে। প্রকাশ্য় দিবালোকে তাঁকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল।
পরে জানা গিয়েছিল আলিমুদ্দিন একজন পশু ব্যবসায়ী ছিলেন। ব্যবসার কাজেই এক জায়গা গরু নিয়ে যাচ্ছিলেন অন্যত্র। পথে হাজারিবাগের কাছে তাঁকে আটকায় ওই জনতা। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। এ বছর ২১ মার্চ সেই মামলার শুনানি শেষ হয়। মোট ১১ জনকে যাবদ্দীবন কারাডণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি নেতা তথা দলের ওবিসি মোর্চার প্রেসিডেন্ট অমরদীপ যাদবও।
হাজারিবাগের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা অবশ্য শুরুর থেকেই দোষীদের আড়াল করতে সচেষ্ট ছিলেন। সাজা ঘোষণার পরও তিনি অপরাধীদের পক্ষেই ছিলেন। পুলিশি তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। দাবি জানান সিবিআই তদন্তের। সেই তদন্তের প্রেক্ষিতেই গত ২৯ জুন তারিখে সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৮ জনকে জামিন দেওয়া হয়।
জামিনে মুক্ত হতেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশে জয়ন্ত সিনহার বাড়ি যান ৮ অপরাধী। সেখানে তাদের বীরের সম্মান দেওয়া হয়। মন্ত্রী মহাশয় নিজেই তাদের গলায় মালা পরিয়ে দেন। মুখে তুলে দেন লাড্ডু। এরপরই রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে জয়ন্ত সিনহার সমালোচনা শুরু হয়েছে। অবশ্য এই ঘটনায় ব্যক্তি জয়ন্তই শুধু নয়, বিরোধীরা নিশানা করেছে বিজেপি দলকেই।
এর আগে সবরমতি আশ্রম থেকে এক ভাষণে গোরক্ষার নামে হত্যাকারীদের সমর্থন করেন না বলে বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিরোধীরা জয়ন্তর ঘটনার পর বলছেন, সবটাই এভাবেই সাজানো হয়েছে। উপর মহলের বিজেপি নেতারা যতই মুকে ভাল ভাল কথা বলুন, নিচু তলায় ভেদাভেদের রাজনীতিকেই উস্কে দেয় তারা। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুক্যমন্ত্রী তথা জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেন এই ঘটনায় বিস্ময়ে হতবাক হলে জানিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস প্রধান অজয়কুমারের বক্তব্য বিজেপির কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশিত।