শেষ পর্যন্ত সোমালিতে জঙ্গি হামলার অবসান, ক্রমে মৃত বেড়ে দাঁড়াল ২০
Array
সোমালিতে রবিবার জঙ্গি হামলার অবসান ঘটেছে। এখানে বন্দুকধারীরা রাজধানীতে একটি হোটেলে হামলা চালালে কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় মোগাদিশুর হায়াত হোটেলে হামলাকারী যোদ্ধাদের আটকাতে সোমালি বাহিনীর ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছিল, যা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল।
পুলিশ কমিশনার আবদি হাসান হিজার সাংবাদিকদের জানান, মধ্যরাতে অবরোধ শেষ হয়। "হামলার সময়, নিরাপত্তা বাহিনী হোটেলে আটকে থাকা অনেক বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করেছে, যার মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে," তিনি বলেন।
কিভাবে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে পারেনি পুলিশ। কতজন বন্দুকধারী হোটেলে প্রবেশ করেছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। হোটেলের ম্যানেজার ইসমাইল আবদি দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন যে নিরাপত্তা বাহিনী এখনও এলাকাটি পরিষ্কার করার জন্য কাজ করছে। স্থানীয় সময় সকাল ৯টার পর আর কোনও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। ঘটনাস্থল দেখে করে রবিবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত হোটেলের গেটের বাইরে দর্শকরা জড়ো হন।
আল-কায়েদার সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন ইসলামিক চরমপন্থী গোষ্ঠী আল-শাবাব এই হামলার দায় স্বীকার করেছে, এটি সরকারী কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিদর্শন করা স্থানগুলিতে আক্রমণ করার সর্বশেষ প্রচেষ্টা। সোমালিয়ার নতুন নেতা হাসান শেখ মোহামুদ মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর হোটেলে হামলাটি মোগাদিশুতে প্রথম বড় সন্ত্রাসবাদী ঘটনা।
রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস হামলার নিন্দা করেছেন, একজন মুখপাত্রের বিবৃতি অনুসারে যে বলেছে যে জাতিসংঘ সোমালিয়ার জনগণকে "সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং শান্তির দিকে তাদের অগ্রযাত্রায় সমর্থন করে।"
সোমালিয়ার নিরাপত্তা আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আল শাবাব জঙ্গিরা হামলার সময় গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায়। দুটো বিস্ফোরণ হোটেলের সামনে হয়। একটি হায়াতের প্রধান ফটকের সামনে। তারপরেই জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষীদের যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি হোটেলের একটি ভবনের সামনে হয়। দ্বিতীয় বিস্ফোরণের পরেই জঙ্গিরা হোটেলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। তাঁরা হোটেলের অতিথিদের বন্দি করে রেখেছেন কি না, সোমালিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর তরফে জানানো হয়নি। তবে হোটেলে এখনও বেশ কয়েকজন আটকে রয়েছেন। হোটেলের অভ্যন্তরে জঙ্গিদের সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলির লড়াই চলছে। আল শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়দা গোষ্ঠীর একটি শাখা। গত ১০ বছর ধরে আল শাবারের সঙ্গে সোমালিয়ার সরকারের লড়াই চলছে। চলতি বছরের মে মাসে প্রেসিডন্ট মহম্মদ হাসান শেখ মোহাম্মদ দায়িত্ব নেয়। তারপরেই জঙ্গিগোষ্ঠীটির এই প্রথম হামলা চালায় বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে। আগে একাধিকবার আল শাবাব হোটেবে হামলা করেছে। ২০২০ সালে মোগাদিশুর একটি হোটেলে আল শাবাব হামলা করে। ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছিলেন। সম্প্রতি আমেরিকা সোমালিয়ার আল শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠীর ওপর অভিযান বাড়িয়ে দিয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে আমেরিকার তরফে জানানো হয়েছে, সোমালিয়ার মধ্য ও দক্ষিণ অংশে একটি বিমান হামলার ফলে ১৩ জন আল-শাবাব জঙ্গি নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি আমেরিকা আল শাবাব জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিশানা করে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে।