ভারতে গত ১৫ বছরে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে ৪১৫ মিলিয়ন, রিপোর্ট রাষ্ট্রসংঘের
ভারতে গত ১৫ বছরে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে ৪১৫ মিলিয়ন, রিপোর্ট রাষ্ট্রসংঘের
১৭ অক্টোবর দারিদ্র দূরীকরণে আন্তর্জাতিক দিবস। এই দিনেই রাষ্ট্রসংঘের তরফে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ভারতে বসবাসকারী দরিদ্র মানুষের পরিসংখ্যান নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০০৫-০৬ সাল থেকে ২০১৯-২১ এর মধ্যে ভারতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪১৫ মিলিয়ন কমেছে। রাষ্ট্রসংঘের তরফে আশা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র দূরীকরণে ভারত বিশ্বের কাছে উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে।
কী রয়েছে রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে
রাষ্ট্রসংঘের ডেভালপমেন্ট পোগ্রাম ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সোমবার একটি প্রতিবেদন করা হয়। সেখানে ভারতের দারিদ্র সূচকের বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০০৫-০৬ সাল থেকে ২০১৯-২১ সালের মধ্যে ভারতে দরিদ্র নাগরিকের সংখ্যা ৪১৫ মিলিয়ন কমেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে ২০৩০ সালের জানুয়ারির মধ্যে ভারতের দরিদ্র মহিলা, পুরুষ ও শিশুর পরিসংখ্যান অর্ধেক হয়ে যাবে। এই পরিসংখ্যান ভারতের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ঠ ইতিবাচক ভূমিকা গ্রহণ করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রাষ্ট্রসংঘ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৫ বছরের মধ্যে ভারতে ৪১৫ মিলিয়ন নাগরিক দারিদ্র থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
ভারতে সব থেকে বেশি দরিদ্র মানুষের বাস
গত ১৫ বছরে ৪১৫ মিলিয়ন মানুষ দারিদ্রের জ্বালা থেকে মুক্তি পেলেও জনসংখ্যার হিসেব অন্য তথ্য দিচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘের তরফে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে জনসংখ্যার তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বলা যেতে পারে, ভারতে সব থেকে বেশি দরিদ্র মানুষ বাস করেন। ভারতের দরিদ্র নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ২২৮.৯ মিলিয়ন। তারপরেই রয়েছে নাইজেরিয়া। নাইজেরিয়ায় দরিদ্র নাগরিকের সংখ্যা ৯৬.৭ মিলিয়ন। দরিদ্র শিশুদের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেয়েছে। ভারতে দরিদ্র শিশুর সংখ্যা ৯৭ মিলিয়ন। ০-১৭ বছরের মধ্যে ভারতে দরিদ্র শিশুর সংখ্যা বিশ্বের ২১ শতাংশ। বিশ্বে সব থেকে বেশি দরিদ্র শিশু ভারতেই রয়েছে বলে রাষ্ট্রসংঘের পরিংসখ্যান জানাচ্ছে।
ভারতের দারিদ্রের কারণ
ভারতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সব থেকে বেশি। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর পর এই সংখ্যাটা আরও বেড়ে যায়। করোনা মহামারীর জেরে বহু মানুষ চাকরি হারান, বহু মানুষের বেতন কমে যায়। এই সময় নতুন করে বহু মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়েন। এরপরেও ভারতে রয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। ক্রমবর্ধমান জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির জেরে দেশে দারিদ্রের সংখ্যা অনেকটা বেশি।
বিশ্বে দারিদ্রের হার
সারা বিশ্বে দারিদ্রের একটি পরিসংখ্যান রাষ্ট্রসংঘ প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, ১১১টি দেশের ১.২ বিলিয়ন মানুষ (১৯ শতাংশ)দারিদ্র সীমার নীচে বাস করছেন। ৫৯৩ মিলিয়ন মানুষ ১৮ বছরের থেকে ছোট। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দারিদ্রের হার কিছুটা কম। ৩.৯ শতাংশ মানুষ দরিদ্র। দারিদ্রকে মূলত চারটি সূচকে ভাগ করা হয়েছে, পুষ্টি, রান্নার জ্বালানি, স্যানিটেশন ও আবাসন। ৪৫.৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ এই চারটি মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। বেশিরভাগটাই দক্ষিণ এশিয়ায়। তাঁদের মধ্যে ৩৪.৪ মিলিয়ন মানুষ ভারতে, ২.১ মিলিয়ন মানুষ বাংলাদেশে ও ১.৯ মিলিয়ন মানুষ বাংলাদেশে বাস করেন।
করোনা মহামারী গরিবকে আরও গরিব করেছে, ধনীরা হয়েছে আরও বিত্তশালী, বলছে বিশ্বব্যাঙ্ক