'এই মেয়েটিকে আমার চাই'- বলেই ঝাঁপিয়ে পড়ল তিন ইভটিজার, মুম্বইয়ে এই কাহিনি এখন ভাইরাল
মুম্বইয়ের এই ঘটনা এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এতদিন মুম্বইয়ের রাস্তা মহিলাদের পক্ষে নিরাপদ বলেই জানতেন এই তরুণী। কিন্তু, যেভাবে অটো থেকে নামিয়ে তাঁদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে তাতে তাঁরা এখন আতঙ্কে।
মুম্বইয়ের বুকে গভীররাতে এ যেন ঠগ দস্যুদের হানা! উৎসবের মরসুমে এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তা কল্পনাতেও আনতে পারেননি মুম্বইয়ে বাসিন্দা বছর একুশের এক তরুণী ও তাঁর বছর চব্বিশের দাদা। রাত তখন দু'টো। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে সমানে বোনের সম্মান বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দাদা। চিৎকার-চেঁচামেচি-সবই হচ্ছে। কিন্তু, একজন পথচারী ছাড়া সাহায্যের জন্য কেউই এগিয়ে আসেনি। তরুণীকে ততক্ষণে সপাটে চড় মেরে দিয়েছে তিন দুষ্কৃতী। দাদা প্রতিবাদ করতে যাওয়া তাঁকেও মারধর। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি ওই তিন দুষ্কৃতি। অভিযোগ ঘটনাস্থলে থাকা অন্য এক মহিলারও শ্লীলতাহানি করে তারা।
গায়ে কাঁটা তুলে দেওয়া মুম্বইয়ের এই ঘটনা ভাইরাল হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রশ্ন উঠছে, রাতের অন্ধকারে ভাই-বোনের সাহায্যের আকুতি শুনেও কীভাবে মুখ ফিরিয়ে থাকল সাধারণ মানুষের দল। এ কোন সমাজ! এটাই কি মানবিকতা। গভীররাতে শুধু ভাই-বোনকেই নয় আরও এক মহিলারও শ্লীলতাহানি করার দুঃসাহস দেখাল একদল দুষ্কৃতী!
জানা গিয়েছে, এই ঘটনা শনিবার রাতে। দিওয়ালি উপলক্ষ্যে ডিনার সেরে বোনকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন বছর চব্বিশের এক তরুণ। অটো করেই বাড়ির পথ ধরেছিলেন ভাই-বোন। রাত তখন দু'টো। জুহু-ভারসোভা লিংক রোডে অটো চলতে শুরু করতেই মোটরবাইকে হাজির হয়ে যায় তিন জন। অটোতে বসে থাকা মহিলাদের উদ্দেশে সমানে চলতে থাকে অশ্লীল মন্তব্য। অভিযোগ, কিছুটা যাওয়ার পরই অটোর পথ আটকে দাঁড়িয়ে পড়ে মোটরবাইকটি। এই নিয়ে অটোচালকের সঙ্গে বচসা বাঁধে। অভিযোগ অটোচালককে মারধর করে তিন জন। এরপর, ভাই-বোন এবং আরও একজন মহিলাকে জোর করে অটোতে নামিয়ে নেয়। অভিযোগ, এই সময়ই তিন হামলাকারীর মধ্যে একজন আঙুল দেখিয়ে বলতে থাকে, 'এই মেয়েটিকে আমার চাই'।
অভিযোগ, ভাই-বোন এই অশ্লীল মন্তব্যের প্রতিবাদ করলে তাঁদের মারধর করা হয়। বছর একুশের বোনকে সপাটে চড় মারা হয়। আক্রান্ত তরুণীর দাদাকেও মারধর করা হয়। এরপরই অটোতে থাকা আরও এক মহিলার শ্লীলতাহানি করা হয়। এক পথচারী সাহায্যের জন্য এগিয়ে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
মারধর করার পর শাসানি দিতে দিতে তিন অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। যদিও, পরে আক্রান্ত দুই তরুণীর বয়ানে ভারসোভা পুলিশ তিন হামলাকারীকে চিহ্নিত করে। এই তিন জনকেই গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে ধৃত তিন জন হল বছর একুশের আদিল খান। বছর চব্বিশের যোগেশ শেভালে এবং বছর পঁচিশের রাহুল রেভালে। তিন জনই আন্ধেরী পশ্চিমের এক বস্তির বাসিন্দা। এর আগে কোনও অপরাধমূলক কাজে ধৃতরা জড়িত ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সময় ধৃতরা মদ্যপান করেছিল কি না তাও মেডিক্য়াল করে দেখে নিতে চাইছে পুলিশ।