হিংসা থামলেও ক্ষোভ কমেনি দিল্লিতে, পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ স্থানীয়দের
হিংসা থামলেও ক্ষোভ কমেনি দিল্লিতে, পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ স্থানীয়দের
দিল্লিতে শনিবার সন্ধ্যায় হনুমান জয়ন্তী শোভা যাত্রায় পাথর ছোঁড়া থেকে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরু হয়৷ ঘটনার একদিন পরও উত্তর-পশ্চিম দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় উত্তেজনা রয়েছল৷ এলাকার প্রতি মোড়ে পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স মোতায়েন রয়েছে৷ উত্তেজনা রয়েছে এরকম এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ির মধ্যেই থাকছেন। কিন্তু স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ স্পষ্ট রয়েছে৷ দু'পক্ষই হিংসার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করছে।
পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ!
স্থানীয়দের একটি অংশ পুলিশ ও প্রশাসনকেও পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করেছে। জাহাঙ্গীরপুরী এলাকার সি,এইচ,জি ব্লকের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। হিংসার পরদিন রবিবার এলাকায় শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য, পুলিশ 'আমান' (শান্তি) কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিল৷ কিন্তু, আলোচনা চলাকালীন দুপক্ষের লোকের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয় এবং পুলিশ বৈঠক বাতিল করতে বাধ্য হয়।
কী বলছেন শান্তি কমিটির সদস্যরা!
শান্তি কমিটির সদস্য ফরিদ শাহ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শনিবার রাত থেকে আমরা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছি। যা ঘটেছে তা হতাশাজনক, তবে আমরা স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। এবং শান্তি ফিরিয়ে আনতে পুলিশকে পূর্ণ সমর্থন দেব। এর আগে এখানে কখনও এরকম কিছু ঘটেনি৷ জানা গিয়েছে সি ব্লকের মসজিদের সামনে এখনও পাথর ও গেরুয়া পতাকা পড়ে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দিল্লি পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করঋেন৷
কী অভিযোগ মুসলিম গৃহবধূর?
স্থানীয় এক মুসলিম গৃহবধু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যখন সংঘর্ষ শুরু হয়, তখন মাত্র তিনজন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। হিন্দুরা যখন ৪০০-৫০০ লোক নিয়ে শোভা যাত্রার পরিকল্পনা করছিল, তখন কেন দিল্লি পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে? মিছিল থেকে মুসলমানদের উত্তেজিত করা হয়েছিল। প্রতিশোধ হিসাবে, আমরাও একই কাজ করেছি।'
নতুন করে ঝামেলা শুরু হওয়া আটকায় পুলিশ!
অন্যদিকে এই কান্ডে গ্রেপ্তার হওয়া নাবালকের বাবা পুলিশের পদক্ষেপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 'কেন শুধু আমাদের সম্প্রদায়কে টার্গেট করা হচ্ছে?' এটা একটা বিরাট ষড়যন্ত্র। আমার ছেলে কখনোই এ ধরনের কোনো কাজে জড়িত ছিল না বলেও তিনি দাবি করেছেন৷ কিছু মুসলিম নারী তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে থানার সামনে ‘আল্লাহ হু আকবর' স্লোগান তুললে তার পাল্টা সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরপুরী থানার বাইরে ডানপন্থী কর্মীরা ‘জয় শ্রী রাম' স্লোগান দেয়৷ পাশাপাশি সি ব্লকের মসজিদের বাইরেও নতুন করে ঝামেলা শুরু হওয়ার সুযোগ ছিল, এই এলাকায় ১০-১৫ জন লোক 'জয় শ্রী রাম' স্লোগান দিয়ে একটি মিছিল পরিচালনা করার চেষ্টা করে। যদিও পুলিশ তাদের সরিয়ে দিয়েছে।
কী হয়েছিল শান্তি কমিটির বৈঠকে?
প্রসঙ্গত, দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় শান্তি ফিরিয়ি আনতে শান্তি কমিটির বৈঠকের আয়োজন করা হয়, যেখানে উত্তর-পশ্চিম জেলার পুলিশ আধিকারিকরা, পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) ঊষা রঙ্গনানি ও জাহাঙ্গীরপুরি এবং আদর্শনগরের নগরের শান্তি কমিটির সদস্য এবং বিজেপি কাউন্সিলর গরিমা গুপ্তা উপস্থিত ছিলেন৷ সংঘর্ষের ভুলে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার আলোচনার জন্য এই বৈঠকের উদ্যোগ নিয়েছিল প্রশাসন৷ তবে বৈঠকে সমাধান মেলেনি৷ দু'পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করা শুরু করে এবং তার কারণেই বৈঠক থামাতে নয়৷ একজন বিজেপি কাউন্সিলর হনুমান জয়ন্তীতে হিংসার জন্য দিল্লির অবৈধ অভিবাসীদের দায়ী করেন৷ এরপরই দু'পক্ষের তর্কের কারণে মিটিং শেষ করতে বাধ্য হয় পুলিশ।
মধ্যপ্রদেশে সংঘর্ষের ঘটনায় দু'জনের বিরুদ্ধে 'ভুল' মামলার দাবি