শুরু হল পবিত্র কানওয়ার যাত্রা, জারি দিল্লি পুলিশের একগুচ্ছ নির্দেশিকা
শ্রাবণ মাসের পবিত্র সময়ে কানওয়ার যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। আর এই পবিত্র যাত্রা ঘিরে দিল্লি পুলিশ একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ জেলা পুলিশের কাছে এই নির্দেশিকা ও পরামর্শ পাঠিয়েছে। কানওয়ার যাত্রার রাস্তায় কোনও কামার যেন না থাকে কারণ তারা আমিষ খেয়ে হাড়গুলি রাস্তায় ফেলতে পারে, মিশ্র ধার্মিক এলাকা থেকে যাওয়ার সময় কানওয়ারীদের সফরের ওপর কাছ থেকে নজরদারি করতে হবে, এই যাত্রার সময় কানওয়ারীরা ত্রিশূল, তলোয়ার, লাঠি, রড, হকি স্টিক, বেসবল ব্যাট ও লোহার চেন বহন করেন, তাই এগুলো নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যাতে কোনও উস্কানিমূলক পোস্ট না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে-এ ধরনের নির্দেশই দেওয়া হয়েছে দিল্লি পুলিশের নির্দেশিকায়।
শুরু হয়ে গিয়েছে কানওয়ার যাত্রা
বৃহস্পতিবার থেকে কানওয়ার যাত্রা শুরু হয়ে গিয়েছে এবং মনে করা হচ্ছে পুর্ণ্যার্থীরা ২০ জুলাইয়ের মধ্যেই দিল্লি পৌঁছে যাবেন। অধিকাংশ পুণ্যার্থীরা ২৩ থেকে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে দিল্লিতে এসে পৌঁছাবেন। প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ এর দাপটের কারণে গত দু'বছর কানওয়ার যাত্রা বন্ধ ছিল। চলতি বছরে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে কোনওরকম ফাঁক রাখতে চাইছে না সরকার।
একগুচ্ছ নির্দেশিকা
সূত্রের খবর, ডিসিপি (বিশেষ ব্রাঞ্চ) নিশান্ত গুপ্তা এই তথ্যগুলি কিছুদিন আগেই জেলার ডিসিপিদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। সূত্রের খবর ডিসিপি (বিশেষ ব্রাঞ্চ)-এর শেয়ার করা তথ্যে বলা হয়েছে, 'কামার সহ অন্যান্যদের ওই রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে হবে অথবা অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে কারণ তারা আমিষ খেয়ে হাড় ফেলতে পারে ওই রাস্তায়। নির্দেশিকায় এও বলা হয়েছে যে ধর্মীয় শোভাযাত্র মিশ্র জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে যখন যাবে সেটা স্পর্শকাতর বিষয় হতে পারে এবং এমনকি ছোটখাটো সমস্যাও পেশাদার পদ্ধতিতে পরিচালনা করা উচিত। তথ্য অনুযায়ী সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ সহ সব ফোন কল ও অভিযোগ দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে হবে।'
কানওয়ার শিবিরে বিশেষ নজরদারি
বিশেষ ব্রাঞ্চ এও জানিয়েছে যে সফট টার্গেট হিসাবে দেখা হয় কানওয়ার শিবিরগুলিকে তাই জেলা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে কোনও ধরনের নাশকতামূলক ও অন্যান্য অসাধু উপাদান নস্যাৎ করার জন্য কড়া নজরদারি রাখতে। এমনকী ছোটখাটো ঘটনাও বড় ধরনের আইন-শৃঙ্খলা ব্যাহত হওয়ার মতো বিষয় হতে পারে। সূত্রের খবর, 'পুণ্যার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই যুবক এবং একটু উস্কানি পেলেই তাঁরা সকলে জমায়েত হয়ে যাবে। ছোটখাটো ঘটনাও আইন-শৃঙ্খলা ব্যাহত করতে পারে।' প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে একটি গাড়ি তাঁদের পাশ কাটিয়ে যাওয়ায় কানওয়ারীরা সেই গাড়ি ভাঙচুর করে।
উস্কানিমূলক পোস্ট
সরকার ও পুলিশ উভয়ের যৌথ উদ্যোগে প্রত্যেক বছর কানওয়ার যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারের পক্ষ থেকে পুণ্যার্থীদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য শিবির তৈরি করা হয়। তাঁদের গন্তব্যে যাওয়ার রাস্তায় পুলিশ বিশেষ ট্র্যাফিকের বন্দোবস্ত করে। তবে ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়েও উদ্বিগ্ন রয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সমাজ-বিরোধী উপাদান মাঝে মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরার ফলে তা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে উস্কানি দিতে পারে এবং আইন ভাঙার জন্য চাপও দিতে পারে। হিন্দু ভক্তদের জন্য এই কানওয়ার যাত্রা খুব বড় একটি কর্মসূচি এবং এই সময় এ ধরনের পোস্ট বড়সড় আইন-শৃঙ্খলার পতন ঘটাতে পারে। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর খুব কড়াভাবে নজরদারি চালাতে হবে।
ডিজে সাউন্ড সিস্টেমের ওপর নজরদারি
শুধু তাই নয় ডিজে সাউন্ড সিস্টেমগুলিও সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের মতে সরকারি শিবিরগুলি যদি মিশ্র সম্প্রদায় জনবসতি এলাকায় হয় তবে কানওয়ার শিবিরে বাজতে থাকা ডিজে সিস্টেমগুলি বড়সড় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। পুর্ণ্যার্থিরা টাটা-৪০৭, ক্যান্টার, টেম্পো ও বাইক ব্যবহার করছেন এবং গাড়িতেই ডিজে সিস্টেম লাগিয়ে জোরে গান ধর্মীয় গান চালাচ্ছেন।
ধারালো ও বিপদজ্জনক উপাদান
পুলিশ এও জানিয়েছে যে কানওয়াররা ত্রিশূল, তলোয়ার, লাঠি, রড, হকি স্টিক, বেসবল ব্যাট ও লোহার চেনের মতো ধারালো ও বিপদজ্জনক জিনিস বহন করেন তাঁদের সঙ্গে। এছাড়াও থাকে গ্যাস সিলিন্ডার ও যান। তাই পুরো পরিস্থিতির ওপরই কড়া নজরদারি করতে হবে পুলিশকে।
বিচ্ছেদের পর স্ত্রীয়ের মঙ্গলসূত্র খুলে ফেলা স্বামীর প্রতি মানসিক নিষ্ঠুরতা, পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের