সরকারি ফাইল বলছে ১৯৬৮ সালে বেঁচে ছিলেন নেতাজি !
কলকাতা, ৮ জুলাই : অন্তত ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ায় ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তখনই বিদ্রোহী বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে নিখিল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ওমস্কে তিনি দেখাও করেছিলেন। নেতাজি সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সরকার অধিকৃত ফাইল প্রকাশে বৃহস্পতিবার এমন তথ্যই সামনে এসেছে। ['বিমান দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন নেতাজি', বক্তা তাঁরই অনুবাদক]
লেখত তথা সাংবাদিক নরেন্দ্রনাথ সিন্দকারের একটি হলফনামায় এটি উঠে এসেছে যে সালে নেতাজি বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন তার ২৩ বছর পরে ওমস্কে তিনি নিখিল চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি নিজে ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত মস্কোতে ছিলেন।
মুখার্জি কমিশনের কাছে দেওয়া ফাইলের ভিত্তিতে সিন্দকারের বক্তব্য ছিল, রাশিয়ায় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন নেতাজি। তিনি ভেবেছিলেন, ভারতে ফিরে গেলে তাঁকে যুদ্ধঅপরাধী ভেবে যথাপোযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। [স্বাধীন ভারতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন এঁরা!]
হলফনাম অনুযায়ী, সিন্দকার জানিয়েন, ১৯৬৬ সালে বীর সাভরকরের মৃত্যুর পর মস্কোতে নিখিল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। নিখিল চট্টোপাধ্যায় রাশিয়াতেই জন্মেছেন। ১৯৩৭ সালে সেখানে তাঁর বাবাকে স্তালিন সরকার বন্দি করে। এই সময় কথা বলার দরুণ নিখিলবাবু নেতাজিকে সোভিয়েত রাশিয়াতে পালিয়ে আসতে চাপ দেওয়ার জন্য জওহরলাল নেহেরুকে দোষারোপ করেন। [বিমান দুর্ঘটনায় নয়, ১৯৮৫ সালে স্বাভাবিক মৃত্যু হয় নেতাজির!]
নিখিলবাবু বলেন, নেতাজি পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন, কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তিনি ভারতে থাকলে নেহেরু নিজের সুবিধার্থে তাঁকে যুদ্ধ অপরাধী ঘোষণা করতে পারেন। সোভিয়েত রাশিয়ায় আসার আগে তিনি সেই ভারততত্ববিদের সঙ্গে কথা বলেন, যিনি স্তালিনকে লন্ডতে সোভিয়েত দূতাবাসের মাধ্যমে কৃষ্ণ মেননের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছিলেন। [নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য : সব জানতেন নেহেরু, গান্ধী, প্যাটেল?]
কৃষ্ণ মেনন নেহরুর ঘণিষ্ঠ ছিলেন এবং স্তালিনকে অনুরোধ করেছিলেন এই তথ্য প্রকাশ না করার জন্য। হলফনামায় তা স্পষ্টই জানিয়েছিলেন সিন্দকর।
সিন্দকার এও জানিয়েছেন, নিখিল চট্টোপাধ্যায়ের এই তথ্যে চমকে গিয়েছিলেন তিনি। নেতাজির ভক্ত হিসাবে নিজেকে পরিচয় দেওয়া সিন্দকর জানিয়েছিলেন, নিখিলবাবু তাঁকে কথা দিয়েছিলেন নেতাজির সম্পর্কে আরও তথ্য তিনি জানাবেন অন্যতম বিশ্বস্ত কমরেড চন্দ্রনের মাধ্যমে। যদিও এই হলফনামায় পরবর্তী কোনও আলোচনা, কথপোকথন বা বিদ্রোহ নিয়ে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।