বালাকোটে কী ঘটেছিল, উপগ্রহ চিত্র সামনে নিয়ে এল সংবাদসংস্থা রয়টার্স
বালাকোটের উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করল সংবাদসংস্থা রয়টার্স। হাই রেজলিউশন-এর উপগ্রহ চিত্র রয়টার্স পেয়েছে প্ল্য়ানেট ল্যাব ইনকর্পোরেশন বলে একটি সংস্থার কাছ থেকে।
বালাকোটের উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করল সংবাদসংস্থা রয়টার্স। হাই রেজলিউশন-এর উপগ্রহ চিত্র রয়টার্স পেয়েছে প্ল্য়ানেট ল্যাব ইনকর্পোরেশন বলে একটি সংস্থার কাছ থেকে। সান ফ্রান্সিসকো-র এই সংস্থা উপগ্রহ দিয়ে নজরদারি নিয়ে কাজ করা একটি বেসরকারি সংস্থা। তাদের দেওয়া ছবি প্রকাশ করেছে রয়টার্স। এটা ৪ মার্চ তোলা হয়েছে বলেও দাবি করেছে এই সংবাদসংস্থা।
রয়টার্স জানিয়েছে, ছবি খাইবার পাখতুনখোয়ার বালাকোটের জবা গ্রামের। এই গ্রামেরই একটি হিলে পাইনের জঙ্গলের মধ্য়ে জইশ-ই-মহম্মদ-এর মাদ্রাসা। যেখানে সন্ত্রাসের মন্ত্রে সকলকে শিক্ষিত করা হয় এবং জঙ্গি হামলার হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া হয়।
যে উপগ্রহচিত্র সামনে আনা হয়েছে তাতে মাদ্রাসার কোথাও কোনও ধ্বংসের চিহ্ন নেই। এমনকী,মাদ্রাসা বলে যে বাড়়িটিকে দাবি করা হয়েছে তার ছাদের কোথাও কোনও বড় ফুটো ধরা পড়েনি। মোদ্দা কথা এমন কোনও কিছুর চিহ্ন সেই বাড়িটিতে নেই যাতে দাবি করা যেতে পারে এর উপরে বোমা পড়েছে।
ভারত সরকার এবং বায়ুসেনা দাবি করেছে বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদ-এর মূল ঠিকানায় হামলা হয়েছে। এয়ার স্ট্রাইকে পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে জইশ-ই-মহম্মদ-এর জঙ্গি প্রশিক্ষণের মাদ্রাসাটি।
রয়টার্স উপগ্রহের যে ছবিটি প্রকাশ করেছে তার সত্যতা যাচাই করা যায়নি। তবে, বিশ্বখ্যাত বিশ্বস্ত এই সংবাদসংস্থার প্রকাশ করা বালাকোটের উপগ্রহ চিত্র স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তৈরি করেছে। রয়টার্সের দাবি, তারা এই নিয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ও বিদেশ মন্ত্রককে ই-মেল করলেও তার কোনও উত্তর আসেনি।
মিডলবারি ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্য়াশনাল স্টাডিস-এর ইস্ট-এশিয়া ননপ্রলিফারেশন প্রজেক্ট-এর ডিরেক্টর জেফ্রি লিউস, যিনি আবার ১৫ বছর ধরে উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে এসেছেন, তিনি জানিয়েছেন, উপগ্রহ চিত্রে এমনকিছু পাওয়া যায়নি যা থেকে বলা যেতে পারে বাড়িটিতে কোনও বোমা নিক্ষেপ হয়েছে।
সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, যে বায়ুসেনা রয়টার্সের এই উপগ্রহচিত্রকে মিথ্যা বলে দাবি করেছে। ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি, বায়ুসেনা জানিয়েছে, তারা মিরাজ ২০০০ থেকে যে ১০০০ কিলো বোমা ফেলেছিল তা মাদ্রাসার বাইরে কোনও ক্ষতি করে না, বোমাটি সোজা বাড়ির মধ্যে ফুঁটো করে একদম নিচে চলে যায় এবং সেখানে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়। এই বিস্ফোরণে বাড়ির ভিতরে যা থাকবে তার সবই ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু, তা বাড়ির বাইরে থেকে দেখে বোঝা যাবে না। মাদ্রাসার উপরের এমন বোমা যেমন ফেলা হয়েছিল তেমনি মাদ্রাসার পাশে একটি জমির উপরেও তা নিক্ষেপ করা হয়। লেজার চালিত অত্য়াধুনিক প্রযুক্তির এই বোমা মাটির তলায় ঢুকে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এই বিস্ফোরণে যে এক তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল তাতে মাদ্রাসায় থাকা জইশ-ই-মহম্মদ-এর জঙ্গিরা মারা যায়।