অভিষেকের তৃণমূল-বিস্তারের পরিকল্পনা বিশ বাঁও জলে, গোয়ার পর ব্যর্থ ত্রিপুরাতেও
অভিষেকের তৃণমূল-বিস্তারের পরিকল্পনা বিশ বাঁও জলে, গোয়ার পর ব্যর্থ ত্রিপুরাতেও
গোয়ার পর ত্রিপুরাতেও ব্যর্থ তৃণমূল। তৃণমূল লম্ফঝম্ফই সার, বাংলাভাষী ত্রিপুরাতেও মানুষের মন জয় করতে পারলেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। কংগ্রেস ভেঙে সংগঠন গড়েও উপনির্বাচনে ভোটারদের মনে দাগ কাটতে পারেনি তারা। ২০১৮-র মতোই ২-৩ শতাংশে সীমাবদ্ধ রইল তারা। গোয়াতেও খাতা খুলতে পারেনি তারা, ত্রিপুরাতেও পারল না। তাহলে তৃণমূলের পরিকল্পনার কী হবে।
ভিনরাজ্যে মমতা-ক্যারিশ্মা কাজ করছে না আদৌ
তৃণমূল ২০২৪-এর আগে ভিনরাজ্যে গাঁটি গাড়তে চেয়েছিল। সেই লক্ষ্য নিয়েই তারা গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে পা রেখেছিল। উত্তর-পূর্ব ভারতের আরও কয়েকটি রা্জ্য যেমন অসম, মণিপুর ইত্যাদি রাজ্যকেও টার্গেট করেছিল তৃণমূল। কিন্তু কোনও ফায়দা লুটতে পারেনি আজ পর্যন্ত। এমনকী উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানাতেও তৃণমূল সংগঠন গড়তে চেয়েছিল, কিন্তু ভিনরাজ্যে মমতা-ক্যারিশ্মা কাজ করছে না আদৌ।
অভিষেকের পরিকল্পনা মাঠে মারা গেল, কী করবে তৃণমূল
বাংলার বিজেপিকে পর্যুদস্ত করে ত্রিপুরায় পা দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যুব সভাপতি থেকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হয়ে তৃণমূলকে রাজ্যে রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেইমতোই ত্রিপুরায় পা রাখার পর গোয়াকে পাখির চোখ করেছিলেন অভিষেকরা। কিন্তু নিট ফল শূন্য। বিজেপিকে হারাতে গিয়ে তারা প্রকারান্তরে বিজেপির সুবিধা করে দিয়েছিলেন। ফলে কংগ্রেসকে হারিয়ে গোয়ায় সহজ জয় হাসিল করে নিয়েছিল বিজেপি।
বিজেপির ভোটে কোনও আঁচড়ই কাটতে পারেনি তৃণমূল
ত্রিপুরাতেও পা দিয়ে কংগ্রেসকে ভেঙে তৃণমূল বিস্তার লাভের চেষ্টা করেছে। বিজেপির গায়ে সে অর্থে কোনও আঁচড়ই কাটতে পারেনি তারা। কতিপয় কংগ্রেস নেতাকে ভাঙিয়ে এনে মঞ্চ ভরিয়েছে তৃণমূল, কিন্তু এখনও পর্যন্ত ত্রিপুরাবাসীর মন গলাতে পারেনি। ত্রিপুরাবাসীকে নিজেদের দিকে আনতে পারেনি। তাহলে মাত্র ২-৩ শতাংশ ভোট পেত না তারা, অন্তত ভদ্রস্থ একটা জায়গায় থাকতেন তৃণমূল প্রার্থীরা। কারও জামানত বাজেয়াপ্ত হত না।ট৪
কংগ্রেসের ভোট আবার ফিরে গিয়েছে কংগ্রেসের ঝুলিতে
তৃণমূল আগরতলা পুরসভা নির্বাচনে প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেলেও, এবার আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কেন সেই ভোট উভে গেল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তবে কি কংগ্রেসের যে ভোট তৃণমূলে গিয়েছিল পুরসভা নির্বাচনে উপনির্বাচনে, তা আবার ফিরে গিয়েছে কংগ্রেসের ঝুলিতে। একা সুদীপ রায় বর্মন ঘুরিয়ে দিয়েছেন খেলা।
তৃণমূল কংগ্রেসকে ভাঙতে গিয়ে নিজেরাই বিপাকে
তৃণমূল মনে করেছিল, তারা ত্রিপুরায় পা দিলে তাদের দল ছেড়ে যারা বিজেপিতে চলে গিয়েছিল, তার ফের একে একে তৃণমূলে ভিড়বে। কিন্তু দেখা যায় সুরমার বিধায়ক আশিস দাস ছাড়া তেমন কেউ আসেনি তৃণমূলে। সেই আশিস দাস আবার ভোটের আগেই তৃণমূল ছেড়ে দেন। আর সুদীপ রায় বর্মন, আশিস সাহারা ফিরে যান কংগ্রেসে।
২০১৮-র বিধানসভায় ভোটপ্রাপ্তিতে সীমাবদ্ধ তৃণমূল
২০১৬-১৭ সালে প্রথমবার যখন ত্রিপুরায় ঘাঁটি গাড়তে গিয়েছিল তৃণমূল, তখন সুদীপ রায় বর্মনদের ভাঙিয়ে এনেছিলেন তৃণমূলের মুকুল রায়। পুরো কংগ্রেস পরিষধয়ী টিমকে ভেঙে নিয়ে রাতাপাতি ত্রিপুরায় বিরোধী দলের রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের সেই টিমই বিজেপিতে শিফট করে যায়। বিজেপির ব্যানারে ত্রিপুরায় আসে পরিবর্তন। লাল ত্রিপুরা হয়ে যায় গেরুয়া। আর ২০১৮ সালের বিধানসভায় তৃণমূল পায় মাত্র ২-৩ শতাংশ ভোট।
ভিনরাজ্যে তৃণমূলের বিস্তারের পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ছে
২০২২-এ এসেও কংগ্রেসকে ভেঙে তৃণমূল এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ত্রিপুরাবাসী জানিয়ে দিয়েছে তাদের রায়। তৃণমূল সেই ২-৩ শতাংশেই পড়ে রয়েছে। একইভাবে এবার মেঘালয়ে ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ককে ভাঙিয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলে পরিণত হয়েছে তৃণমূল। কিন্তু মেঘালয়ের ক্ষেত্রেও বুমেরাং হবে তৃণমূলের পরিকল্পনা। ভিনরাজ্যে তৃণমূলের বিস্তারের পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়বে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
তৃণমূল 'ভো-কাট্টা’ উপনির্বাচনে, বিজেপি বিরোধিতায় কংগ্রেসেই ভরসা ত্রিপুরাবাসীর