সমকামিতা কী অসাংবিধানিক, হঠাতই ভোল বদল কেন্দ্রীয় সরকারের
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা অসাংবিধানিক কিনা এই বিষয়ে কেন্দ্র তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে।
সমকামিতা প্রশ্নে ভোল বদল কেন্দ্রীয় সরকারের। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে ভারতীয় দণ্ডবিধির সমকামিতা সংক্রান্ত আইন ৩৭৭ ধারার সংবিধানিক বৈধতা আছে কি নেই তা নিয়ে সরকারের কোনও বক্তব্য নেই বলে হলফনামা দিয়ে জানান সরকারি আইনজীবী তুষাড় মেটা। এর আগে অবশ্য দিল্লি হাইকোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে ৩৭৭ ধারাকে বহাল রাখার পক্ষেই সওয়াল করেছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭তম ধারা অনুযায়ী সমতামিতাকে অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। এক্ষেত্রে দুপক্ষের সম্মতি ছিল কি ছিল না সেসব বিচার্য নয়। যেকোনও রকম সমকামি সম্পর্কের ক্ষেত্রেই এই ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু এই আইনের বিরোধিতা করে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছিল ভারতের এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়। যার প্রেক্ষিতে দিল্লি হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে ৩৭৭ ধারাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছিল। একে তাদের বড় জয় হিসেবেই দেখেছিল ভারতের সমকামি সম্প্রদায়।
এরপরই ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে এই রায়ের বিরোধিতা করে মামলা করে। সেসময় সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি হাইকোর্টের ওই রায়কে খারিজ করে দিয়েছিল। পুনর্বহাল হয় ৩৭৭ ধারা। স্বাভাবিকভাবেই শুধু এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায় নয়, ভারতের অনেকেই সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই আবার নিজেদের দেওয়া রায়ই খতিয়ে দেখতেই ভারতের মুখ্য বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি শুরু হয়।
বুধবার সেই শুনানির দ্বিতীয় দিনে এতদিন ৩৭৭ ধারার পক্ষে সওয়াল করা কেন্দ্রীয় সরকার জানায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত শীর্ষ আদালতকেই নিতে হবে। সরকারের এ বিষয়ে পক্ষে বা বিপক্ষে কোনও মত নেই। তবে সেইসঙ্গে যাই রায় দেওয়া হোত, তা যেন ৩৭৭ ধারা নিয়ে সিদ্ধান্তের বাইরে না যায় সে বিষয়েও আবেদন জানানো হয়েছে। স্পষ্ট বলা হয়েছে, এবিষয়ে যাই রায় দিন, তা যেন ভবিষ্যতের অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে প্রভাব না ফেলে সেদিকে খেয়াল রাখতে। তবে এখনও এই আইন বহাল রাখআর পক্ষেই সওয়াল করেছেন বিজেপির বিতর্কিত সাংসদ সুব্রামনিয়ন স্বামী।