বেআইনি পথে ৪৩.৬৬ কোটি টাকা মুনাফা লুটেছেন সোনিয়ার জামাই, প্রশ্নে হেনস্থা সাংবাদিককে
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ভদরা তাঁর ব্যবসায় বরাবরই গান্ধী পরিবারের আনুকূল্য পেয়ে এসেছেন, এমনটাই অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী এই ইস্যুতে সুর চড়িয়েছিলেন। হরিয়ানায় যতদিন ভূপিন্দর সিং হুড়ার নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার ছিল, ততদিন জামাই বাবাজির অসুবিধা হয়নি। কিন্তু বিজেপির মনোহরলাল খট্টর ক্ষমতায় আসতেই রবার্ট ভদরার ব্যবসা নিয়ে নজরদারি শুরু হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ক্যাগ রিপোর্ট বিজেপির দাবির প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণ করে।
কী বলা হয়েছে ক্যাগ (কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল) রিপোর্টে?
হরিয়ানার গুরগাঁওয়ের কাছে শিকোহপুরে ৩.৫ একর জমি কিনেছিল রবার্ট ভদরার স্কাইলাইট হসপিটালিটি লিমিটেড। জমি ক্রয়, রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি নিয়ে ১৪.৩ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন তিনি। পরে ডিএলএফ-কে সেই জমি ৫৮ কোটি টাকায় তিনি বেচে দেন। এই লেনদেন বাবদ তিনি মুনাফা করেন ৪৩.৬৬ কোটি টাকা। অথচ ২.১৫ কোটি টাকা রেখে বাকি টাকা রাজ্য সরকারের কোষাগারের জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইন মানেননি তিনি। হরিয়ানা সরকারও এ বিষয়ে কৈফিয়ত চায়নি রবার্ট ভদরার কাছে। আইএএস অফিসার অশোক খেমকা একমাত্র সরব হওয়ায় তাঁকে বদলি করে দেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুড়া।
এদিকে, ক্যাগের রিপোর্টে তাঁর কেলেঙ্কারির প্রাথমিক তথ্য উঠে আসায় বেজায় চাপে পড়েছেন রবার্ট ভদরা। গতকাল রাতে দিল্লির অশোক হোটেলে সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের এক রিপোর্টার এ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি ক্ষেপে যান। ওই রিপোর্টারকে ধাক্কা দেন। তিনি ক্রমাগত হুমকি দেন। তাঁর দেহরক্ষীরা ক্যামেরা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেন। রবার্ট ভদরার দেহরক্ষীরা ওই সাংবাদিককে ঘিরে ধরে বলেন, ক্যামেরার ফুটেজ মুছে ফেলতে হবে। এ নিয়ে অন্যান্য সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানালে তাঁর দেহরক্ষীরা পিছু হটেন।
রবার্ট ভদরার এই ব্যবহার নিয়ে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও কংগ্রেস এর নিন্দা করে একটিও শব্দ খরচ করেনি। বরং সঞ্জয় ঝা, দিগ্বিজয় সিং প্রমুখ কংগ্রেস নেতা নির্লজ্জ সাফাই দিয়েছেন।
বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, "রবার্ট ভদরার এই ব্যবহারে কংগ্রেসকে ক্ষমা চাইতে হবে।" বিজেপি মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্র বলেন, "এটা হতাশার ফল। হতাশ হয়ে এ কাজ করেছেন।" আম আদমি পার্টি, এনসিপি, সিপিআই সবাই এক সুরে রবার্ট ভদরার এই আচরণের নিন্দা করেছে।