আয়করে ছাড় সামান্যই, ঊর্ধ্বসীমা বেড়ে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা
আসলে এ বারের সাধারণ বাজেট ভারসাম্যমূলক। অতি সাহসী পদক্ষেপ যেমন নেওয়া হয়নি, তেমনই বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে অকাতরে। কিছু নতুন প্রকল্প চালু করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। তাই সরকারের টাকার দরকার। আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়ালে প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহে টান পড়ত। তাই মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী বা সংশ্লিষ্ট আয়ের মানুষদের অল্পেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।
এখন দু'লক্ষ টাকা পর্যন্ত একজন ব্যক্তি আয়করে ছাড় পান। লোয়ার টিয়ার অর্থাৎ দুই লক্ষ টাকার বেশি অথচ পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর দিতে হয় ১০ শতাংশ হারে। মিডল টিয়ার অর্থাৎ পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি অথচ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর দিতে হয় ২০ শতাংশ হারে। আর আপার টিয়ার অর্থাৎ ১০ লক্ষ টাকার বেশি যাদের রোজগার, তাদের আয়কর দিতে হয় ৩০ শতাংশ হারে। মিডল ও আপার টিয়ারের ক্ষেত্রে আবার দেয় আয়করের সঙ্গে তিন শতাংশ হিসাবে যুক্ত হয় সারচার্জ।
মাসে রোজগার ২০,৮৩৩ টাকা বা তার কম হলে আর আয়কর দিতে হবে না
এ বারের বাজেটে অরুণ জেটলি আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে করলেন আড়াই লক্ষ টাকা। অর্থাৎ মাসে যাদের রোজগার ২০,৮৩৩ টাকা বা তার কম, তাদের আর আয়কর দিতে হবে না। প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই ছাড় বাড়িয়ে করা হয়েছে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত। মহিলাদের জন্য আলাদাভাবে কোনও ছাড় ঘোষিত হয়নি। অর্থাৎ প্রবীণা নয়, এমন মহিলাদের আয়কর দিতে হবে পুরুষদের সমান হারে। লক্ষণীয়, আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা এ টুকু বাড়ানো ছাড়া লোয়ার টিয়ার, মিডল টিয়ার বা আপার টিয়ারে বাকি নিয়মকানুন অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন : মোদী সরকারের প্রথম সাধারণ বাজেট নিয়ে রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা কে কী বলছেন!
যে চাকরিজীবীদের আয় বছরে মোটামুটি তিন থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা, তাদের কাছে পূর্ণ স্বস্তিদায়ক নয় কর ছাড়ের এই ঘোষণা। তবে তারা এ বার পিপিএফে আরও বেশি করে টাকা রেখে কিছুটা আয়কর বাঁচাতে পারবেন। কারণ এতদিন পিপিএফে সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যেত। সেই সীমা বাড়িয়ে করা হয়েছে দেড় লক্ষ টাকা। যদি আপনার নামে গৃহঋণ থাকে, তা হলেও সামান্য স্বস্তি পাবেন। কারণ গৃহঋণে দেয় সুদের ক্ষেত্রে রিবেট পাওয়া যেত দেড় লক্ষ টাকা। সেটা বাড়িয়ে করা হয়েছে দু'লক্ষ টাকা।
তবে অরুণ জেটলি এ দিন আশ্বাস দেন, প্রত্যক্ষ কর বিধি (ডিটিসি) চালু করার ব্যাপারে সরকার চেষ্টা করছে। এটা মান্ধাতা আমলের আয়কর আইনের পরিবর্তে চালু হবে। ডিটিসি চালু হলে আয়কর ছাড়ে ঊর্ধ্বসীমা এক লাফে পাঁচ লাখ টাকা হবে।