হিজাব পরা মহিলারা ব্যঙ্গের নয় সম্মানের যোগ্য, সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল আবেদনকারীদের
হিজাব পরা মহিলারা ব্যঙ্গ নয়, সম্মানের যোগ্য বলে দাবি করা হয় সুপ্রিম কোর্টে
কর্ণাটক সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছিল। হাইকোর্ট কর্ণাটক সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে বহাল রেখেছিল। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কর্ণাটকের মুসলিম ছাত্রী। তাঁদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়, হিজাব পরা মহিলাদের ব্যঙ্গ করা উচিত নয়। তাঁরাও সম্মানের যোগ্য।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রবীণ আইজীবী ইউসুফ মুচ্চালা বলেন, যে মুসলিম মহিলারা হিজাব পরেন, তাঁদের কখনই ব্যঙ্গ করা উচিত নয়। তাঁদের সম্মান দেওয়া প্রয়োজন। তাঁরা দৃঢ়চেতা মহিলা। সেই কারণেই তাঁরা এত প্রতিকূলতার মধ্যেও হিজাব পরার সাহস পেয়েছেন। তাঁদের ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। পাশাপাশি তিনি বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা এবং সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চকে বিষয়টিকে একটি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানোর আহ্বান জানান।
প্রবীণ আইনজীবী ইউসুফ মুচ্চালা মুসলিম মহিলাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, মাথায় কাপড় দেওয়ার জন্য মুসলিম মেয়েদের কাছ থেকে তাদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়া যেতে পারে না। মুচ্চালা যুক্তি দেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাবে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মুসলিম ছাত্রীদের শিক্ষা, ব্যক্তিগত মর্যাদা, গোপনীয়তার পাশাপাশি ধর্ম পালনের অধিকারের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, সু্প্রিম কোর্টে প্রবীণ আইনজীবী সলমন খুশরিদ বলেন, হিজাব পরা ধর্ম, সংস্কৃতি, বিবেক, মর্যাদার বিষয়। তিনি মন্তব্য করেন, 'আমরা বলব না ইউনিফর্ম অবশ্যই ছাড়তে হবে তবে ইউনিফর্মের সাথে আরও কিছু আছে যার অনুমোদন দেওয়া উচিত।' মুচ্চালা সুপ্রিম কোর্টে বলেন, হিজাব পরা অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন কি না, বিষয়টি বর্তমানে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ছাত্রীদের মাথায় কাপড় দেওয়ার জন্য শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টে প্রবীণ আইনজীবী মুচ্চালা হাইকোর্টের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, কোনও আদালত কখনই কোরানের ব্যাখ্যা করতে পারে না। যদিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা এই প্রসঙ্গে আইনজীবীকে বলেন, আবেদনকারীরা জানিয়েছিলেন হিজাব একি অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন। হাইকোর্টের কাছে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কোরানের ব্যাখ্যার বিকল্প কী ছিল? মুচ্চালাকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেন, আপনি নিজেই পরস্পর বিরোধী কথা বলছেন। আপনি শুনানির সময় বললেন, হিজাব অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন। আপনি এই মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোরও আবেদন করেন। এখন আপনি নিজেই বলছেন, কোরানের ব্যাখ্যা করা যেতে পারে না।