কাজ হারিয়ে মানসিক অশান্তির জের, ঘুমন্ত অবস্থায় অসুস্থ মায়ের গায়ে আগুন দিল ছেলে
কাজ হারিয়ে মানসিক অশান্তির জের, ঘুমন্ত অবস্থায় অসুস্থ মায়ের গায়ে আগুন দিল ছেলে
"ছেলেটা খুব ভুল করেছে শক্ত পাথর ভেঙে, মানুষ ছিল নরম, কেটে, ছড়িয়ে দিলে পারতো। " কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের এই লাইনটা আজ বাস্তবে সম্ভব করে দেখাল কাজ হারানো পেশায় নির্মাণকর্মী এক শ্রমিক। টাকার অভাবে অসুস্থ মায়ের কাতর আর্তনাদ সহ্য করতে না পেরে ঘুমন্ত অবস্থাতেই জ্যান্ত জ্বালিয়ে দিল মাকে।
শয্যাশায়ী ছিলেন ৬৫ বছরের মা, দেখতে আসেনি বোনেরা
লকডাউনের জেরে গত দু'মাস ধরেই তালাবন্ধ গোটা দেশ। বন্ধ কারখানা, বন্ধ কাজ। পেশায় নির্মাণকর্মী ৪৫ বছরের তিরুমালা লিঙ্গস্বামী ছিলেন একজন পরিযায়ী শ্রমিক। লকডাউনের জেরে কিছুদিন হায়দরাবাদে আটকে থাকার পর অবশেষে কাজ হারিয়ে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে নলগোন্ডিয়ার নরসিংবাতলায় নিজের গ্রামের বাড়িতে ফেরেন তিনি। এরপর দীর্ঘদিনের অসুস্থ শয্যাশায়ী মায়ের যত্ন নেওয়ার জন্য বোনেদের কাছে সাহায্যও চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার অভিযোগ, বোনেরা মা'কে দেখতে পর্যন্ত আসেনি।
কেরোসিন ঢেলে ঘুমন্ত মা'কে জ্বালিয়ে দিল ছেলে
বাথরুমে পড়ে গিয়ে কোমড়ের নীচের অংশের হাড় ভেঙে যাওয়ার পর লিঙ্গস্বামীর ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মা অনেকদিন ধরেই শয্যাশায়ী ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। লিঙ্গস্বামীর তিন বোন মায়ের দেখাশোনা করার জন্য একজন আয়ার খরচ বহন করলেও, লকডাউনে দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ার অভিযোগে সেও কাজ ছেড়ে দেয়। অবশেষে, বুধবার ভোরে মায়ের কাতর আর্তনাদ শুনে কেরোসিন ঢেলে মা'কে জ্যন্ত জ্বালিয়ে দেয় লিঙ্গস্বামী। ঘটনার পর তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
বাড়ি বিক্রি করতেও রাজী ছিলেন লিঙ্গস্বামী
স্থানীয় সূত্রে খবর, "লিঙ্গস্বামী কাজে থাকা কালীন পাশের গ্রামে থাকা লিঙ্গস্বামীর এক বোন মাঝেমধ্যে এসে মা'কে স্নান করিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে দিয়ে যেতেন, কিন্তু লকডাউনের জেরে সেও আসা বন্ধ করে দিয়েছিল"। তার তিন বোনের জবানবন্দী অনুযায়ী তেলেঙ্গানা পুলিশ জানিয়েছে, আর্থিক অনটনের কারণে বেশ কয়েকদিন ধরেই মা'কে বাড়ি বিক্রি করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন লিঙ্গস্বামী।
কার্যত সর্বহারা হয়ে পড়েছিলেন লিঙ্গস্বামী
পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই খোঁজ নেওয়া হয়েছে লিঙ্গস্বামীর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কেও। জানা যাচ্ছে, গত কয়েকদিন আগেই বৈবাহিক সমস্যার জেরে দু'বছরের বাচ্চা রেখে তাকে ছেড়ে গেছে তার স্ত্রীও। সম্বল বলতে ছিল কেবল মা। অবশেষে তাকেও নিজ হাতে হত্যা করেন লিঙ্গস্বামী। বোনেদের অভিযোগ, শেষ কয়েকদিন ভীষণ ভাবে মদের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন লিঙ্গস্বামী।
আম্ফান বিধ্বস্ত বসিরহাটে সাংসদ নুসরত জাহান, প্রশাসনিক বৈঠকে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিকের নির্দেশ